রবীন্দ্র সদনে তাপস পালকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। নিজস্ব চিত্র
বাস্তবের মাটিতে রুপোলি পর্দার নায়ক। পিছু পিছু দৌড়চ্ছেন অগণিত ভক্ত। স্রেফ চোখের দেখা দেখতে কাড়াকাড়ি। বুধবার তাপস পালের শেষযাত্রাতেও সেই চেনা ছবিটার ব্যতিক্রম ঘটল না। শুধু যেন বদলে গেল চিত্রনাট্য আর আবহ। প্রিয় নায়ককে এ দিন চোখের জলে বিদায় জানাল বাঙালি।
মফসসল থেকে টলিউড। সেখান থেকে বলিউড ছুঁয়ে আসা। নায়ক হিসাবে একের পর এক মাইলস্টোন পেরিয়ে যাওয়া। সেই বৃত্ত যেন সম্পূর্ণ হল। এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ গল্ফ ক্লাব রোডের বাড়ি থেকে বেরোয় তাপস পালের মরদেহ। সঙ্গে ছিলেন তাপস-জায়া নন্দিনী ও কন্যা সোহিনী। লক্ষ ছিল রবীন্দ্র সদন। সেখানে ‘সাহেব’কে এক ঝলক দেখার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন অসংখ্য ভক্ত ও অনুরাগী। ঘণ্টা দু’য়েকের জন্য রবীন্দ্র সদনে শায়িত ছিল তাঁর দেহ। তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শ্রদ্ধা জানান অন্যান্যরাও। উপস্থিত ছিলেন টালিগঞ্জের শিল্পী, পরিচালক ও কলা-কুশলীরাও। তাঁরাও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন।
এ দিন বেলা ১ টার কিছু পরে রবীন্দ্র সদন থেকে কেওড়াতলা মহাশ্মশানে আনা হয় তাপস পালের দেহ। সেখানে গান স্যালুট দেওয়া হয় তাঁকে। কেওড়াতলাতেও উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ছাড়াও ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাস-সহ অনেকেই। উপস্থিত ছিলেন তাপস পালের সংসদের সতীর্থ সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
নায়কের শেষযাত্রায় অগণিত ভক্ত। নিজস্ব চিত্র
আরও পড়ুন: তাপস পাল রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার, তোপ দাগলেন মমতা
অভিনয় জগৎ থেকে রাজনীতির বৃত্তে আসা। ধীরে ধীরে রাজ্যের শাসকদলের আস্থাভাজন হয়ে ওঠা। এক সময় নানা বিতর্কেও জড়িয়ে পড়েছিলেন তাপস পাল। তাঁকে গ্রেফতারও হতে হয়। এক বছরেরও বেশি সময় জেলবন্দি ছিলেন তাপস। সেই সময় থেকেই অভিনয় জগতের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছিল তাঁর। শেষযাত্রায় সেই দূরত্ব মুছে গেল। এ দিন সেখানে ছিলেন সতীর্থ কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়, অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়, পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী, সোহম, ভরত কল, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অনেকেই।
কেওড়াতলায় উপস্থিত শাসকদলের নেতা-নেত্রীরা। নিজস্ব চিত্র
আরও পড়ুন: কোথায় ছিলেন মমতা, খোঁজ রাখতেন তাপসের? তীব্র আক্রমণে বিজেপি-বাম-কংগ্রেস
কেওড়াতলায় গান স্যালুটের পর কিছুক্ষণের অপেক্ষা। তার পর ধীরে ধীরে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শুরু। এক সময় শেষও হয়ে গেল তা। নায়কোচিত গ্ল্যামার আর বিতর্কের ধূসরতা, এ দিন দুইই মুছে গেল চোখের জলে, বিষাদে। ঠিক যেমন ভাবে ‘দেহ পট সনে নট’ মিলিয়ে যায়, সে ভাবেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy