Advertisement
১৯ মে ২০২৪

সংস্কার নেই, শহরের বড় রাস্তা ভরেছে গর্তে

গর্তে ভরেছে শহরের দুই প্রান্তের মধ্যে যোগাযোগের অন্যতম প্রধান রাস্তা। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে তা একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে গিয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর ফলে তাঁদের যাতায়াত করতে হচ্ছে ঘুরপথে। না হলে ঝুঁকি নিয়ে ব্যবহার করতে হচ্ছে সদাব্যস্ত জাতীয় সড়ক।

সিটি সেন্টার থেকে মুচিপাড়ার পথ। ছবি: বিকাশ মশান।

সিটি সেন্টার থেকে মুচিপাড়ার পথ। ছবি: বিকাশ মশান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৪ ০০:০৯
Share: Save:

গর্তে ভরেছে শহরের দুই প্রান্তের মধ্যে যোগাযোগের অন্যতম প্রধান রাস্তা। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে তা একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে গিয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, এর ফলে তাঁদের যাতায়াত করতে হচ্ছে ঘুরপথে। না হলে ঝুঁকি নিয়ে ব্যবহার করতে হচ্ছে সদাব্যস্ত জাতীয় সড়ক। অবিলম্বে রাস্তা সারিয়ে শহরের দুই প্রান্তের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা সুগম করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের সিটি সেন্টার থেকে মুচিপাড়া ও বিধাননগর যাওয়ার মূল রাস্তাটি জাতীয় সড়কের সমান্তরাল। আগে রাস্তাটি সরু ছিল। বছর দশেক আগে রাস্তা সংস্কার করে চওড়া করার উদ্যোগ হয়। তার পর থেকে জাতীয় সড়কে যাতায়াতের ঝুঁকি এড়িয়ে শহরের বাসিন্দারা এই রাস্তাটিই ব্যবহার শুরু করেন। একে যানবাহন কম, তার উপর জাতীয় সড়কের মতোই রাস্তাটি প্রায় সোজা। ফলে, অতিরিক্ত দূরত্বের প্রশ্ন নেই। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছর দুয়েক ধরে রাস্তাটি বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে। জায়গায়-জায়গায় খানাখন্দ। বর্ষার জল সেই খন্দে জমে পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলেছে। ফলে, শহরের প্রাণকেন্দ্র সিটি সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বিধাননগর, এইচএফসিএল কলোনি, মুচিপাড়া, বামুনাড়া ইত্যাদি এলাকার বাসিন্দাদের।

বিধাননগরের বাসিন্দা তপন বসুকে কর্মসূত্রে দৈনিক যাতায়াত করতে হয় সিটি সেন্টারে। নিজের গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করেন তিনি। তপনবাবু বলেন, “রাস্তাটি দিয়ে আগে বিধাননগর থেকে সিটি সেন্টার যেতে সময় লাগত মিনিট পনেরো। এখন লাগে অন্তত তিন গুণ। বেশ কিছু জায়গায় গাড়ি চালানো রীতিমতো বিপজ্জনক।” পেশায় একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী, কাঁকসার বামুনাড়া এলাকার পায়েল মণ্ডল সিটি সেন্টার যান স্কুটিতে চড়ে। তিনি বলেন, “মুচিপাড়া থেকে এই রাস্তা ধরেই আমি বরাবর যাতায়াত করি। জাতীয় সড়কে স্কুটি নিয়ে যাতায়াত করা খুবই মুশকিলের ব্যাপার। কিন্তু, এই রাস্তার যা হাল তাতে বাধ্য হয়ে জাতীয় সড়কই ধরতে হয়।”

সমস্যা রয়েছে অন্য প্রান্তেও। সিটি সেন্টারের নন কোম্পানি এলাকা থেকে মোটরবাইক চড়ে যাতায়াত করেন কাঁকসার আড়রা এলাকার একটি বেসরকারি কলেজের পড়ুয়া শৌভিক চক্রবর্তী। তাঁর ক্ষোভ, “রাস্তাটির অধিকাংশ জায়গাই খারাপ। শহরের দুই প্রান্তের যোগাযোগের প্রধান রাস্তাটি এ ভাবে বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে। অথচ, পুরসভা কিছুই করছে না!” বাসিন্দারা আরও জানান, তাঁদের অনেকে জাতীয় সড়ক এড়াতে কবিগুরু, ভগৎ সিংহ মোড় হয়ে গভর্নমেন্ট কলেজের সামনের রাস্তাটি ব্যবহার করছেন। তাতে জাতীয় সড়কের দ্রুত গতির গাড়ি-বাস-লরির স্রোত এড়ানো যায়। কিন্তু, এই ঘুরপথে যাতায়াতের জন্য অনেকটা সময় নষ্ট হচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ।

কেন রাস্তাটির এমন হাল? সংস্কারই বা হচ্ছে না কেন? পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আর্থিক টানাটানির কারণে শহরের একাধিক রাস্তায় সংস্কারের কাজ করা যায়নি। শহরের মেয়র তথা বিধায়ক অপূর্ব মুখোপাধ্যায় জানান, সব চেয়ে খারাপ অবস্থা বিধাননগরের একটি অংশে, যেখানে এক বেসরকারি সংস্থা হোটেল গড়ছে। নির্মাণ সামগ্রী বোঝাই ভারী গাড়িও যাতায়াত করছে এই রাস্তা দিয়ে। এ ছাড়া সেখানে বেশ কিছুটা অংশ নিচু। ফলে, বর্ষায় জল জমে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। মেয়র অপূর্ববাবু বলেন, “ওই বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে কথা হয়েছে। সংস্থাটি রাস্তার ওই অংশে মেরামতির কাজ করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। সেই কাজ শেষ হলে পুরসভার পক্ষ থেকে বাকি রাস্তা সংস্কারে উদ্যোগ হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bad road condition durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE