Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

প্রায় বাসহীন পথে ভোগান্তি, খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থায় পুলিশ

আটকে পড়েন বহু ট্রাকচালক ও খালাসিরা। তাঁদের একাংশের জন্য খাওয়াদাওয়ার বন্দোবস্ত করল পুলিশই।

পুলিশের তত্ত্বাবধানে খাওয়াদাওয়া। —নিজস্ব চিত্র।

পুলিশের তত্ত্বাবধানে খাওয়াদাওয়া। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:১১
Share: Save:

পথে থাকল না বাস। এই পরিস্থিতিতে অন্য বারের মতো এ বারেও শহরজুড়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন অটোচালকেরা, অভিজ্ঞতা দুর্গাপুরবাসীর একটা বড় অংশের। শনিবার কলকাতায় ব্রিগেড সমাবেশের ভিড় সামলাতে জাতীয় সড়কে ‘নো এন্ট্রি’ ছিল। আটকে পড়েন বহু ট্রাকচালক ও খালাসিরা। তাঁদের একাংশের জন্য খাওয়াদাওয়ার বন্দোবস্ত করল পুলিশই।

সকাল ১০ টা। দুর্গাপুর স্টেশন লাগোয়া বাসস্ট্যান্ডে ছেলে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া বিশ্বনাথকে নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন মাধবী মণ্ডল। যাবেন, সোনামুখী। দুর্গাপুর থেকে সোনামুখী যাওয়ার দু’টি রুটের একটিতেও বাস চলছে না। শেষমেশ দুর্গাপুরে মসজিদমহল্লায় বাপের বাড়ি যাওয়ার জন্য বেনাচিতির মিনিবাস ধরলেন তিনি। ব্রিগেড যাওয়ার জন্য মিনিবাস সে ভাবে নেওয়া হয়নি। কিন্তু যাত্রী না মেলায় বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরের বিভিন্ন রুটে মিনিবাসের সংখ্যাও কমতে থাকে। অভিযোগ, যাত্রীদের বাড়ি ফিরতে হয়েছে অটোয় চড়া ভাড়া গুনে। বিধাননগরের কেতকী বসু বলেন, ‘‘মুচিপাড়া থেকে অটো ‘রিজার্ভ’ করে বাড়ি ফিরতে হল। অনেক বেশি ভাড়া লাগল।’’

জাতীয় সড়কে ‘নো এন্ট্রি’ থাকায় বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়ে পণ্যবাহী শত শত ট্রাক। চালক ও খালাসিরা বিপাকে পড়েন। রাস্তার ধারের হোটেল, ধাবায় অনেকে খাবার কিনে খান। অনেককে আবার ধাবার খোঁজে তিন-চার কিলোমিটার হাঁটতেও দেখা গিয়েছে। তাঁরা জানান, রোদের তেজ ভালই। হাতের কাছে পানীয় জল না পেয়ে দোকান থেকে জলের বোতল কিনতে হয়েছে। রামঅবতার সিংহ নামে এক চালক বলেন, ‘‘একে তো খাবার, পানীয় জলের সমস্যায় ভুগছি। তার উপরে সময়ে পণ্য পৌঁছে দিতে পারব না। কৈফিয়তে কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট না হলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে।’’

তবে এ সবের মধ্যে পানাগড়ে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকচালকেরা ছিলেন ভাগ্যবান! জাতীয় সড়কে কাঁকসার বিরুডিহার সার্ভিস রোডে এ দিন দাঁড়িয়ে পড়ে বহু ট্রাক। আশপাশে কোনও হোটেল বা ধাবার ব্যবস্থা নেই। কী ভাবে খাবার বা পানীয় জলের ব্যবস্থা হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন কয়েকশো চালক ও খালাসি। শেষমেশ তাঁদের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করে কাঁকসা ট্র্যাফিক পুলিশ। গ্যাস সিলিন্ডার, আভেন, ডেকরেটরের কাছে অন্য সামগ্রী নিয়ে প্রায় পাঁচশো জনের জন্য খিচুড়ি ও চাটনি রান্নার ব্যবস্থা করা হয়। লাগিয়ে দেওয়া হয় ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ ব্যানার। সার্ভিস রোডের উপরেই পাত পেড়ে খাওয়ানো হয় তাঁদের। তদারকির দায়িত্বে ছিলেন পুলিশকর্মীরাই। এমন আয়োজনে খুশি ট্রাকচালক ও খালাসিরা। ট্রাক নিয়ে ঝাড়খণ্ড থেকে বসিরহাট যাচ্ছিলেন মান্নান খান। তিনি বলেন, ‘‘খাবার, জল কিছুই ছিল না। চরম দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত এমন আয়োজন হবে ভাবিনি!’’

ব্রিগেডের জনসভা উপলক্ষে শহরের বিভিন্ন রুটের বাস কলকাতায় চলে যাওয়ায় আসানসোলে মিশ্র প্রভাব পড়েছে। পরিবহণকর্মী ও সাধারন মানুষের অভিযোগ, শহরে বড়বাস প্রায় চলেনি। তবে সংখ্যায় কম চললেও মিনিবাস দেখা গিয়েছে। তবে এ দিন পথে অনেক কম মানুষ ছিলেন। শুক্রবার দুপুর থেকে শহরে বড়বাসের সংখ্যা অনেক কমে যাওয়ায় শনিবার কী হতে পারে, তা বুঝেই সম্ভবত এমনটা, অনুমান পরিবহণকর্মীদের। তবে চলেছে অটো ও টোটো।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC brigade Kolkata rally TMC rally Kanksa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE