পঞ্চায়েত ভোটে নিরাপত্তা নিয়ে এ বার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল বিভিন্ন পক্ষ। ভোটকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে একটি মামলার শুনানি হয় শুক্রবার। সেখানে বিচারপতি ভট্টাচার্য মন্তব্য করেন, ভোটে নিরাপত্তার বিষয়টিই শুধু তাঁদের ভাবাচ্ছে। ভোটে নিরাপত্তার কী ব্যবস্থা করা হচ্ছে তা ৪ মে আদালতকে জানাতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি ভট্টাচার্য ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।
এ দিনই সিপিএম এবং পিডিএসের পক্ষ থেকে বিচারপতি সূব্রত তালুকদারের আদালতে বলা হয়, বিরোধী দলগুলির সঙ্গে নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা ছাড়াই ভোটের দিন ঘোষণা করে কমিশন আদালতের নির্দেশ লঙ্ঘন করেছে। আদালত এ নিয়ে মামলা করার অনুমতি দিক। বিচারপতি সেই আর্জি মঞ্জুর করেন।
ভোটকর্মীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত মামলার সওয়ালে ‘সরকারি কর্মচারি পরিষদ’-এর আহ্বায়ক দেবাশিস শীল জানান, ২ লক্ষ ৯২ হাজার সরকারি কর্মীকে ভোটে কাজে লাগানো হবে। মোট বুথের সংখ্যা ৫৮ হাজার ৪৬৭। রাজ্যের হাতে ৪৬ হাজার সশস্ত্র পুলিশ রয়েছে। তাঁর বক্তব্য, বাকি ১২ হাজার বুথে লাঠিধারী পুলিশ থাকবে। সশস্ত্র পুলিশ না থাকলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন ভোটকর্মীরা।
তাঁর আরও বক্তব্য, রাজ্য পুলিশের উপর ভোটকর্মীদের ভরসা নেই। সরকারি কর্মীদের অভিজ্ঞতা বলে পঞ্চায়েত ভোটের দিন বুথে সশস্ত্র পুলিশ খুঁজে পাওয়া যায় না। তিনি আর্জি জানান, গত পঞ্চায়েত ভোটের মতো এ বারেও কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট হোক। প্রতি বুথে কমপক্ষে তিন জন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানকে রাখার নির্দেশ দিক আদালত।
রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) অনুজ শর্মা তখন আদালতকে বলেন, নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা অমূলক। রাজ্যের হাতে পর্যাপ্ত বাহিনী আছে। ভোটকর্মীদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া, নিয়ে আসার জন্য পর্যাপ্ত ‘সেক্টর মোবাইল’ বাহিনীও থাকে। বিচারপতি ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, ‘‘কত বাহিনী রয়েছে, বলুন।’’ কমিশনের সচিব নীলাঞ্জন শাণ্ডিল্য বলেন, পিডিএসের দায়ের করা মামলায় বিচারপতি তালুকদার নির্দেশ দিয়েছেন, ভোটে নিরাপত্তার কী ব্যবস্থা হবে সে ব্যাপারে বিস্তারিত রিপোর্ট এই ডিভিশন বেঞ্চে পেশ করতে হবে। তার আগে সব দলের সঙ্গে নিরাপত্তা নিয়ে অর্থবহ আলোচনা করতে হবে। তা জেনে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘রিপোর্ট কি তৈরি হয়েছে?’’ এর পরেই তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘উই আর কনসার্নড উইথ সিকিওরিটি অ্যারেঞ্জমেন্টস ওনলি।’’
কমিশনের সচিব জানান, নিরাপত্তা নিয়ে কংগ্রেসের অধীররঞ্জন চৌধুরী বিচারপতি ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চেই পৃথক মামলা করেছেন। তার শুনানি ৪ মে। ওই দিনই নিরাপত্তা সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করতে নির্দেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy