Advertisement
১৮ মে ২০২৪
জেলায় একশো দিনের কাজ

টাকা না আসায় মজুরি বাকি পুজোর আগে, বাড়ছে ক্ষোভ

একশো দিনের কাজ করে মিলছে না টাকা। বকেয়া চেয়ে পঞ্চায়েতগুলিতে বিক্ষোভ হচ্ছে নিয়মিত। কিন্তু তারাও নিরুপায় বলে দাবি পঞ্চায়েতগুলির। কারণ, এই প্রকল্পের টাকা আসেনি। পুজোর আগে টাকা মেটাতে না পারলে ক্ষোভ-বিক্ষোভ সামাল দেওয়া মুশকিল হবে বলে মনে করছে নানা পঞ্চায়েত। জেলা পরিষদের আশ্বাস, দিন পনেরোর মধ্যে কিছু টাকা মেটানো যাবে।

সুশান্ত বণিক
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ২৩:৫৮
Share: Save:

একশো দিনের কাজ করে মিলছে না টাকা। বকেয়া চেয়ে পঞ্চায়েতগুলিতে বিক্ষোভ হচ্ছে নিয়মিত। কিন্তু তারাও নিরুপায় বলে দাবি পঞ্চায়েতগুলির। কারণ, এই প্রকল্পের টাকা আসেনি। পুজোর আগে টাকা মেটাতে না পারলে ক্ষোভ-বিক্ষোভ সামাল দেওয়া মুশকিল হবে বলে মনে করছে নানা পঞ্চায়েত। জেলা পরিষদের আশ্বাস, দিন পনেরোর মধ্যে কিছু টাকা মেটানো যাবে।

বর্ধমান জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার ৩১টি পঞ্চায়েত সমিতিতেই এই এক পরিস্থিতি। বেশ কয়েক মাস ধরে একশো দিনের প্রকল্পের টাকা আসছে না। ফলে, যাঁরা এই প্রকল্পে কাজ করেছেন, তাঁদের মজুরিও বাকি পড়ে যাচ্ছে। গত পঞ্চায়েত ভোটে জেলা পরিষদ দখল করে তৃণমূল। তার পরেই জেলা পরিষদের তরফে সমস্ত পঞ্চায়েতকে নির্দেশ দেওয়া হয়, কাজ চাইলেই যেন বাসিন্দারা একশো দিনের প্রকল্পের কাজ পান। এই নির্দেশ পাওয়ার পরে ঢালাও কাজ দিয়েছে পঞ্চায়েতগুলি। কিন্তু, মাঝ পথে এ ভাবে যে টাকা আসা বন্ধ হয়ে যাবে তা তারা আন্দাজ করেনি। ফলে, এখন মজুরির দাবিতে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে।

মজুরি না পাওয়ার ক্ষোভে মাঝে-মধ্যে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে হেনস্থাও হতে হচ্ছে। সম্প্রতি সালানপুরের আল্লাডি গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মীদের বাইরে বের করে দিয়ে দফতরে তালা ঝুলিয়ে দেন প্রায় চারশো বাসিন্দা। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জগদীশ মালাকার জানান, প্রায় দেড় কোটি টাকা তাঁদের পাওনা রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, “প্রশাসন ও জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে আশ্বাস মিলেছে দ্রুত টাকা মেটানো হবে। কিন্তু, বাস্তবে সেই আশা বড়ই ক্ষীণ মনে হচ্ছে।” কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির আবার দাবি, তাদের পাওনা ৩৫ কোটি টাকা। সেখানকার সভাপতি পূর্ণিমা বাউরি বলেন, “প্রতি দিন টাকা চাইতে আসছেন মানুষজন। কোনও রকমে বুঝিয়ে ফেরত পাঠাচ্ছি। কিন্তু, এ ভাবে আর কত দিন চালানো যাবে, জানি না।” পূর্ণিমাদেবীর দাবি, টাকা না পেয়ে আর কেউ কাজ করতে চাইছেন না। ফলে, এলাকার উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

ফরিদপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চুমকি মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমার এলাকায় বাকি পড়েছে প্রায় দু’কোটি টাকা। এই টাকা মেটানোটাই এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা।” এই সমিতির এক আধিকারিক জানান, প্রায় প্রতি দিনই বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন একশো দিনের কাজের শ্রমিকেরা। তিনি বলেন, “বিক্ষোভের জেরে দফতরে শান্তিতে বসে কাজ করতে পারছি না।” একশো দিনের প্রকল্পের কাজে প্রায় আড়াই কোটি টাকা দেনা রয়েছে বলে জানান অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কালোবরণ মণ্ডল। তিনি বলেন, “পুরনো টাকা মেটাতে না পারলে নতুন করে আর কাজ করাতে পারছি না।” তাঁর মতে, সামনেই পুজো। এই সময়ে বকেয়া মেটাতে না পারলে বিক্ষোভ আরও বাড়বে।

পরিস্থিতি কী ভাবে সামাল দেবেন, তা নিয়ে চিন্তায় বর্ধমানের জেলা সভাধিপতি দেবু টুডুও। তিনি বলেন, “আমার এলাকার সব ক’টি পঞ্চায়েত সমিতিরই এক অবস্থা। আমি সরকারের কাছে বিষয়টি জানিয়েছ।” দেবুবাবুর আশ্বাস, দিন পনেরোর মধ্যে কিছু টাকা আসবে। তখন কিছু মেটানো যাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

susanta banik pujo
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE