Advertisement
১৯ মে ২০২৪
শিল্পাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী কালী

রাজবাড়ির নৈবেদ্যয় পুজো শুরু

রাজা বা রাজপাট নেই। কিন্তু কোথাও এখনও রাজবাড়ি থেকেই পাঠানো হয় নৈবেদ্য। কোথাও আবার খোলা আকাশের নীচেই দেবীর অধিষ্ঠান।

কল্যাণেশ্বরী মন্দির। নিজস্ব চিত্র।

কল্যাণেশ্বরী মন্দির। নিজস্ব চিত্র।

সুশান্ত বণিক ও সুব্রত সীট
আসানসোল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৩১
Share: Save:

রাজা বা রাজপাট নেই। কিন্তু কোথাও এখনও রাজবাড়ি থেকেই পাঠানো হয় নৈবেদ্য। কোথাও আবার খোলা আকাশের নীচেই দেবীর অধিষ্ঠান। যুগ পাল্টানোর সঙ্গে-সঙ্গে থিম পুজোর বহর বাড়লেও আজও অতীতের বিভিন্ন বিশ্বাস, জনশ্রুতি, কাহিনিকে সঙ্গে করে উজ্জ্বল আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের প্রাচীন কালী পুজোগুলি।

প্রায় ৯ শতাব্দীর পুরনো কল্যাণেশ্বরী মন্দিরে প্রতি বছর কালীপুজোর রাতে নৈবেদ্য পাঠানো হয় কাশীপুর রাজবাড়ি থেকে। পুজোয় রাজার নামেই প্রথম সঙ্কল্প করা হয়। জনশ্রুতি, এই মন্দিরে প্রথম সিদ্ধিলাভ করেন দেবনাথ চট্টোপাধ্যায়। পাহাড় কেটে মন্দিরটি বানানো হয়েছে। কথিত রয়েছে, এখানে গুহার মুখে দেবী অধিষ্ঠিত। ভক্তদের বিশ্বাস, মন্দিরে এখনও দেবীর পায়ের ছাপ রয়েছে।

এথোড়া বুড়োকালী মন্দির ও মূর্তির প্রতিষ্ঠা কবে হয়েছে, তার কোনও দলিল নেই। তবে বাসিন্দাদের মতে, মন্দিরটি প্রায় তিন শতাব্দীর পুরনো। এখানে দেবীর মাথার উপরে ছাদ নেই। বাসিন্দারা জানান, অনেকে মন্দিরের ছাদ তৈরির চেষ্টা করলেও সফল হননি কেউই। এখানে কালীপুজোর দিন সূর্যাস্তের পরে প্রতিমা তৈরি হয়। এক শতাব্দীরও বেশি পুরনো আসানসোল হাটন রোড কালী মন্দিরের পুজো ঘিরেও এলাকাবাসীর উৎসাহ চোখে পড়ার মতো। ভক্তদের বিশ্বাস, এই মন্দিরের দেবী আসলে মানুষের জীবনে সুখ-সমৃদ্ধির দেবী।

দুর্গাপুরের ভিড়িঙ্গি কালীবাড়ির পুজোও শিল্পাঞ্চলের মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত। ১৮৫২ সালে অক্ষয়কুমার রায় ভিড়িঙ্গি গ্রামে শ্মশান লাগোয়া এলাকায় দেবীমূর্তির প্রতিষ্ঠা করেন। পরে ৪ বিঘে জমিতে মন্দিরকে কেন্দ্র করে আশ্রম গড়ে ওঠে। পুজোর অষ্টম দিনে বিশেষ ভোগ নিতে ভিড় জমান বহু এলাকার ভক্তরা। এ ছাড়া বছরভর আশ্রম কমিটি বিভিন্ন সামাজিক কাজও করে থাকে।

দুর্গাপুরের অন্যতম প্রাচীন পুজো আমরাই গ্রামে হয়। কথিত রয়েছে, প্রায় তিন শতাব্দী আগে গ্রামে পুজোর শুরু করেন কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়। দেবীর স্বপ্নাদেশে পুজো শুরু করেন তিনি, এবং সেই সূত্রেই ফিরে পান পুকুরে ডুবে যাওয়া তাঁর বোনকে। বছরভর এখানে ঘটে পুজো হলেও কালীপুজোর দিনে প্রতিমা তৈরি করে মহাশক্তির আরাধনা করা হয়। এ ছাড়াও শহরের অন্যতম প্রাচীন পুজোগুলি হল মহিষ্কাপুর, পিয়ালা কালীবাড়ির পুজো।

এলাকাবাসীর বক্তব্য, থিমের পুজোর ভিড়ে ঐতিহ্য ও সাবেক রীতির সন্ধান মেলে শিল্পাঞ্চলের এই পুরনো পুজোগুলিতেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rajbari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE