Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Dattapukur Blast

দত্তপুকুর নিয়ে রাজনীতি তুঙ্গে, এনআইএ তদন্ত চেয়ে শাহকে চিঠি সুকান্তের, সন্দেহ জঙ্গি-যোগের

দত্তপুকুরে বিস্ফোরণের ঘটনায় এনআইএ তদন্তের দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা চিঠি দেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি জানান, যা ঘটেছে, তা রাজ্যের জন্য বিপদসঙ্কেত।

BJP demands NIA investigation In Duttapukur Blast case and writes to Central Home minister Amit Shah

গ্রাফিক: সনত্ সিংহ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৩ ২০:২৫
Share: Save:

উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে বিস্ফোরণের ঘটনায় এনআইএ তদন্ত চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রবিবার পাঠানো চিঠিতে সুকান্তের দাবি, এই বিস্ফোরণকাণ্ডের নেপথ্যে জঙ্গি কার্যকলাপও থাকতে পারে। তাই সেই সব দিক মাথায় রেখে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য এনআইএ-এর হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়ার আর্জি জানান সুকান্ত। একই দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। বস্তুত, রাজ্য বিজেপি এনআইএ তদন্ত চাইছে। অন্য দিকে, দত্তপকুরের ঘটনা নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। তাঁর দাবি, সেই মে মাসে অবৈধ বাজি কারখানা নিয়ে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাতে কাজের কাজ যে কিছুই হয়নি, রবিবারের ঘটনা তারই প্রমাণ। শুভেন্দুর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘কাচের ঘরে বসে ঢিল ছুড়ছেন উনি।’’ এগরাকাণ্ডের কথা তুলে কুণালের অভিযোগ, কেন্দ্র ১০০ দিনের কাজের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় প্রান্তিক মানুষরা এমন সব কাজে যুক্ত হচ্ছেন।

রবিবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ জোরালো শব্দে কেঁপে ওঠে দত্তপুকুরের মোচপোল। বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত সাত জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের সহযোগিতায় এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরেই রমরমিয়ে বাজির কারবার চালানো হচ্ছিল। একাধিক বার অভিযোগ জানিয়েও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এলাকাবাসীর দাবি, জনৈক কেরামত আলি ওই কারখানার মালিক। অন্য দিকে, পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁর ছেলে রবিউল আলির মৃত্যু হয়েছে এই বিস্ফোরণে। মৃতদের তালিকায় রয়েছেন— সামসুল আলি, জাহিদ আলি নামে মুর্শিদাবাদের এক ব্যক্তি ও তাঁর ছেলে।

বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শনের পর রাজ্যের মন্ত্রী রথীন ঘোষ জানান, পুরো ঘটনার পিছনে আইএসএফ নেতৃত্ব রয়েছেন। একই অভিযোগ করেছে তাঁর দল তৃণমূলও। যদিও ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। এই রাজনৈতিক চাপানউতরের মধ্যে বিজেপির দাবি, ঘটনার তদন্তভার নিক এনআইএ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে রাজ্য বিজেপি সভাপতি উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, দত্তপুকুরের ঘটনার গুরুত্ব বিশাল। সেখানে যা ঘটেছে, তা রাজ্যের জন্য একটি বিপদসঙ্কেত। এই অপরাধের তদন্ত নিশ্ছিদ্র ভাবে হওয়া প্রয়োজন।

দত্তপুকুর নিয়ে সমাজমাধ্যমে মমতার সরকারকে কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘এগরাকাণ্ডের পর রাজ্য সরকার জানিয়েছিল তারা আতসবাজি শিল্প নিয়ন্ত্রণ করছে। পরে দাবি করা হয়, অবৈধ কারখানার আর অস্তিত্বই নেই। রাজ্য মন্ত্রিসভা ‘সবুজবাজি’ তৈরির জন্য ক্লাস্টার স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ওটা পুরোটাই ছিল প্রচারের জন্য। কারণ, সে সময় টানটান উত্তেজনা এবং জনমানসে ক্ষোভের পরিস্থিতি ছিল।’’

শুভেন্দুর অভিযোগ, অবৈধ বাজি কারখানা নিয়ে যে কোনও কার্যকরী পদক্ষেপ করেনি রাজ্য, দত্তপুকুরের ঘটনা তার আরও একটা প্রমাণ। এক পা এগিয়ে তিনি এ-ও দাবি করেন যে, এমন বিস্ফোরক উৎপাদনের সঙ্গে তৃণমূল দলের স্বার্থ জড়িয়ে আছে। শুভেন্দুর ওই বার্তার প্রেক্ষিতে পাল্টা কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের কুণাল। তাঁর দাবি, ‘‘এগরায় প্রাণ হারানো মানুষগুলি বিপজ্জনক কাজ বেছে নিয়েছিলেন ১০০ দিনের কাজে সুযোগের অভাবে। কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার ১০০ দিনের কাজের তহবিল আটকে রেখেছে।’’ পাশাপাশি, এগরাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত, মৃত ভানু বাগ শুভেন্দুরই ঘনিষ্ঠ ছিলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। উল্লেখ্য, এগরা বিস্ফোরণের পর এনআইএ তদন্তের দাবি করেছিলেন শুভেন্দু। যদিও শেষ পর্যন্ত হাই কোর্টে সেই মামলা আটকে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dattapukur Blast Amit Shah NIA BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE