Advertisement
০৫ মে ২০২৪
রাজবাঁধ

ট্যাঙ্কারের ভাড়া বৃদ্ধির দাবি, বন্ধ তেল পরিবহণ

ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে পরিবহণ বন্ধ করে দিয়েছেন ট্যাঙ্কার মালিকেরা। ফলে, রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা ভারত পেট্রোলিয়ামের রাজবাঁধ ডিপো থেকে চার জেলার শ’খানেক পাম্পে তেল সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। ভুগছেন গ্রাহক এবং পাম্প মালিকেরা। রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রাজ্য সরকারও। মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) কস্তুরী সেনগুপ্ত জানান, সমস্যা সমাধানে শুক্রবার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৩৬
Share: Save:

ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে পরিবহণ বন্ধ করে দিয়েছেন ট্যাঙ্কার মালিকেরা। ফলে, রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থা ভারত পেট্রোলিয়ামের রাজবাঁধ ডিপো থেকে চার জেলার শ’খানেক পাম্পে তেল সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। ভুগছেন গ্রাহক এবং পাম্প মালিকেরা। রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রাজ্য সরকারও। মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) কস্তুরী সেনগুপ্ত জানান, সমস্যা সমাধানে শুক্রবার সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে।

রাজবাঁধে রাষ্ট্রায়ত্ত তিনটি তেল সংস্থার ডিপো রয়েছে। সেগুলি থেকে বর্ধমান, বীরভূম, পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার বিভিন্ন পাম্পে তেল যায়। দরপত্রের মাধ্যমে তিনটি ডিপোতেই তেল পরিবহণের জন্য ট্যাঙ্কার সরবরাহ করে ‘রাজবাঁধ ট্যাঙ্কার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’। ভারত পেট্রোলিয়ামের দরপত্রের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৩ সালের অক্টোবরে। তার পর থেকে আর নতুন দরপত্র ডাকা হয়নি। ট্যাঙ্কার মালিকদের ওই সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে বাকি দুই সংস্থা প্রতি কিলোমিটার যাওয়া-আসার জন্য ২ টাকা ৫৬ পয়সা এবং ২ টাকা ৪৩ পয়সা হারে দর দেয়। সেখানে ভারত পেট্রোলিয়াম দেয় ১ টাকা ৯২ পয়সা হারে। সংগঠনের সভাপতি চিন্ময় মণ্ডল বলেন, “আমরা বারবার দর বাড়ানোর দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কিছু হয়নি। নতুন দরপত্রও ডাকা হয়নি। এত দিন কাজ চালিয়ে এসেছি। কিন্তু দর না বাড়ালে আর পারা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ট্যাঙ্কার মালিকেরা।”

সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, চার জেলার ১৩০টি পাম্পে তেল সরবরাহ করা হয় এই রাজবাঁধ ডিপো থেকে। ১৭টি পাম্পের নিজস্ব ট্যাঙ্কার রয়েছে। বাকিগুলিতে তেল পাঠানো হয় ট্যাঙ্কার মালিকদের সংগঠনের ট্যাঙ্কার দিয়ে। সংস্থার এক আধিকারিক জানান, দুর্গাপুজোর আগে থেকেই সমস্যা চলছিল। তবে ১ নভেম্বর থেকে তা বেড়েছে। হলদিয়া ডিপো থেকে কিছু কিছু পাম্পে তেল সরবরাহের ব্যবস্থা হয়েছে। ‘পশ্চিমবঙ্গ পেট্রোলিয়ম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর জোনাল সম্পাদক বিশ্বদীপ রায়চৌধুরী অবশ্য বলেন, “তেল সরবরাহ একেবারে অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। যেখানে বাকি তেল সংস্থার পাম্প রয়েছে, সেখানে সমস্যা তত প্রকট নয়। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকায় যেখানে শুধু এই সংস্থার পাম্প রয়েছে, সেখানে সমস্যায় পড়ছেন গ্রাহকেরা।” তিনি আরও জানান, এর জেরে পাম্প মালিকেরাও লোকসানে পড়ছেন। তা ছাড়া রাজ্য সরকার সেলস ট্যাক্স এবং সেলস ট্যাক্সের উপরে সারচার্জ বাবদ কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তুষারকান্তি সেনের অভিযোগ, “দুঃখের বিষয়, সমস্যা মেটাতে তেমন কোনও উদ্যোগ তেল সংস্থার তরফে নজরে আসছে না। আর্থিক দিক থেকে ক্ষতির মুখে পড়ছেন পাম্প মালিকেরা।”

তেল সংস্থার এই অঞ্চলের ম্যানেজার বিমলেন্দু মণ্ডল এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, “স্থানীয় ভাবে দর বাড়ানো যায় না। আলোচনা চলছে। সমাধান হয়ে যাবে।” ট্যাঙ্কার মালিকদের সংগঠনের পক্ষে চিন্ময়বাবু জানান, নতুন দরপত্র ডাকার জন্য তেল সংস্থা তিন মাস সময় চেয়েছিল। তাঁদের সংগঠনের তরফে এক মাসের মধ্যে তা করার দাবি জানানো হয়। শেষ পর্যন্ত তেল সংস্থা দেড় মাসের মধ্যে দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করবে বলে প্রস্তাব দিয়েছে। চিন্ময়বাবু বলেন, “তেল সংস্থার পক্ষ থেকে মৌখিক প্রস্তাব এসেছে। লিখিত প্রস্তাব পেলে আলোচনা হবে।” মহকুমাশাসক বলেন, “অচলাবস্থা কাটাতে শুক্রবার দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE