Advertisement
১৮ মে ২০২৪
State News

নদী-দূষণ রোধে গাফিলতি কবুল

পশ্চিমবঙ্গে অসংখ্য মানুষ নদনদীর উপরে নির্ভরশীল।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:১৮
Share: Save:

দূষণমাত্রা স্বাভাবিকের নীচে নামেনি ঠিকই। তবে গঙ্গায় গত ছ’বছরে সামগ্রিক ভাবে দূষণের হার কিছুটা কমেছে। কিন্তু নদীমাতৃক বাংলায় বাকি নদনদীর অবস্থা খুবই খারাপ। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য বিশ্লেষণ করে সম্প্রতি এই তথ্য প্রকাশ করেছে একটি পরিবেশপ্রেমী সংস্থা। পরিস্থিতি যে আশাব্যঞ্জক নয়, তা মেনে নিচ্ছেন রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরাও। তাঁদের অনেকের মতে, বহু ক্ষেত্রেই প্রশাসনিক পদক্ষেপে ফাঁক থেকে যাচ্ছে। তারই পরিণামে এই পরিস্থিতি।

পশ্চিমবঙ্গে অসংখ্য মানুষ নদনদীর উপরে নির্ভরশীল। তাঁদের মধ্যে অনেকেই অর্থনৈতিক দিক থেকে দুর্বল শ্রেণিভুক্ত। তাঁদের কেউ মাছ ধরেন, কেউ বা চাষের জলের ক্ষেত্রে নদীর উপরেই নির্ভর করেন। নদীর পরিস্থিতি খারাপ হলে সংশ্লিষ্ট জনজীবনের উপরেও কুপ্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদেরা।

ওই সংগঠনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে গঙ্গায় প্রতি ১০০ মিলিলিটারে কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়ার গড় মাত্রা ছিল সাড়ে ১৬ লক্ষেরও বেশি। ২০১৮ সালে তা নেমে এসেছে সাড়ে সাত লক্ষের নীচে। কিন্তু দক্ষিণেশ্বর ও গার্ডেনরিচে এই ব্যাক্টিরিয়ার মাত্রা কমেনি। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্ধারিত মাত্রা অনুযায়ী স্নানের উপযোগী জলের ক্ষেত্রে প্রতি ১০০ মিলিলিটারে কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়ার মাত্রা ৫০০-র নীচে থাকতে হয়।

আরও পড়ুন: পলাতক দিবাকরকে ছাড়াই প্রশাসনিক-দলীয় বৈঠক

বাংলার অন্যান্য নদনদীর ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও খারাপ বলে ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, দামোদরে বর্ষা এবং হেমন্তেও কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়ার মাত্রা রীতিমতো আতঙ্কজনক। একই অবস্থা বীরভূমের দ্বারকা, উত্তরবঙ্গের মহানন্দা, কালজানিরও। রাজ্যের বিভিন্ন নদীতে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রাও বহু ক্ষেত্রে স্বাভাবিকের থেকে কমছে। পরিবেশবিদেরা জানান, মোট কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়ার অনেকটাই ফিক্যাল কলিফর্ম। অপরিশোধিত নালা এবং মূলত মানুষ ও গবাদি পশুর মল থেকেই ফিক্যাল কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়া জন্মায়। ওই পরিবেশপ্রেমী সংস্থার বিশেষজ্ঞেরাও দেখেছেন, দক্ষিণেশ্বরে এবং গার্ডেনরিচে অপরিশোধিত নালা এসে গঙ্গায় মিশছে। দক্ষিণেশ্বরে তো নিকাশি শোধন কেন্দ্র কাজ করে না। তারাপীঠে বাজারের নিকাশি এসে দ্বারকায় মিশছে। নদী-বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যাক্টিরিয়া এবং অন্যান্য জৈব পদার্থ বাড়লে তা অক্সিজেনের ঘাটতি তৈরি করবে। কলিফর্ম ব্যাক্টিরিয়া থেকে যেমন জলবাহিত নানা রোগ হতে পারে, তেমনই জলে অক্সিজেনের মাত্রা কমলে তা মাছ ও অন্যান্য জলজ জীববৈচিত্রের ক্ষতি করতে পারে।

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কর্তারা বলছেন, গঙ্গা এবং অন্যান্য নদনদীর পাশে জনবসতির চাপ বেড়েছে। তার ফলে নদীতেও দূষণের মাত্রা বেড়েছে। তবে নিকাশি শোধন কেন্দ্র তৈরি এবং তা চালু করার ক্ষেত্রেও যে গড়িমসি রয়েছে, সেটাও মেনে নিচ্ছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

River Pollution Environment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE