Advertisement
১৮ মে ২০২৪

রাজ্যে ক’টা জেলা? উত্তর জানা নেই শিক্ষিকার

প্রাথমিক স্কুলে ঢুকে শিক্ষিকাকে বর্ধমানের জেলাশাসক জিজ্ঞেস করলেন, ‘দেশে কটা রাজ্য?’ কোনও উত্তর নেই। ‘রাজ্যে কটা জেলা?’ এ বারেও কোনও উত্তর নেই। শেষমেশ জেলাশাসকই উত্তরটা দিলেন। দিন কয়েক আগেই দেশের রাজধানীর নাম ঢাকা বলে সোরগোল ফেলে দিয়েছিল বর্ধমানের একটি স্কুলের পড়ুয়ারা।

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৬ ০১:৩১
Share: Save:

প্রাথমিক স্কুলে ঢুকে শিক্ষিকাকে বর্ধমানের জেলাশাসক জিজ্ঞেস করলেন, ‘দেশে কটা রাজ্য?’ কোনও উত্তর নেই। ‘রাজ্যে কটা জেলা?’ এ বারেও কোনও উত্তর নেই। শেষমেশ জেলাশাসকই উত্তরটা দিলেন। দিন কয়েক আগেই দেশের রাজধানীর নাম ঢাকা বলে সোরগোল ফেলে দিয়েছিল বর্ধমানের একটি স্কুলের পড়ুয়ারা। এ বার শিক্ষিকার এমন হাল দেখা গেল। শুক্রবার আসানসোলের কুমারপুর জিএস প্রাথমিক স্কুলের ঘটনা।

বর্ধমানের ওই স্কুলের মতো শুক্রবার আসানসোলেও একই অভিজ্ঞতা হয়েছে জেলাশাসকের। শহরের একটি প্রাথমিক স্কুলের ক্লাসঘরে ঢুকে সৌমিত্রবাবু পড়ুয়াদের জিজ্ঞেস করেন, ‘বল তো দেখি, রাজ্যের রাজধানীর নাম কী?’ শুনেই ঘাবড়ে যায় তৃতীয় শ্রেণির ওই পড়ুয়ারা। দু’এক জন এগিয়ে এল বটে। তবে এক জনের উত্তর দেয়, ‘দিল্লি’। জেলাশাসক পাল্টা জিজ্ঞেস করেন, ‘তা হলে দেশের রাজধানীর নাম?’ এ বারের খানিক ফিসফাস ক্লাসে। শেষে এক জন উত্তর দিল, ‘পটনা।’

সম্প্রতি পড়াশোনার মান খতিয়ে দেখতে আচমকা স্কুলে হানার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্ধমান জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনকে মাথায় রেখে তৈরি হয়েছে ‘মনিটরিং কমিটি’। মাসখানেক ধরে নানা স্কুলে যাচ্ছেন কমিটি সদস্যেরা।

প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন শহরের ছ’টি স্কুলে ঝটিকা পরিদর্শন করেন জেলাশাসক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি অচিন্ত্য চক্রবর্তী। স্কুলে জেলাশাসককে আচমকা দেখে খানিক হকচকিয়েই যান শিক্ষক থেকে পড়ুয়া, সকলেই। সূত্রের খবর, কুমারপুর জিএস প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শন করে রীতিমতো অসন্তুষ্ট হন জেলাশাসক। জানা গিয়েছে, অনুপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষিকা বা পড়ুয়াদের হাজিরা খাতা ঠিক নেই। শুধু তাই নয়, স্কুলের মোট পড়ুয়ার সংখ্যা ৯৪ জন হলেও এ দিন মাত্র দশ জনেরই দেখা মেলে। অচিন্ত্যবাবু বলেন, ‘‘আমরা বেশ কিছু অনিয়ম দেখেছি। প্রধান শিক্ষিকাকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ আসানসোলের গোবিন্দপুর প্রাথমিক স্কুলে গিয়ে আধিকারিকেরা দেখেন পড়ুয়ার সংখ্যা ৪৩ জন। শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন তিন জন। আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, ওই স্কুলে দু’জন শিক্ষকই যথেষ্ট। এক জন শিক্ষককে অন্যত্র বদলি করা হবে। মরিচকোটা প্রাথমিক স্কুলে গিয়ে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী আবার জেলাশাসকের কাছে বাড়িতে শৌচাগার তৈরির জন্য সাহায্যের আবেদন জানায়। সৌমিত্রবাবু উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেন।

স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে কাছেই পড়ে থাকা পোড়া কয়লা সরিয়ে ফেলারও নির্দেশ দেন জেলাশাসক। প্রশাসনের সূত্রে খবর, এ দিন রেলপার এলাকার আদর্শ বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে জেলাশাসক দেখতে পান, স্কুল থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে ফাঁকা জায়গায় বেশ কিছু পোড়া কয়লা রয়েছে। এরপরেই তিনি জানতে চান, ‘কে বা কারা ওই কয়লা জমা রেখেছে।’ এরপরেই পুলিশকে নির্দেশ দেন কয়লা সরিয়ে ফেলার জন্য।

তবে মোটের উপরে শিল্পাঞ্চলের স্কুলগুলির পঠন-পাঠনের ব্যবস্থা ভাল বলেই মন্তব্য করেছেন অচিন্ত্যবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Districts Teachers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE