কর্মসূচিতে শুভেন্দু, সুকান্ত এবং দিলীপ ৩ মুখকেই কাজে লাগাতে চায় বিজেপি।। ফাইল চিত্র।
তৃতীয়বার দিল্লির মসনদ দখল করতে মরিয়া বিজেপি। সেই লক্ষ্যে গোটা দেশ জুড়েই জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। লোকসভা নির্বাচনের আগে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে বাংলাতেও বড় কর্মসূচি নিল রাজ্য বিজেপি। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে তা শুরু হতে পারে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে। চলবে মাসখানেক ধরে। বিজেপি সূত্রে খবর, গোটা রাজ্যে অন্তত ১ হাজারটি জনসভা করার পরিকল্পনা নিয়েছে দল। আর এই কর্মসূচির জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে কাজে লাগানো হচ্ছে রাজ্যের দলের ৩ গুরুত্বপূর্ণ মুখ— বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা বর্তমানে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষকে।
গত বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে প্রচার করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে সারা রাজ্য ঘুরছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার বিজেপিও তাদের অন্তত ১ হাজার মণ্ডলে জনসভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজ্যের প্রতিটি বিধানসভায় ৩-৪টি করে বিজেপির মণ্ডল রয়েছে। তার নিরিখে ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্র ধরে রাজ্যে ১২০০-র কিছু বেশি মণ্ডল রয়েছে বিজেপির। দলীয় সূত্রে খবর, যাতে রাজ্যের কোণায় কোণায় পৌঁছে যাওয়া যায়, তা নজরে রেখে ১ হাজারটি মণ্ডল বেছে নেওয়া হবে। তবে এ ক্ষেত্রে শাসক তৃণমূলের মতো কোনও একটি ‘মুখের’ উপর ভরসা রাখা হচ্ছে না। এখনও পর্যন্ত যা স্থির হয়েছে, তাতে শুভেন্দু, সুকান্ত এবং দিলীপ ৩ জনেরই ১০০টি করে জনসভা করার কথা। বাকি ৭০০টি সভা করবেন দলের সাংসদ এবং অন্যান্য নেতারা।
দলীয় সূত্রের বক্তব্য, সাম্প্রতিক কালে বিজেপির সব চেয়ে বড় কর্মসূচি ছিল গত বছর সেপ্টেম্বরের নবান্ন অভিযান। সেই কর্মসূচিতে শুভেন্দু, সুকান্ত এবং দিলীপ ৩ মুখকেই কাজে লাগিয়েছিল দল। এ বার একই ভাবে এই ৩ মুখকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে কাজে লাগানোর কথা ভাবা হয়েছে। এক রাজ্য নেতা বলেন, ‘‘নবান্নে অভিযানে শুভেন্দু’দা, সুকান্ত’দা এবং দিলীপ’দা ৩ জনে ৩ দিক দিয়ে মিছিল করে গোটা রাজ্য প্রশাসনকে নাস্তানাবুদ করে দিয়েছিলেন। এই ৩ জন একসঙ্গে মাঠে নামলে দলের কর্মী-সমর্থকদেরও মনোবল বাড়বে। তাঁরা একজোট হবেন। যা দিয়ে তৃণমূলকে বড় ধাক্কা দেওয়া যাবে পঞ্চায়েত এবং লোকসভা নির্বাচনের আগে।’’
সম্প্রতি রাজ্য সফরে এসে বিভিন্ন জনসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের লক্ষ্য আসলে লোকসভা নির্বাচন। দলীয় সূত্রেও জানা গিয়েছে, রাজ্য বিজেপিকে ইতিমধ্যেই ৩৫ আসনে জেতার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিজেপির এই অভিযান যে হেতু পঞ্চায়েত ভোটের মুখেই হচ্ছে, তাই সেটি পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারেরও অঙ্গ হয়ে উঠবে। তবে মূল লক্ষ্য থাকবে লোকসভাই। তা নজরে রেখেই গত ৯ বছরে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাজের খতিয়ান তুলে ধরা হবে। পশ্চিমবঙ্গে কোন প্রকল্পনের জন্য কত টাকা এসেছে, রেলের জন্য কী কী কাজ হয়েছে, জিএসটি বাবদ রাজ্য কত পেয়েছে— এই সমস্ত তথ্যই তুলে ধরা হবে জনসভায়। বিজেপি সূত্রে খবর, এই কর্মসূচি শীঘ্রই আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করা হবে। কোন নেতা, কবে কোথা থেকে জনসভা শুরু করবেন, তা দু’-এক দিনের মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy