কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
যোগেশচন্দ্র চৌধুরী ল কলেজের ছাত্র দানিশ ফারুককে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনিই কলেজের অধ্যক্ষ এবং অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। যে মামলার প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষের অপসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই নির্দেশ অবশ্য ডিভিশন বেঞ্চে গিয়ে খারিজ হয়ে গিয়েছে।
যোগেশচন্দ্র ল কলেজের ছাত্র তথা মামলাকারী ফারুকের বিরুদ্ধে কলেজে বেআইনি ভাবে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, তিনি কলেজে অনুষ্ঠান করার নাম করে ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা তুলেছেন। বিচারপতির প্রশ্নের মুখে সে কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন তিনি। মামলাকারী ছাত্রের উদ্দেশে বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘আপনি যে কলেজের নাম করে টাকা তুলেছেন তার কোনও লিখিত অনুমোদন রয়েছে? কে টাকা তুলতে বলেছেন? আপনি কি দালাল? প্রত্যেক কলেজে এমন হয়। কেন হবে এটা?’’
বিচারপতি আরও বলেন, ‘‘টাকা তোলার পরেও এই আদালতে কী ভাবে এলেন? যাঁদের অপরাধের মানসিকতা আছে, তাঁদের এই আদালতে আসার প্রয়োজন নেই।’’
ছাত্রের করা মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে তাঁকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। চারু মার্কেট থানার পুলিশকে বিচারপতি ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন। তদন্তের মাধ্যমে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে হবে পুলিশকে।
মামলাকারী ছাত্র যোগেশচন্দ্র ল কলেজের অধ্যক্ষ সুনন্দা ভট্টাচার্য গোয়েন্কা এবং অধ্যাপিকা অচিনা কুন্ডুর নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলা করেছিলেন হাই কোর্টে। অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কলেজের অধ্যাপক এবং অধ্যক্ষদের যে যোগ্যতামান স্থির করে দেয়, সেই নিয়ম মেনে অধ্যক্ষ এবং অধ্যাপিকার নিয়োগ হয়নি। কলেজের প্রাক্তন ছাত্রদের বিরুদ্ধে হুমকি আর দাদাগিরির অভিযোগও করা হয়েছিল ওই মামলায়।
মামলার শুনানিতে অধ্যক্ষ এবং ওই অধ্যাপিকার অপসারণের নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি জানান, ওই দু’জন যদি তাঁদের যোগ্যতা সম্পর্কে আদালতকে সন্তুষ্ট করতে পারেন, তা হলে তাঁদের পদে পুনর্বহাল করা হবে। তত দিন পর্যন্ত অধ্যক্ষের ঘরে তালা মারার নির্দেশও দিয়েছিলেন বিচারপতি।
সেই মামলা বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে খারিজ হয়ে গিয়েছে। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, শুধুমাত্র মোবাইলে কথা বলে অধ্যক্ষকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত না করলেই পারত একক বেঞ্চ। তবে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, এই মামলার পরবর্তী শুনানি করতে পারবেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। একক বেঞ্চে নিজের যোগ্যতার সপক্ষে বক্তব্য জানিয়ে হলফনামা দিতে হবে অধ্যক্ষকে। অর্থাৎ, যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে।
সুনন্দার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। নথি জাল করে কলেজের শিক্ষক পদে যোগ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, গত পাঁচ বছরে কলকাতা পুলিশের অ্যান্টি ফ্রড সেকশন ওই তদন্তে ব্যর্থ হয়েছে। তাই সিআইডি এ বার তদন্ত করে দেখবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy