Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Andal

Burglary: মাঝরাতে বাড়িতে ঢুকে চোর বলল, ‘খিদে পেয়েছে’! ফ্রিজ খুলে রসগোল্লা খেয়ে লুঠ তৃণমূল নেতার বাড়িতে

খোদ শাসক দলের ব্লক সভাপতির বাড়িতে শেষ রাতে আচমকা উদয় হয়েছিল জনা ছয়েক লোক। ঘরে ঢুকেই হিন্দিতে তারা জানায়, খুব খিদে পেয়েছে।

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
অন্ডাল শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২২ ০৭:০৬
Share: Save:

খোদ শাসক দলের ব্লক সভাপতির বাড়িতে শেষ রাতে আচমকা উদয় হয়েছিল জনা ছয়েক লোক। ঘরে ঢুকেই হিন্দিতে তারা জানায়, খিদে পেয়েছে, খাবার চাই। ঘুম ভেঙে এমন কাণ্ডে হতভম্ব বাড়ির সদস্যদের ভরসায় না থেকে, নিজেরা খুলে ফেলে রেফ্রিজ়ারেটর। টপাটপ রসগোল্লা সাবাড় করে, শেষ করে দেয় ঠান্ডা পানীয়ের বোতলও। এর পরে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে লুঠ করে টাকা, গয়না। শনিবার রাতে পশ্চিম বর্ধমানের অন্ডালে তাঁদের বাড়িতে ডাকাতি সেরে দুষ্কৃতীরা পালায় বলে অভিযোগ তৃণমূল নেতা সুকুমার ভট্টাচার্যের।

ইসিএলের কর্মী সুকুমার অন্ডালে সংস্থার ছোড়া রিজিয়নাল হাসপাতালের কর্মী আবাসনে থাকেন। তিনি তৃণমূলের জামুড়িয়া-২ ব্লক সভাপতি। সুকুমার জানান, শনিবার তাঁদের আদি বাড়ি জামুড়িয়ার কেন্দা গ্রামে গিয়েছিলেন তিনি। আবাসনে ছিলেন স্ত্রী শ্রাবণী ও ছেলে অনীক।

একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া অনীকের অভিযোগ, রাত পৌনে ৩টে নাগাদ মাফলারে মুখ ঢাকা ছ’জন বাড়িতে ঢোকে। চার জনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল। তার কথায়, “ঘরে ঢুকেই ওরা বাবা কোথায় জানতে চায়। তার পরেই এক জন খাবার চায়।” সে জানায়, এরই মধ্যে রেফ্রিজ়ারেটরে নজর পড়তেই, ওই দলটির এক জন সটান তা খুলে রসগোল্লার পাত্র বার করে আনে। মাফলার সামান্য সরিয়ে তারা কেউ একটি, কেউ বা দু’টি রসগোল্লা মুখে চালান করতে থাকে। আটটি রসগোল্লা শেষ করে, দু’টি বাকি রেখে পাত্রটি নির্দিষ্ট জায়গায় রেখেও দেয় তারা। এর পরে, এক লিটারের ঠান্ডা পানীয়ের একটি বোতল ভাগ করে খায়। গোটা সময়ে তাঁদের সামনেই বসিয়ে রাখা হয় বলে জানান শ্রাবণী ও অনীক।

এই জানলা দিয়েই ঘরে ঢোকে দুষ্কৃতীরা। নিজস্ব চিত্র

এই জানলা দিয়েই ঘরে ঢোকে দুষ্কৃতীরা। নিজস্ব চিত্র

শ্রাবণী অভিযোগ করেন, খাওয়া সেরেই স্বমূর্তি ধরে দুষ্কৃতীরা। ছেলের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ধরে টাকাকড়ি-গয়না কোথায় আছে জানতে চায় তারা। শ্রাবণীর কথায়, “ভয়ে পেয়ে অনীকই ওদের হাতে আলমারির চাবি দেয়। আমাদের একটি ঘরে ঢুকিয়ে দু’জন পাহারা দিচ্ছিল। বাকিরা সব তোলপাড় করে গয়না, টাকা নিয়ে নেয়। তার পরে আবাসনের পিছনের দিকের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়।”

সুকুমার বলেন, “দুষ্কৃতীরা বাড়ি ছাড়ার পরে, স্ত্রী ফোনে আমাকে বিষয়টি জানান। রবিবার আমি অন্ডালের বনবহাল ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ করেছি। কারও এত সাহস হবে, ভাবতে পারিনি!” এক পুলিশকর্মী বলেন, “ডাকাতি করতে এসে মিষ্টি, ঠান্ডা পানীয় খাওয়া— এমন ঘটনা শুনিনি!” পুলিশ জানায়, আবাসনের শৌচাগারের জানলার গ্রিল কেটে দুষ্কৃতীরা ঘরে ঢুকেছিল।

ঘটনা জানাজানি হতেই সরব হয়েছেন বিরোধীরা। বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, “শাসক দলের ব্লক সভাপতির বাড়িতেই যদি এ ভাবে ডাকাতি হয়, তা হলে এলাকার আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি কতটা খারাপ, তা বোঝাই যাচ্ছে।” আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (পূর্ব) তাহিদ আনোয়ার বলেন, “তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের শীঘ্র ধরা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Andal Burglary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE