সিপিএমের যে সব প্রার্থী ২৩ এপ্রিল বিকেল তিনটের মধ্যে ই-মেলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তাঁদের মনোনয়ন গ্রহণ করতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি বলেছে, সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কেন্দ্রের প্রার্থী তালিকায় ওই সব প্রার্থীর নাম প্রকাশ করতে হবে।
কী কারণে ই-মনোনয়ন গ্রহণ করতে হবে, এ দিন তা-ও জানিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতিরা তাঁদের রায়ে বলেছেন, ই-মেলে মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হলে মনোনয়ন জমা ঘিরে সংঘর্ষ বা হিংসাত্মক ঘটনা এড়ানো যায়। সবচেয়ে বড় কথা, এড়ানো যায় প্রাণহানি, রক্তপাত। মনোনয়নকে কেন্দ্র করে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ থাকে না। এই পদ্ধতিতে মনোনয়নপত্র গৃহীত হলে তা নির্বাচন প্রক্রিয়ার অন্তরায় হয় না।
ডিভিশন বেঞ্চ এ-ও জানিয়েছে, রাজ্য নির্বাচন কমিশন যখন নিজেই তার ৯ এপ্রিলের বিজ্ঞপ্তিতে মনোনয়ন পেশের সময় ভীতি প্রদর্শনের ঘটনার কথা স্বীকার করেছে, তখন তার উচিত ছিল ই-মেল মারফত জমা দেওয়া মনোনয়ন গ্রহণ করা।
আরও পড়ুন: ১৪ মে ভোট ঘিরে অনিশ্চয়তা, সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে কমিশন-রাজ্য সরকার
ডিভিশন বেঞ্চের আরও বক্তব্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে হাইকোর্ট যখন কমিশনকে মনোনয়ন পেশের মেয়াদ বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছিল, তখন কমিশনেরও উচিত ছিল মনোনয়ন পেশকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দল যে অভিযোগ তুলেছে, তা মেটানো। ই-মেলে মনোনয়ন পত্র গ্রহণ করে সেই অভিযোগ কমিশন সহজেই মেটাতে পারত।
সেই সূত্রেই এ দিন ই-মনোনয়ন গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হল বলে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে। আদালতে সিপিএমের দাবি ছিল, বিডিও বা এসডিও অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে বেশ কিছু প্রার্থী বাধা পেয়েছিলেন। এর পর তাঁরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত রিটার্নিং অফিসারের কাছে ই-মেলে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। কমিশন তা গ্রহণ না করায় বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের আদালতে মামলা করে সিপিএম। কারণ, ভাঙড়ের একটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ন’জন প্রার্থীর মনোনয়ন হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি তালুকদার। কিন্তু তিনি সিপিএমের মামলায় হস্তক্ষেপ করতে চাননি। সিপিএম তখন বিচারপতি সমাদ্দারের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলা করে।
ডিভিশন বেঞ্চ রায়ে বলেছে, রিটার্নিং অফিসারদের কাছে সশরীরে মনোনয়ন পেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল কি না, তার তদন্ত করতে আদালত চায় না। তবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচন পদ্ধতিতে একাধিক প্রার্থীর অংশগ্রহণ জরুরি। কমিশনের উচিত ভোটারদের সেই সুযোগ দেওয়া। কমিশনের নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও অবাধে কাজ করতে পারা নিয়ে ব্যাপক হারে যখন অভিযোগ উঠছে, তখন তাকে সতর্ক থাকতে হবে। তাই ই-মেলে মনোনয়ন পেশ তাকে গ্রহণ করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy