Advertisement
১১ জুন ২০২৪
TMC leader detained

বাঁকুড়ার তৃণমূল নেতাকে আটক করে কলকাতায় নিয়ে গেল বৌবাজার থানার পুলিশ! কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা

তৃণমূলের দীর্ঘ দিনের কর্মী হিসাবে পরিচিত অনিরুদ্ধ ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সিমলাপাল পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ রয়েছে, তা নিয়ে ধন্দে রয়েছে তাঁর পরিবারও।

—প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ২২:৫৬
Share: Save:

বাঁকুড়ার সিমলাপাল থানার আঁকড় গ্রাম থেকে এক তৃণমূল নেতাকে আটক করে নিয়ে গেল কলকাতা পুলিশ। জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার অনিরুদ্ধ সৎপতি নামের ওই তৃণমূল নেতাকে আটক করে কলকাতায় নিয়ে যান বৌবাজার থানার পুলিশ আধিকারিকেরা। তৃণমূলের দীর্ঘ দিনের কর্মী হিসাবে পরিচিত অনিরুদ্ধ ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সিমলাপাল পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ রয়েছে, তা নিয়ে ধন্দে রয়েছে তাঁর পরিবারও।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিমলাপাল ব্লকের আঁকড় গ্রামে পুরনো তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত অনিরুদ্ধ। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত সমিতির আসনে জিতে শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ হন তিনি। স্থানীয়দের দাবি, সম্প্রতি অনিরুদ্ধ সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে সে ভাবে যুক্ত ছিলেন না। স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, চাষাবাদ করেই তাঁর সংসার চলে। আগের থেকে ওই তৃণমূল নেতার পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা কিছুটা হলেও খারাপ হয়েছে বলেও জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তার পরেও কেন তাঁকে এ ভাবে আটক করে নিয়ে গেল বৌবাজার থানার পুলিশ, তা নিয়ে ধন্দ তৈরি হয়েছে গ্রামবাসীদের মধ্যে। সূত্রের খবর, বৌবাজার থানায় অনিরুদ্ধের বিরুদ্ধে ১২০বি, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮ ও ৪৭১ নম্বর ধারায় মামলা রুজু হয়। সেই মামলার ঘটনাতেই বৌবাজার থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে।

অনিরুদ্ধের স্ত্রী সাগরিকা সৎপতি বলেন, ‘‘আমি কিছুই জানি না। আমার স্বামী অত্যন্ত সৎ। চাষাবাদ করে আমাদের সংসার চলে। আজ সকালে হঠাৎই আমাদের ঘরে কলকাতা পুলিশের দল আসে। তার পর তাঁকে তুলে সিমলাপাল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে কলকাতায় নিয়ে যান পুলিশ আধিকারিকেরা। আমার স্বামীর বিরুদ্ধে যে সমস্ত ধারা দেওয়া হয়েছে, তার সবই মিথ্যা। মিথ্যা মামলায় আমার স্বামীকে ফাঁসানো হয়েছে।’’ স্থানীয় বাসিন্দা অশ্বিনীকুমার সৎপতি বলেন, ‘‘অনিরুদ্ধ সৎপতি কী অপরাধ করেছেন, তা আমরা জানি না। আজ সকালে পুলিশ এসে তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। আগে তিনি তৃণমূল করলেও বর্তমানে তিনি রাজনীতি করতেন না। তিনি কোনও অপরাধ করে থাকতে পারেন, তাও বিশ্বাসযোগ্য নয়।’’

তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক তথা সিমলাপাল এলাকার নেতা রামানুজ সিংহ মহাপাত্র বলেন, ‘‘অনিরুদ্ধ সৎপতিকে কলকাতা পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু কী কারণে তাঁকে নিয়ে গিয়েছে, সে ব্যাপারে আমরা সম্পূর্ণ অন্ধকারে। অনিরুদ্ধের সঙ্গে আমি দীর্ঘ দিন রাজনীতি করেছি। তিনি কোনও দুর্নীতি করতে পারেন, তা আমাদের বিশ্বাস হয় না। কোনও দিন সেই ধরনের কোনও অভিযোগও আমরা পাইনি।’’ বিজেপির তালড্যাংরা মণ্ডল ৩-এর সভাপতি আলোক মহান্তি বলেন, ‘‘অনিরুদ্ধ সৎপতি হয়তো শিক্ষা দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। তিনি ইডি, সিবিআই এর হাতে পড়ে গেলে তৃণমূলের অনেক নেতা মন্ত্রীর মুখোশ খুলে যেতে পারত। তাই হয়তো রাজ্যের পুলিশ তাঁকে আগেভাগে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছে।’’

বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারি বলেন, ‘‘অনিরুদ্ধ সৎপতিকে গ্রেফতারের জন্য কলকাতা পুলিশের তরফে আমাদের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। আমরা সেই সাহায্য করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tmc Leader
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE