অপরাধের জন্য নয়, নাবালিকাকে আদর করছিলেন বলে কলকাতা হাই কোর্টে দাবি আবেদনকারীর। প্রতীকী ছবি।
নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস খুলে জোর করে কোনও নাবালিকাকে শোয়ানোও ধর্ষণের সমতুল। সম্প্রতি এমনই রায়দান করল কলকাতা হাই কোর্ট। এ ক্ষেত্রে ‘শারীরিক’ ভাবে নাবালিকাকে ধর্ষণ করা না হলেও তা ওই অপরাধের শামিল বলে মনে করে আদালত।
দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট জেলা ও দায়রা আদালতের রায়ে নাবালিকার বিরুদ্ধে যৌন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন রবি রায় নামে এক ব্যক্তি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ২০০৭ সালের ৭ মে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ এক নাবালিকাকে আইসক্রিমের লোভ দেখিয়ে বাড়ির পাশে একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে যান রবি। এর পর নাবালিকার নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস খোলার কথা বলেন। তাতে রাজি ছিল না নাবালিকা। এর পর তিনি নিজেই সেটি খুলে তাকে জোর করে শুইয়ে দেন। ভয় পেয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করলে ঘটনাস্থলে চলে আসেন আশপাশের লোকজন। মারধরের পর রবিকে পুলিশের হাতে তুলে দেন তাঁরা। ওই মামলায় ২০০৮ সালের নভেম্বরে রবির ৬ মাসের সশ্রম কারাবাস-সহ সাড়ে ৫ বছরের জেলের সাজা হয়েছিল। পাশাপাশি, ৩,০০০ টাকা জরিমানা হয়েছিল তাঁর।
প্রায় পনেরো বছর আগেকার নিম্ন আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাই কোর্টে দ্বারস্থ হয়েছিলেন রবি। তাঁকে মারধরের সময় ‘অপরাধ’ স্বীকার করলেও হাই কোর্টের কাছে আবেদনে রবির দাবি ছিল, অপরাধের জন্য নয়, নাবালিকাকে আদর করছিলেন তিনি। সে জন্যই তাকে শুইয়ে দিয়েছিলেন। রবিবার আবেদনের শুনানির পর ৩ ফেব্রুয়ারি রায়দান করেছেন হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘‘যৌন ইচ্ছা মেটানো ছাড়া নাবালিকাকে আইসক্রিম দেওয়ার কোনও কারণ ছিল না আবেদনকারীর। এর প্রস্তুতি হিসাবে নির্যাতিতাকে একটি আইসক্রিম দিয়ে প্রলোভন দেখান তিনি এবং তার পর তাকে নির্জন স্থানে নিয়ে যান। এর পর নির্যাতিতাকে তার প্যান্ট খোলার কথা বলেন। তাতে রাজি না হলে নাবালিকার প্যান্ট খুলে ফেলেন। এটি ধর্ষণের মতো অপরাধের চেষ্টা করাই বোঝায়।’’
ওই নাবালিকার মেডিক্যাল পরীক্ষায় শারীরিক ভাবে আঘাতের চিহ্ন বা যৌন অত্যাচারের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। যদিও আদালতের পর্যবেক্ষণ, তা সত্ত্বেও ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় এই অপরাধ ধর্ষণের মতো যৌন অত্যাচারের শামিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy