Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Nursing Homes

অনিয়মের অভিযোগ, নজরে আরও নার্সিংহোম

গোলাপবাগ মোড় থেকে নবাবহাটের দিকে যাওয়ার পথে, জিটি রোডের ধারে রয়েছে ওই নার্সিংহোমটি। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, সেটি ‘সি' গ্রেডের।

এই নার্সিংহোম নিয়ে ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিজস্ব চিত্র

এই নার্সিংহোম নিয়ে ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৩ ০৮:৩৯
Share: Save:

স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসার বিলে কারচুপির অভিযোগে বন্ধ করা হয়েছে কেশবগঞ্জচটির একটি নার্সিংহোম। শনিবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, নার্সিংহোমে ঢোকার দু’টি প্রবেশপথে ঝুলছে তালা। প্রতিদিনের মতো পরিচিত ভিড় সেখানে নেই। দেখা মেলেনি মালিকপক্ষের কারও। জেলায় বারবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে নার্সিংহোমগুলির একাংশের বিরুদ্ধে। প্রশ্ন উঠেছে, এ বার প্রশাসন নার্সিংহোম বন্ধের মতো কড়া পদক্ষেপ করলেও, বেআইনি কাজে যুক্ত নার্সিংহোমগুলির হুঁশ কি ফিরবে?

গোলাপবাগ মোড় থেকে নবাবহাটের দিকে যাওয়ার পথে, জিটি রোডের ধারে রয়েছে ওই নার্সিংহোমটি। স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, সেটি ‘সি' গ্রেডের। অথচ, সেখানে ‘বি’ গ্রেডের পরিষেবা-মূল্যের তালিকা অনুযায়ী চিকিৎসার বিল ধার্য করা হচ্ছিল। এক রোগের নাম করে রোগী ভর্তি করিয়ে বিল হচ্ছিল বিরল রোগের চিকিৎসার। বিষয়টি নজরে আসেস্বাস্থ্য ভবনের। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরে, ১ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে বলা হয় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে। তাঁদের আবেদনে সাড়া দিয়ে জরিমানা কমে হয় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। কিন্তু, সে টাকাও তাঁরা না দেওয়ায় নার্সিংহোমটি বন্ধের নোটিস দেয় স্বাস্থ্য দফতর।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে রোগী ভর্তি নিয়ে দুর্নীতি করায় নার্সিংহোমটি বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।’’ নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, নিয়ম মেনেই তাঁরা রোগী ভর্তি করেছিলেন। সে কারণে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থেকে টাকা পেতেও অসুবিধা হয়নি। প্রায় ছ’মাস পরে ‘অনৈতিক ভাবে’ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নার্সিংহোম মালিক শেখ শেখাওয়াত হোসেনের দাবি, ‘‘দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছি।’’

স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে বর্ধমানের বিভিন্ন নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যেই অভিযোগ ওঠে। গত বছর গোদার মাঠে সভা করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নার্সিংহোমগুলিকে এ নিয়ে কড়া বার্তা দেন। অভিযোগ, তাতেও বন্ধ হয়নি বেনিয়ম। শহরের ‘ডাক্তার মহল্লা’ নামে পরিচিত খোসবাগানের একটি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের টাকা নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে। কাটোয়ার গাঁফুলিয়া গ্রামের কিছু মহিলাকে টাকার টোপ দিয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হাতিয়ে নিত একটি চক্র। তার পরে, উপভোক্তাকে রোগী সাজিয়ে তাঁদের কার্ড ব্যবহার করে হাজার-হাজার টাকা তুলে নেওয়া হত বলে অভিযোগ। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে গত বছরের মার্চে। গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের আরও কয়েকটি নার্সিংহোম স্বাস্থ্য দফতরের আতসকাচের নীচে রয়েছে। পরিকাঠামো উপযুক্ত না হওয়া সত্ত্বেও সেগুলিতে রোগী ভর্তি করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ। এ ছাড়া, চিকিৎসার নামে মোটা টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলেও খবর আছে দফতরের কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE