Advertisement
১৬ মে ২০২৪

‘কার্তিক-লড়াই’ ঘিরে জোরদার নিরাপত্তা

মাস দেড়েক আগেই ঘটে গিয়েছে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ড। তার পরে জেলার প্রথম বড় উৎসব কাটেয়ার কার্তিক লড়াই। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও তাই চূড়ান্ত। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর থেকেও কার্তিক-লড়াইয়ের মণ্ডপগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা জানানো হয়েছে। দফতরের নির্দেশ মতো বিশাল সংখ্যক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে শহর জুড়ে।

মণ্ডপে চলছে তল্লাশি। সোমবার অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

মণ্ডপে চলছে তল্লাশি। সোমবার অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।

সৌমেন দত্ত
কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৪ ০২:০৪
Share: Save:

মাস দেড়েক আগেই ঘটে গিয়েছে খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ড। তার পরে জেলার প্রথম বড় উৎসব কাটেয়ার কার্তিক লড়াই। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও তাই চূড়ান্ত। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর থেকেও কার্তিক-লড়াইয়ের মণ্ডপগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা জানানো হয়েছে। দফতরের নির্দেশ মতো বিশাল সংখ্যক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে শহর জুড়ে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া থেকে পুলিশ বাহিনী আনা হয়েছে শহরে। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছে ২ সেকশন র্যাফ সহ প্রায় ৪৫০ পুলিশ। আজ, মঙ্গলবার ‘লড়াই’য়ে শহরের তিরিশটি জায়গায় পুলিশ পিকেট থাকবে। ১৩টি জায়গায় থাকছে পুলিশের সহায়তা বুথ। সোমবার বিকালে জেলা গোয়েন্দা দফতরের বম্ব-স্কোয়াড শহরের বিভিন্ন মণ্ডপের ভিতর ও আশেপাশের জায়গা পরীক্ষা করে দেয়। ইভটিজিং রুখতে মহিলাদের বিশেষ দলকেও রাস্তায় ঘুরতে দেখা যাচ্ছে।

সোমবার থেকেই কাটোয়ায় যেন মানুষে ঢল নেমেছে। জেলা তো বটেই। ভিন জেলা এমনকী বাইরে থেকেও অনেকে এসেছেন। তবে মূল আকর্ষণ কার্তিক-লড়াই। বিসর্জন না হলেও বিসর্জনের শোভাযাত্রা ঘিরে পুজো উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতা দেখার মতো। সরকারি হিসেবে, কাটোয়াতে মোট ৮৪টি পুজো কমিটি কার্তিক পুজো করে আর ‘লড়াই’য়ে মাতে ৬৩টি পুজো কমিটি। উদ্যোক্তারা যদিও জানান, বিনা অনুমতিতে আরও বেশকিছু কমিটি লড়াইয়ে যোগ দেয়। সোমবার থেকেই মণ্ডপে উপচে পড়া ভিড়, আলোক সজ্জা আর বাজনার দাপট বুঝিয়ে দিচ্ছে প্রতিটি পুজো কমিটিই লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত।

প্রশাসনের তরফে বেশ কিছু নির্দেশও দেওয়া হয়েছে পুজো কমিটিগুলিকে। শোভাযাত্রার সময় কমিটিগুলি সর্বাধিক ৫টি আলোর গেট রাখতে পারবেন, দু-তিন রকমের বেশি বাজনা রাখাও যাবে না বলে প্রশাসনের নির্দেশ। যদিও উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, বেশিরভাগ উদ্যোক্তায় ব্যান্ড, তাসা, ডগর সহ মোট ৪ রকমের বাজনা রাখছেন। বেশ কয়েকটি পুজো কমিটি চন্দননগরের আলোকসজ্জা এনে টেক্কা দিতে চাইছেন প্রতিদ্বন্দ্বীদের। সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শোভাযাত্রা নির্দিষ্ট রাস্তায় ঢুকতে হবে বলেও সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। লেনিন সরণি-চাউলপট্টি হয়ে ডাবপট্টি দিয়ে খড়েরবাজার যাবে শোভাযাত্রা। সেখান থেকে আবার পঞ্চাননতলা- নিশানতলা-কারবালাতলার মোড় হয়ে আতুহাট পাড়ায় ঢুকবে যাত্রাটি। তারপর সিদ্ধেশ্বরীতলা থেকে বড়বাজার চৌরাস্তা হয়ে নিচুবাজার-থানা রোড হয়ে ফের লেনিন সরণি দিয়ে শোভাযাত্রা শহর পরিক্রমা করবে।

কার্তিক লড়াই-কে কেন্দ্র করে পুরসভার তরফেও বেশ কিছু ব্যস্থা নেওয়া হয়েছে। ভাঙা রাস্তায় পিচের প্রলেপ থেকে খোলা নর্দমায় ঢাকনা লাগানো, রাস্তায় পর্যাপ্ত আলো বসানো প্রভৃতি দিকে খোয়াল রাখছে পুরসভা। সারারাত প্রথমিক চিকিৎসা ও পানীয় জলের পর্যাপ্ত বন্দোবস্তোও করা হয়েছে পুরসভার তরফে। কার্তিক লড়াই দেখতে বিভিন্ন গ্রাম তো বটেই, মানুষ আসেন মুর্শিদাবাদের সালার থানা ও ভাগীরথীর উল্টো পাড়ে নদিয়ার কালীগঞ্জ, নাকাশিপাড়া থেকেও। তাই সারারাত ফেরি চলানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এখন অপেক্ষা শুধু লড়াই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kartik pujo katwa soumen dutta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE