Advertisement
০৭ মে ২০২৪
TMC

মঙ্গলকোটের তৃণমূল নেতা খুনে সৌমিত্রর উস্কানি দায়ী, অভিযোগ শাসকদলের

স্থানীয়দের দাবি, বাড়ি ঢোকার মুখে মাটিতে ফেলে লাঠিসোটা দিয়ে সঞ্জিতের উপর চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। এর পর সঞ্জিৎকে বেদম মারধর করে।

সঞ্জিৎ ঘোষের খুনের পর তা নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপি-র তরজা শুরু হয়েছে।

সঞ্জিৎ ঘোষের খুনের পর তা নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপি-র তরজা শুরু হয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মঙ্গলকোট শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২১ ০০:৫১
Share: Save:

দুষ্কৃতীদের হামলার পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হল মঙ্গলকোটের এক তৃণমূল বুধ সভাপতির। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপিআশ্রিত দুষ্কৃতীরাই ওই বুথ সভাপতিকে মারধর করেছে। এবং বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-র উস্কানিমূলক বক্তব্যের জেরেই খুন হয়েছেন তিনি। যদিও শাসক দলের এই অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপি-র পাল্টা দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরেই মারধর করে খুন করা হয়েছে ওই নেতাকে।

পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম সঞ্জিৎ ঘোষ (৩৫)। পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের নিগন গ্রামের ১৯৭ নম্বর তৃণমূলের বুথ সভাপতি সঞ্জিৎ মঙ্গলবার দুপুরে দলীয় কার্যালয় থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। নিগন গ্রামে বাড়ি ঢোকার মুখে তাঁর উপর হামলা চালায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা।

স্থানীয়দের দাবি, বাড়ি ঢোকার মুখে মাটিতে ফেলে লাঠিসোটা দিয়ে সঞ্জিতের উপর চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। এর পর সঞ্জিৎকে বেদম মারধর করে। তাঁর গাড়িতেও ভাঙচুর করে দুষ্কৃতীরা। গুরুতর আহত সঞ্জিৎকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তবে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সন্ধ্যায় সেখান থেকে তাঁকে রেফার বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় সঞ্জিতের। সঞ্জিৎ ছাড়াও দুষ্কৃতীদের হামলার মুখে পড়েছিলেন মঙ্গলকোটের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি ইব্রাহিম শেখ। তবে হেলমেট পরে থাকায় ইব্রাহিমের চোট সে রকম গুরুতর নয়।

দুষ্কৃতীদের হামলায় গুরুতর আহত হন সঞ্জিৎ।

দুষ্কৃতীদের হামলায় গুরুতর আহত হন সঞ্জিৎ। —নিজস্ব চিত্র।

মঙ্গলবার মৃতের স্ত্রী আশালতা ঘোষ বলেন, ‘‘দুপুরে মারধরের খবর পেয়ে আমি কাটোয়া হাসপাতালে যাই। ওঁর (সঞ্জিৎ) সারা শরীরে আঘাত করা হয়েছে।’’

সঞ্জিতের খুনের পরই তা নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপি-র তরজা শুরু হয়েছে। এই খুনের জন্য বিজেপি-ই দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব তথা সঞ্জিতের পরিবারের সদস্যরা। অন্য দিকে, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই এই ঘটনায় দায়ী বলে পাল্টা দাবি বিজেপি-র।

সোমবার নিগন গ্রামে সভা করেছিল বিজেপি। ওই সভায় মূল বক্তা ছিলেন বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি তথাবিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। তৃণমূলের অভিযোগ, ওই সভা থেকে সৌমিত্রের উস্কানিমূলক বক্তব্যের জেরেই সঞ্জিৎকে বেধড়ক মারধর করে বিজেপিআশ্রিত দুষ্কৃতীরা। জেলা সভাধিপতি তথা তৃণমূল নেত্রী শম্পা ধারার অভিযোগ, ‘‘মানুষের জীবন নিয়ে রাজনীতি করছে বিজেপি। উস্কানি এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’’ তাঁর আশ্বাস, ‘‘দল সঞ্জিতের পরিবারের পাশে থাকবে।’’ স্থানীয় তৃণমূল কর্মী আব্বাস আহমেহের দাবি, ‘‘সোমবার বিজেপি-র সভা থেকে উস্কানি দেওয়া হয়েছিল। সৌমিত্র খাঁ-র উত্তেজক মন্তব্যের জেরেই এমনটা ঘটেছে।’’ তৃণমূলের আর এক কর্মী রাণা চক্রবর্তী দাবি, ‘‘সঞ্জিৎ ঘোষ ভাল কর্মী ছিলেন। সৌমিত্র খাঁ-র বক্তব্যের জেরে দুষ্কৃতীদের দিয়ে পরিকল্পিত ভাবেই তাঁকে মারধর করা হয়েছে। আমরা বদলার রাজনীতি করি না।’’ তবে তৃণমূলের অভিযোগ নস্যাৎ করেছে বিজেপি। দলের কাটোয়া-কালনা সাংগঠনিক জেলা সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, ‘‘এর সঙ্গে বিজেপি-র কোনও যোগ নেই। এটা পুরোপুরি তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীকোন্দল। আর তার জেরেই মারামারি এবং খুন করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC Murder Mangalkot
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE