তখনও অনশনে। মঙ্গলবার দার্জিলিং ম্যালে ভারতী তামাঙ্গ। ছবি: রবিন রাই
মদন তামাঙ্গকে খুনে অভিযুক্ত মোর্চা নেতা বিমল গুরুঙ্গ, আশা গুরুঙ্গ ও রোশন গিরিদের সিবিআই আদৌ গ্রেফতারের চেষ্টা করেছিল কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বিচারপতি অসীম রায় এ দিন জানিয়েছেন, মোর্চা নেতাদের আগাম জামিনের মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত গুরুঙ্গ-সহ ২৩ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা যাবে না।
তবে এ দিন দার্জিলিঙে অনশন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন গোর্খা লিগের নিহত নেতা মদন তামাঙ্গের স্ত্রী ভারতীদেবী। তাঁর যুক্তি, হাইকোর্ট গুরুঙ্গদের আগাম জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেনি। তাই বিচার বিভাগের উপরে আস্থা রেখে অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। রবিবার বিকেল থেকে তিনি গুরুঙ্গদের গ্রেফতারের দাবিতে অনশন শুরু করেছিলেন। তাঁর অনশন তোলা নিয়ে অবশ্য এ দিন এক প্রস্ত নাটক হয়ে যায় দার্জিলিঙে। দুপুরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় অনুগামীদের কয়েকজন তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যান। তাতে তাঁর অনুগামীদের আর একটি অংশ ক্ষোভে ফেটে পড়ে। ফের তাঁকে অ্যাম্বুল্যান্স করে ম্যালের অনশন মঞ্চে ফিরিয়ে আনা হয়। বিকেলে অনশন তোলেন তিনি। পরে তাঁকে দার্জিলিং হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পারিবারিক সূত্রে দাবি, তাঁর অবস্থা এখন স্থিতিশীল।
তবে আগাম জামিন না পেলেও এ দিন কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই-কে যে প্রশ্ন করেছে, তাতে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে মোর্চা শিবিরে। হাইকোর্টে বিচারপতি অসীম রায় সিবিআই-য়ের তদন্তকারী অফিসারের কাছে জানতে চান, দ্বিতীয় দফার চার্জশিটে অথবা তা পেশের সময় তিনি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের প্রয়োজনীয়তার কথা আদালতে জানিয়েছিলেন কি না? বিচারপতি রায় তদন্তকারীকে এ দিন নির্দেশ দিয়েছেন, তদন্তে নেমে তিনি কী ‘তদন্ত’ করেছেন, কী তথ্য-প্রমাণ জোগাড় করেছেন তা বিস্তারিত ভাবে হলফনামা আকারে দু’সপ্তাহের মধ্যে আদালতে জমা দিতে হবে। একই সঙ্গে মামলার সব নথির প্রত্যয়িত কপিও আদালতে জমা দিতে হবে তদন্তকারীদের। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১ জুলাই।
সিবিআইয়ের চার্জশিট পেশের পর থেকে লোকসমক্ষে বিশেষ দেখা যায়নি মোর্চা সভাপতি গুরুঙ্গকে। এ দিন অবশ্য দার্জিলিঙের মহাকাল মন্দিরে পুজো দিয়েছেন তিনি। জিটিএ-এর ভানু ভবনের অফিসেও গিয়েছেন। পরে প্রেস বিবৃতি দিয়ে গুরুঙ্গ বলেছেন, ‘‘আমরা নির্দোষ। বিচারবিভাগের উপরে আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে।’’ বিবৃতিতে তিনি দার্জিলিঙে আগত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘তাঁরা আমাদের উপরে আস্থা রাখছেন বলেই আসছেন। সকলের কাছে পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখার অনুরোধ করছি।’’
ঘটনাচক্রে, এদিনই দার্জিলিঙে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাওয়ার পথে ভারতীদেবীর অনশন প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে শিলিগুড়িতে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিস্তারিত খোঁজ এখনও পাইনি। তবে উনি (ভারতী তামাঙ্গ) সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন, সুন্দর থাকুন। পাহাড় শান্তিতে থাকুক। এটাই চাই।’’
এ দিন শিলিগুড়িতে প্রশাসনিক বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠক সেরে সন্ধ্যেয় দার্জিলিঙে রওনা হয়ে যান। পাহাড়ের কোনও রাজনৈতিক দল তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তিনি অবশ্যই দেখা করবেন বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। পাহাড়ে গিয়ে জিটিএ-এর সঙ্গে আলোচনা হবে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কেউ দেখা করতে চাইলে, উন্নয়ন নিয়ে কথা বলতে চাইলে, কথা হতেই পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy