বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ফাইল চিত্র।
ফের দলকে অস্বস্তিতে ফেললেন দিলীপ ঘোষ। তৃণমূলকে আক্রমণ করতে গিয়ে তৃণমূলের হাতেই অস্ত্র তুলে দিলেন। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ রবিবার বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের একটি অংশের সঙ্গে ‘সেটিং’ হয়ে গিয়েছিল তৃণমূল নেতাদের। সেটা বুঝতে পেরেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-কে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক।’’ এই খবর কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে জানতে পেরেছেন বলেও দাবি করেছেন দিলীপ। এমন মন্তব্য আবার করেছেন কেন্দ্রীয় সরকারেরই একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে।
সোমবার কলকাতায় কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের একটি অনুষ্ঠান ছিল ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন্স’ (আইসিসিআর)-এর সভাকক্ষে। ‘দেশভাগের আতঙ্ক’ সংক্রান্ত একটি প্রদর্শনী ও আলোচনাসভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে নিজের থেকেই সিবিআই প্রসঙ্গ টেনে আনেন দিলীপ। বলেন, ‘‘সিবিআইয়ের কোনও কোনও আধিকারিক বিক্রি হয়ে যায়। কেউ লাখে, কেউ কোটি কোটিতে।’’ সিবিআই-এর মধ্যে এমনটা যে ঘটেছে সেই ‘ইঙ্গিত পেয়ে’ই রাজ্যে বিভিন্ন মামলার তদন্তে কেন্দ্র ইডিকে তৎপর হতে নির্দেশ দিয়েছে বলে দাবি করেন দিলীপ। একই সঙ্গে দাবি করেন, সিবিআইয়ের মতো ইডির আধিকারিকদের ‘সেটিং’ করা যাচ্ছে না বলেই তৃণমূলের অনেক নেতা আতঙ্কিত।
শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ থেকে কয়লা ও গরুপাচার তদন্তে ইডি বা সিবিআই-এর তৎপরতা নিয়ে বরাবরই ‘দূরত্ব’ রেখেছে রাজ্য বিজেপি। আদালতের নির্দেশেই যে তদন্ত, সেটা বারবার উল্লেখ করেন রাজ্য নেতারা। সেখানে দল ও কেন্দ্রীয় সরকারের কথা উল্লেখ করে দিলীপ দলের ‘অস্বস্তি’ বাড়ালেন বলে মনে করছে গেরুয়া শিবিরের অনেকেই। সেই ‘অস্বস্তি’ আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও। দিলীপের মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষ কি বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকারের দিকেই আঙুল তুললেন? সিবিআই রয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর অধীনে। সেই সিবিআই নিয়ে এমন প্রশ্ন তুলে দেশের অন্যতম প্রধান তদন্তকারী সংস্থা সম্পর্কে খারাপ ধারণা তৈরি করে দিয়েছেন দিলীপ।’’ একই সঙ্গে কুণাল বলেন, ‘‘সিবিআই ‘সেটিং’ করে বলার মাধ্যমে কি দিলীপ দলের ভিতরের কোনও কোনও নেতার দিকে আঙুল তুললেন? তিনি কি বোঝাতে চাইলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে তদন্তের আওতা থেকে বাদ রাখার কথা?’’
আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও বাংলায় বিভিন্ন তদন্তে সিবিআই সক্রিয় নয় বলে অতীতেও প্রশ্ন তুলেছেন দিলীপ। বিজেপির কর্মী, সমর্থক থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যেও ‘সেটিং’ তত্ত্ব নিয়ে নানা অভিযোগ ছিল। সেই আবহেই গত মে মাসে দিলীপ বলেছিলেন, ‘‘তদন্ত নয়, রেজাল্ট চাইছে মানুষ।’’ এ ছাড়াও দলের নীতি বিরোধী বিভিন্ন কথা বলে রাজ্য নেতৃত্বকে অস্বস্তি ফেলার জন্য গত ৩১ মে দিলীপকে ‘সেন্সর’ করে গেরুয়া শিবির। সর্বভারতীয় নেতৃত্ব দিলীপকে মুখ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিছু দিন দিলীপ চুপও ছিলেন। কিন্তু রবিবার যে মন্তব্য করেছেন, তাতে ফের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রুষ্ট হতে পারে বলেই আশঙ্কা গেরুয়া শিবিরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy