এই কর্মতীর্থটি নিয়েই প্রশ্ন। নিজস্ব চিত্র
বনকাটি পঞ্চায়েতের বসুধা এলাকার অর্থনীতির প্রধান উৎস কৃষি। মূলত আনাজ চাষের উপরেই নির্ভরশীল অধিকাংশ মানুষ। তাঁদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করার জন্য কয়েক বছর আগে তৈরি করা হয়েছিল একটি স্থায়ী বাজার (কর্মতীর্থ)। কিন্তু সেটি এখনও চালু না হওয়ায়, ফাঁকাই পড়ে আছে। কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রের দাবি, সেটিকে চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও, স্থানীয়দের সাড়া মিলছে না। আপাতত ফাঁকাই পড়ে পুরো জায়গা।
কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮-এর শুরুর দিকে বসুধা গ্রামে একটি বাজার তৈরির পরিকল্পনা করেন তৎকালীন পঞ্চায়েত সমিতি কর্তৃপক্ষ। বসুধা এলাকার অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবী হওয়ায়, তাঁদের উৎপাদিত ফসল যাতে সরাসরি এক জায়গায় বসে বিক্রি করতে পারেন, তার জন্যই এটি তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়। নাম দেওয়া হয় ‘কর্মতীর্থ’। বসুধায় তেমন কোনও আনাজ বাজার না থাকার ফলে অনেক চাষিকেই ফসল নিয়ে বীরভূমের ইলামবাজারে পাইকারি দরে বিক্রি করতে হয়। কাজেই পরিবহণ খরচ যেমন বেড়ে যায়, তেমনি লাভও কমে যায় বলে দাবি। কাজেই কাছে সরাসরি ফসল করতে পারলে, চাষিরা উপকৃত হবেন। সে দিকে লক্ষ্য রেখে এই কর্মতীর্থের পরিকল্পনা নেওয়া।
পঞ্চায়েত সমিতির দাবি, কিন্তু বাজারের পরিকাঠামো তৈরি হয়ে গেলেও, বিক্রেতার অভাবে এখনও তা চালু করা যায়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এলাকার মানুষজনের যা কিছু প্রয়োজন, তা ইলামবাজার থেকেই কিনে আনেন। তা সে আনাজ হোক বা অন্য কোনও সামগ্রী। তা ছাড়া এলাকার বাসিন্দারা যেহেতু নিজেরাই আনাজ চাষ করেন, তাই ক্রেতারও অভাব দেখা দিতে পারে। সেই কারণে কোনও চাষিই এখানে নিজেদের পণ্য বিক্রি করতে উৎসাহ দেখাননি বলে দাবি।
চাষি গোপাল ঘোষ, উৎপল রায়েরা বলেন, “এখানে ক্রেতা বলতে শুধু বসুধা গ্রামের বাসিন্দারাই আসবেন। বাইরে থেকে কোনও ক্রেতা পাওয়া মুশকিল। কাজেই সারাদিন এখানে আনাজ নিয়ে বসে থাকলেও, চাষিরা কতটা লাভ হবে, সে বিষয়েও সন্দেহ রয়েছে।” তাঁরা জানান, শুধু আনাজ বাজারই নয়। এর পাশে পাঁচটি ঘরও তৈরি করা হয়েছিল বেকারদের ব্যবসা করার জন্য। কিন্তু মূল বাজার থেকে বেশকিছুটা দূরে এই জায়গা। ক্রেতাদের এই জায়গায় আসতে অনীহা তৈরি হতে পারে। তাই সেই ঘরগুলিও এখনও তালাবন্ধ অবস্থায় রয়েছে।এখন গ্রামের বাসিন্দারাই সেটির রক্ষণাবেক্ষণ করছেন।
কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা কয়েকটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে দিয়ে এটির চালুর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তেমন সাড়া মেলেনি সেই সব গোষ্ঠীর কাছে থেকে। ফলে, এখনও ফাঁকাই পড়ে রয়েছে। এ বিষয়ে জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি সমীর বিশ্বাস বলেন, “আমরা স্থানীয় পঞ্চায়েতেরসঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। চাষিদের কী করে এই বাজারে আনা যায়, সে বিষয়ে চিন্তাভাবনাকরা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy