ছাড়া হচ্ছে দামোদরের জল। নিজস্ব চিত্র।
ঝাড়খণ্ডে অত্যাধিক বৃষ্টিপাতের জেরে প্রচুর পরিমাণে জল এসে জমা হচ্ছে মাইথন এবং পাঞ্চেত ড্যামে। জলের চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই দু’টি ড্যাম থেকে শনিবার সকালে জল ছাড়া হয়েছে। ফলে জলস্তর বাড়ছে দামোদরে। এই জল দামোদরের মাধ্যমে পৌঁছবে পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, হাওড়ায়। যার জেরে ওই জেলাগুলির নদী তীরর্বর্তী এলাকায় বাড়ছে প্লাবনের আশঙ্কা। এর মধ্যে যদি বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টি বাড়ে, তাহলে কয়েকটি জেলার পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।
বৃষ্টিপাতের জেরে মাইথনে ৭৬ হাজার ৬০০ কিউসেক এবং পাঞ্চেতে ১.৯৫ লক্ষ কিউসেক জল জমা হয়েছে। শনিবার সকালে মাইথন ড্যাম থেকে ১৪ হাজার কিউসেক এবং পাঞ্চেত ড্যাম থেকে ৩৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। সেই জল জমা হয়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজে। জল বাড়ায় দুর্গাপুর ব্যারেজ কর্তৃপক্ষও জল ছা়ড়া শুরু করেছে। সে জন্যই শঙ্কা বাড়ছে পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি জেলার নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের।
পাঞ্চেত এবং মাইথনের জল দুর্গাপুর পেরিয়ে ঢুকে পড়ে পূর্ব বর্ধমানে। তাই দামোদরের জল বৃদ্ধি জামালপুর, রায়নার মতো নদী তীরর্বর্তী এলাকাকে ভাসিয়ে দেয়। আশঙ্কা তৈরি হয় হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর এবং আমতায়। হুগলির আরামবাগ, খানাকুলেও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে দামোদরের জলের জেরে। দামোদরের এই জল ঢোকে বাঁকুড়া জেলাতেও। সেখানকার বড়জোড়া এবং পাত্রসায়র ব্লকের নীচু এলাকাগুলি জলমগ্ন হয়ে পড়ে।
গত কয়েকদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গেও একটানা বৃষ্টি হয়েছে। যার জেরে বিভিন্ন জায়গা এখনও জলমগ্ন। এর মধ্যে ওই ড্যামগুলি থেকে জল ছাড়া নতুন করে চিন্তা বাড়াচ্ছে প্রশাসনের। এই বৃষ্টিপাতের জেরে হুগলির খানাকুল-১ নম্বর ব্লকের ঘোষপুর, মালঞ্চ, বেয়েজলা, কুলাট এলাকার মানুষ এখনও জলবন্দি। আরামবাগের বিভিন্ন এলাকায় এখনও জমে আছে জল। আরামবাগ-তারকেশ্বর রোড শনিবারও জলের তলায়। এই পরিস্থিতিতে পাঞ্চেত এবং মাইথন থেকে আরও জল ছাড়া হয়, তাহলে ওই সব এলাকার পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। ইতিমধ্যেই আরামবাগ মহকুমায় ২০টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। পাশাপাশি বালির বস্তা দিয়ে বাঁধগুলিকে বাঁধার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন হুগলির জেলাশাসক পি দীপাপ প্রিয়া।
দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ায় দামোদরে বাড়ছে জলস্তর। দামোদরে জলস্তর বাড়লে শালী নদীর জল বিপরীতে বইতে শুরু করে। যার জেরে পাত্রসায়র ব্লকের নারায়ণপুর, জলজলার মতো গ্রামগুলি প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। আগামী দিনে পাঞ্চেত, মাইথনের জল ছাড়া অব্যাহত থাকে এবং পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টি হয়, তাহলে বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যার আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy