Advertisement
০২ মে ২০২৪
আসানসোলে সাফাইকর্মীদের অসন্তোষ
Dengue

দুই পুরসভায় ডেঙ্গি-বৈঠক

পদক্ষেপগুলির বিষয়ে বিধান জানান, এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস করাটাই এখন মূল লক্ষ্য। মঙ্গলবার থেকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ হচ্ছে।

An image of garbage

মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ বার্নপুরের হিরাপুর মোড়ে আবর্জনা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:০৫
Share: Save:

ডেঙ্গি পরিস্থিতি আসানসোল পুর-এলাকায় যে উদ্বেগজনক, তা ইতিমধ্যেই জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। চিন্তা রয়েছে দুর্গাপুর নিয়েও। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার আসানসোল ও দুর্গাপুর, দুই পুরসভার সঙ্গে বৈঠক করল জেলা প্রশাসন। আসানসোলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৫ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এ দিকে, আসানসোলে সাফাইকর্মীদের একাংশ তাঁদের সুরক্ষা সরঞ্জাম দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন।

মঙ্গলবার আসানসোলের বৈঠকে ছিলেন জেলাশাসক এস পুন্নমবলম, সিএমওএইচ শেখ মহম্মদ ইউনুস, মেয়র বিধান উপাধ্যায়-সহ অন্যরা। বৈঠক শেষে জেলাশাসক বলেন, “আসানসোল পুর-এলাকায় ডেঙ্গি বাড়ছে। তা নিয়ন্ত্রণের উপায় বার করতে এই বৈঠক। ডেঙ্গির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা রুখতে ১৫ দিনের সময়সীমা নেওয়া হয়েছে। কিছু পরিকল্পনা করা হয়েছে। পুরসভাকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য বলা হয়েছে।”

পদক্ষেপগুলির বিষয়ে বিধান জানান, এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস করাটাই এখন মূল লক্ষ্য। মঙ্গলবার থেকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ হচ্ছে। প্রতিটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রক্তের নমুনা পরীক্ষা করানো হচ্ছে। আবর্জনা সাফাই ও নিকাশির জন্য বাড়তি কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে। চলছে ‘পেলোডার’ নামিয়ে আবর্জনা সাফাইয়ের কাজ।

এ দিকে, এ দিন ইউনুস জানিয়েছেন, প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হচ্ছেন। বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলি পুরসভার সঙ্গে স্বাস্থ্য দফতরও বাস্তবায়িত করবে। তবে শনিবারের পরে, তাঁদের হাসপাতালে আর কোনও ডেঙ্গি আক্রান্ত ভর্তি হননি বলে জানিয়েছেন আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস।

এ দিন দুর্গাপুরের বৈঠকে জেলাশাসক, মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) সৌরভ চট্টোপাধ্যায়, পুর-প্রশাসক অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়-সহ অন্যরা যোগ দেন। অনিন্দিতা জানান, এখনও পর্যন্ত দুর্গাপুর পুর-এলাকায় মোট ৩৫৭ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। তাঁদের মধ্যে ২৬ জন চিকিৎসাধীন। বাকিরা সুস্থ। জেলাশাসক জানান, কারখানা, গুদাম, খাটালের মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে ডেঙ্গি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় সতর্কতা যাতে নেওয়া হয়, তা নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি, রেল, ইস্কো, ডিএসপি, ইসিএলের সঙ্গে দ্রুত বৈঠক করার কথাও জানিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক।

সে সঙ্গে, দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের দিকে বিশেষ নজর রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। এখানে এখনও ৩০ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত রয়েছেন। মঙ্গলবার এলাকায় ডেঙ্গি রোধে মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) সৌরভের উপস্থিতিতে বাড়ি-বাড়ি অভিযান চালায় পুরসভা। স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বে থাকা পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য রাখি তিওয়ারি জানান, এই এলাকার আক্রান্তদের অনেকেই সুস্থ হয়ে উঠছেন। ১০ জন ভর্তি আছেন বিভিন্ন হাসপাতালে। তিনি জানান, পুরসভার উদ্যোগে আগাছা সাফাই, কুয়োর মুখ জাল দিয়ে ঢেকে দেওয়া, কীটনাশক স্প্রে করা, নর্দমায় গাপ্পি মাছ ছাড়া-সহ বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। চলছে সচেতনতা প্রচারও।

এ দিকে, এ দিন সাফাইকর্মীদের অসন্তোষের বিষয়টিও সামনে এসেছে। আসানসোলের রেলপাড়ে সাফাই কাজ চলাকালীন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাফাইকর্মীদের একাংশ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা জানান, জীবন বাজি রেখে আবর্জনার স্তূপ সাফ করছেন তাঁরা। কিন্তু আসানসোল পুরসভা তাঁদের জুতো, দস্তানা, মাস্ক কিছুই দেয়নি। তবে, মেয়র বিধান জানান, এই সব উপকরণ কিনতে দরপত্র ডাকা হয়েছে। দ্রুত সেগুলি দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue garbage Asansol Durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE