প্রস্তাবিত বার্নপুর এয়ারপোর্ট। নিজস্ব চিত্র।
প্রায় দেড়শোটি বড় গাছ রয়েছে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমিতে। এই গাছগুলির জন্যই থমকে রয়েছে প্রস্তাবিত বার্নপুর বিমানবন্দরের কাজ। পাশাপাশি, তৈরি হয়েছে জটিলতাও। এমনটাই জানিয়েছে প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আজ, শনিবার গ্রামবাসীকে বৈঠকে ডেকেছে প্রশাসন।
ঘটনাচক্রে, প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে প্রস্তাবিত বিমানবন্দর লাগোয়া এই গাছগুলির জন্য সমস্যা চলছে। ইতিপূর্বে জমির মালিকদের সঙ্গে মহকুমা প্রশাসনের একাধিক বৈঠক হয়েছে। কিন্তু আজও কোনও সমাধান সূত্র বেরোয়নি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় প্রায় ২৫৫টি বড় গাছ আছে। নির্বিঘ্নে বিমান ওঠা-নামার জন্য এই গাছগুলি কেটে ফেলা অত্যন্ত জরুরি বলে জানিয়েছে ‘এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া’। এই অবস্থায় প্রশাসনের তরফে গাছগুলি কাটার তোড়জোড় করা হয়। মহকুমাশাসক (আসানসোল) অভিজ্ঞান পাঁজা বলেন, “ইতিমধ্যেই সরকারি জমিতে থাকা গাছগুলি কাটার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ব্যক্তিগত জমিতে থাকা গাছগুলি নিয়ে। এই সমস্যা মেটাতেই শনিবার একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে।” প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, শনিবারের বৈঠকে থাকার কথা আসানসোল উত্তরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটকেরও।
প্রশাসনের তরফে প্রস্তাবিত বিমানবন্দর লাগোয়া গাছগুলি কাটার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ইস্কো কর্তৃপক্ষকে। ইস্কোর জিএম (শহর বিভাগ) ভাস্কর কুমার বলেন, “ইস্কোর জমিতে থাকা গাছগুলি কাটার কাজ চলছে। তবে ব্যক্তিগত জমিতে থাকা অন্তত ১৫০টি গাছে হাত দেওয়া যাচ্ছে না।” কী ভাবে তা কাটা সম্ভব হবে? ভাস্করের দাবি, “বন দফতরের তরফে ব্যক্তিগত জমির গাছ পর্যবেক্ষণ করা হবে। তার পরে দাম নির্ধারণ করা হবে। সেই দাম নিয়ে জমির মালিকেরা সহমত হলে, প্রশাসন গাছ কাটার বিজ্ঞপ্তি জারি করবে। তার পরেই গাছগুলি কাটা হবে।”
তা হলে, সমস্যাটা কোথায়? গাছগুলি যে জমিতে রয়েছে, সেগুলির মালিকদের একাংশের দাবি, তাঁদের জমি অধিগ্রহণ করে জমির দাম মেটাক ইস্কো। অথবা, জমির পরিবর্তে অন্যত্র সম-পরিমাণ জমি দেওয়া হোক। প্রায় সাত বিঘা জমির মালিক সুবলচন্দ্র খাঁ বলেন, “এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে বিমানবন্দর তৈরি হোক, আমরাও এটা চাইছি। কিন্তু বিমানবন্দর লাগোয়া জমিতে কখনই দোতলা বাড়ি করা যাবে না বলে প্রশাসন জানিয়েছে। ফলে, আমাদের জমিগুলি কার্যত অকেজো হয়ে যাবে। তাই জমি অধিগ্রহণ বা জমির পরিবর্তে সম-পরিমাণ জমি চাওয়া হচ্ছে।” যদি তাঁদের দাবি মানা না হয়, তা হলে প্রয়োজনে তাঁরা আইনি পদক্ষেপ করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জমির মালিকদের একাংশ। বিষয়টি নিয়ে মহকুমাশাসক কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy