Advertisement
২৪ মে ২০২৪
Asansol

আদালতে চুরি প্রায় চারশোটি নথি, উঠল প্রশ্ন

পুলিশ ও আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ১০টায় আদালতের কর্মীরা কাজে যোগ দিয়ে দেখেন, রেকর্ড রুমে টেবিলের উপরে সাজিয়ে রাখা নথিগুলি উধাও।

আসানসোল আদালত চত্বরে। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

আসানসোল আদালত চত্বরে। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:২৭
Share: Save:

এই আদালতে গরু ও কয়লা পাচারের মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলা চলছে। অথচ, আসানসোল জেলা আদালত চত্বরেই দরজা ভেঙে চুরির ঘটনা ঘটল বলে অভিযোগ। পুলিশ ও আদালতের কর্মীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় চারশোটি নথি চুরি হয়েছে। তবে তার মধ্যে গরু ও কয়লা পাচার সংক্রান্ত কোনও নথি নেই বলেই প্রাথমিক ভাবে দাবি করা হয়েছে। সোমবার বিষয়টি জানাজানি হয়। ঘটনাটি ঘটেছে আদালতের প্রথম মুনসেফ কোর্টের রেকর্ড রুমে। এই ঘটনার পরে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন আইনজীবীরা। পাশাপাশি, আদালত চত্বরের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

পুলিশ ও আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ১০টায় আদালতের কর্মীরা কাজে যোগ দিয়ে দেখেন, রেকর্ড রুমে টেবিলের উপরে সাজিয়ে রাখা নথিগুলি উধাও। দেখা যায়, রেকর্ড রুমের দরজার একটি পাল্লার নীচের অংশ ভাঙা। বিষয়টি তাঁরা জেলা জজকে জানান। খবর দেওয়া হয় আসানসোল দক্ষিণ থানায়। ঘটনাস্থলে এসেছিলেন জেলা জজ বিজয়েশ ঘোষাল এবং আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) কুলদীপ সেনাওয়ানে। খবর পেয়ে ভিড় জমান আইনজীবীরাও।

তবে চুরির বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি কুলদীপ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দিনের শেষে গির্জা মোড় এবং নিয়ামতপুর থেকে কিছু নথি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকি নথির খোঁজে তল্লাশি চলছে।

এ দিকে, আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, সাম্প্রতিক সময়ে সিবিআইয়ের দায়ের করা গরু ও কয়লা চুরির মামলার প্রেক্ষিতে এই আদালত চত্বরের গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলা চলছে আসানসোল জেলা আদালতে। আইনজীবী ও আদালতের কর্মীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, চুরি হওয়া নথিগুলির মধ্যে বেশ কিছু মামলা নিষ্পত্তির কাগজ আছে। তেমনই নিষ্পত্তি না হওয়া মামলার কাগজপত্রও রয়েছে।

আইনজীবীদের মতে, মামলার নথি খুবই যত্নের সঙ্গে রাখা উচিত। এই ঘটনায় নিরাপত্তায় কোথাও খামতি ছিল কি না, সে প্রশ্নও তুলেছেন আইনজীবীদের একাংশ। ‘আসানসোল বার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক বাণী মণ্ডল বলেন, “এই ঘটনা বিস্ময়কর। আশা করি, ভবিষ্যতে আরও সতর্কতা নেওয়া হবে।”

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, মুনসেফ কোর্টের দিকে পাহারা দেওয়ার জন্য তিন জন ‘নাইট গার্ড’ রয়েছেন। পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮৮৯-এ রানিগঞ্জে প্রথম মহকুমা বিচার বিভাগীয় আদালতের জন্ম হয়। ১৯০৫-এ তা আসানসোলে স্থানান্তরিত হয়। ১১৭ বছরের ইতিহাসে এর আগে কোনও দিন নথি চুরির ঘটনা ঘটেনি বলেই দাবি। পাশাপাশি, মুনসেফ কোর্টের দিকে ঠিক মতো আলো না থাকায়, সংশ্লিষ্ট এলাকাটি কার্যত অন্ধকার থাকে বলেও অভিযোগ। পাশাপাশি, এ-ও অভিযোগ, মুনসেফ কোর্টের প্রতিটি এজলাসের দরজা-জানলার পাল্লা বহু পুরনো। প্রয়োজনীয় সংস্কার হয় না। রেকর্ড রুমের দরজাটি খারাপ থাকায় দুষ্কৃতীরা সহজেই তা ভাঙতে পেরেছে।

আইনজীবীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, আদালতের তরফে সোমবারের ঘটনার পরেই পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের ডেকে ভাঙা দরজা মেরামত ও এজলাসের খারাপ দরজা-জানলা সংস্কারের নির্দেশে দেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Asansol District Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE