দেদার: বালি চুরি গিয়েছে এখান থেকে, দাবি বাসিন্দাদের। নিজস্ব চিত্র
বালি মাফিয়াদের উপদ্রবে জীবন অতিষ্ঠ, এই অভিযোগে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভে সামিল হলেন দুর্গাপুরের দামোদরের চরের বড়মানা এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, পুলিশ-প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও ফল হয়নি।
ওই এলাকার বাসিন্দারা মূলত দামোদরের চরে সবজি চাষ করেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, বালি মাফিয়ারা অপরিকল্পিত ভাবে যন্ত্র দিয়ে দামোদরের বালি তুলে নেওয়ায় ভূমিক্ষয় হচ্ছে। এর ফলে চরের আয়তন কমে যাচ্ছে। এক দিকে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্য দিকে তাঁদের চাষের জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, তাঁদের অনেকেরই কাঁচা বাড়ি। ভূমিক্ষয়ের ফলে তা ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আবার বালির লরি, ট্রাক্টর যাতায়াত করায় রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে এই মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বন্ধের দাবিতে টানা অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেছেন বাসিন্দাদের একাংশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকাটি বাঁকুড়া জেলার বড়জোড়া ব্লকের অন্তর্গত। বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের তরফে ই-অকশন করে দামোদরের বালিঘাটগুলি চালু করা হয়েছে। বড়মানার ঘাটটি পেয়েছে ঝাড়খণ্ডের এক সংস্থা। তারা এখনও কাজ শুরু করেনি বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। অথচ, নিয়মিত বালি তোলার কারবার চলছেই।
বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, বালি তোলার কাজে এলাকার লোক নেওয়া হয় না। ফলে, বালিঘাট চলায় আখেরে তাঁদের কোনও উপকার হয় না। উল্টে, চাষজমি থেকে বসতবাড়ি, সব কিছু নিয়েই সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে। বিক্ষোভে যোগ দেওয়া ননী রায়, মিলন সরকার, দুলাল মজুমদারদের অভিযোগ, ‘‘প্রতিবাদ করায় হুমকি শুনতে হয়েছে। প্রশাসনকে সব জানিয়েছি। অবৈধ বালির কারবার বন্ধ না হলে আমরা বড়সড় আন্দোলনের রাস্তায় যাব।’’ বাসিন্দাদের দাবি, অপরিকল্পিত ভাবে বালি তোলায় দামোদরের পাশাপাশি গভীর নালা তৈরি হয়ে যাচ্ছে। বর্ষার জলে তা ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে। এমনকী, দামোদরে মিশেও যেতে পারে এলাকাটি। কয়েক হাজার বাসিন্দা বিপাকে পড়বেন সেক্ষেত্রে।
বালি তোলার সঙ্গে যাঁরা জড়িত বলে বাসিন্দারা অভিযোগ তুলেছেন, সেই শ্যামল মণ্ডল, অভিজিৎ সিংহেরা অবশ্য বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ডের সংস্থা বালি তোলার জন্য আমাদের রাস্তা তৈরির কাজ দিয়েছে। আমরা সেই কাজ করছি। বালি অন্য কেউ তুলছেন। এলাকার লোকজনও নিজেদের প্রয়োজনে বালি তোলেন।’’
এ দিন বিকেলে প্রশাসনের আধিকারিকেরা এলাকায় গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy