মোজাম্মেল ও সাদ। নিজস্ব চিত্র
কয়েক বছর আগেও তাঁর ইচ্ছে ছিল কোরান নিয়ে গবেষণা করার। তবে মাদ্রাসা বোর্ডের ফাজিল পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান পাওয়া মোজাম্মেল মল্লিক এখন আইন নিয়ে পড়তে চান। হতে চান আইনজীবী।
কাটোয়ার কদমপুকুর সিনিয়র মাদ্রাসার ছাত্র মোজাম্মেল এ বার ফাজিল পরীক্ষায় ৫৫১ পেয়েছেন। ইংরেজি, আরবি, ধর্মতত্ত্ব, ইসলামিক ইতিহাস, ইসলাম স্ট্যাডিতে ৯০ শতাংশের উপরে নম্বর পেয়েছেন তিনি। কাটোয়ার মুলটি গ্রামে মাটির দেওয়াল, খড়ের চালা দেওয়া বাড়িতে মা হীরা মল্লিকের সঙ্গে থাকেন তিনি। বছর আটেক আগে বাবা মোজেহার মল্লিক অসুস্থ হয়ে মারা যান। দুই দিদিও রয়েছেন। বর্তমানে উত্তরপ্রদেশের দারুল উলুম দেওবন্দ নামে এক বেসরকারি মাদ্রাসায় ধর্মীয় বিষয়ে পড়াশোনা করছেন মোজাম্মেল। শনিবার ফোনে তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে কোরান নিয়ে গবেষণা করার ইচ্ছে ছিল। আমার প্রিয় বিষয় আরবি। কিন্তু পরে স্বপ্ন পাল্টে ফেলেছি। এখন ইচ্ছে আইনজীবী হব।’’
বাবার মৃত্যুর পরে দুই কাকা আসগর আর সামাইরা পড়াশোনায় সাহায্য করেছেন তাঁকে। কদমপুকুর সিনিয়র মাদ্রাসায় নবম শ্রেণি থেকে পড়ছেন তিনি। তার আগে পড়তেন কুসুমগ্রামের দীর্ঘনগর মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রে। মোজাম্মেল বলেন, ‘‘আইনজীবী হয়ে গরিবদের কম পয়সায় আইনি সাহায্য দেওয়া, সঠিক বিচার পাইয়ে দেওয়া আমার লক্ষ্য।’’ তাঁর অবসর কাটে ক্রিকেট, গল্পের বই আর নবিদের জীবনী পড়ে।
বর্ধমানের সরাইটিকরের মহম্মদ সাদও ভাল ফল করে নজর কেড়েছেন। মাদ্রাসার ফাইনাল পরীক্ষায় ৭৬৩ পেয়ে রাজ্যে সপ্তম হয়েছেন তিনি। সাদের বাবা খলিল আহম্মেদ খণ্ডঘোষ মাঝখান্ডা হাই স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। কাকা সৈয়দ আবদুল্লাহও শিক্ষক। তিনি জানান, বাড়িতে বরাবরই পড়াশোনার পরিবেশ। সাদের দাদা মোহাম্মদ তালহা উচ্চ মাধ্যমিকে ২০২০ সালে রাজ্যে দ্বিতীয় হয়েছিলেন। খুড়তুতো দাদা সৈয়দ উমর ফারুকও গত বছর মাদ্রাসা ফাইনালে সপ্তম হন। সাদের ইচ্ছা চিকিৎসক হওয়ার। তিনি বলেন, ‘‘২০২১ সালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাবা মারা যান। প্রথম দশের মধ্যে থাকব, এটা নিশ্চিত ছিলাম। এই ফল ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নকে আরও জাগিয়ে দিল।’’ দিনে দশ ঘণ্টা পড়তেন সাদ। পড়ার মাঝে অবসর ছিল ক্রিকেট। মা ফারহানা বেগম জানান, অঙ্ক, বিজ্ঞান, বাংলা, ইতিহাস, ভূগোলে ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে ছেলে। তাঁরাও চান সে চিকিৎসক হোক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy