দার্জিলিঙের ভানু ভবনে হামলা এবং চকবাজারে পুলিশের দুই অফিসে আগুন-ভাঙচুরের ঘটনায় মোর্চার নেতা সমর্থকদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দিল সিআইডি। দু’টি ঘটনাতেই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার পলাতক নেতা বিমল গুরুং, তাঁর স্ত্রী আশা গুরুং এবং রোশন গিরি-সহ একাধিক নেতার নাম চার্জশিটে রয়েছে। খুনের চেষ্টা, দাঙ্গা বাধানো, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, সরকারি কর্মীদের কাজে বাধা দান-সহ একাধিক ধারায় তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে ওই দুই মামলা থেকে রেহাই দেওয়াছে তৎকালীন মোর্চা নেতা বিনয় তামাংকে। বর্তমানে জিটিএ চেয়ারম্যান তিনি। গোয়েন্দাদের দাবি, দার্জিলিঙের ভানু ভবনে হামলার দিন অর্থাৎ ৮ জুন ২০১৭, ঘটনার সময়ে বিনয় মিরিকে ছিলেন। চকবাজারের ঘটনার সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগের প্রমাণ মেলেনি।
সিআইডি সূত্রের খবর, ভানু ভবনে হামলার ঘটনার চার্জশিটে মোট ৭২ জনের নাম রয়েছে। এর মধ্যে ১২ জনকে গ্রেফতার হয়েছেন। বাকিদের পলাতক দেখানো হয়েছে। চার্জশিটে সিআইডির দাবি, পুরো ঘটনাটাই পরিকল্পনামাফিক করা হয়েছিল। এ নিয়ে মোর্চা নেতারা একাধিক বৈঠক করেছিলেন।
সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী জোর করে বাংলা ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে এবং পাহাড়ের স্কুলে বাংলা পড়ানোর বিরোধিতা করে হাজার দুয়েক মোর্চা সমর্থক ভানু ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ওই দিন দার্জিলিঙের রাজভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। মোর্চার সমর্থকরা পরিকল্পনা মতো রাজভবনের দিকে যেতে শুরু করেন। পুলিশ বাধা দিলে তাদের দিকে প্রথমে ইট ছোড়া হয়। ভাঙচুর হয় পুলিশের গাড়ি। জখম হন বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী।
সিআইডির এক তদন্তকারী অফিসার এ দিন বলেন, ‘‘গত বুধবার ওই মামলায় চার্জশিট জমা পড়েছে। তবে এফআইআর-এ অস্ত্র আইন বা বিস্ফোরক আইনের কথা বলা হলেও তার প্রমাণ না-মেলায় চার্জশিট থেকে তা বাদ দেওয়া হয়েছে।’’
ভানু ভবনের ঘটনার এক মাস পরে ২০১৭ সালের ৮ জুলাই সোনাদাতে পুলিশের গুলিতে জিএনএলএফ কর্মী তাশি ভুটিয়ার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ওই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দার্জিলিঙের চকবাজার। ৩ মোর্চা সমর্থকের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় দু’টি মামলা দায়ের করা হয়। একটি পুলিশের গুলিতে তিন জনের মৃত্যু। অপরটি পুলিশ কর্মীদের মারধর, অগ্নিসংযোগ, খুনের চেষ্টা, দাঙ্গা বাধানো-সহ একাধিক ধারায়।
ওই মামলায় শনিবার ৪৪ জনের নামে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এঁদের মধ্যে ২৬ জনকে ঘটনার পরেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। চার্জশিটে বিমল গুরুং এবং রোশন গিরিকে মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মোর্চা সমর্থকেরা চকবাজারে পুলিশের ডিএসপি (সদর)-এর অফিস ভাঙচুর করেন। পুড়িয়ে দেওয়া হয় মহিলা থানা এবং ট্র্যাফিক পুলিশের একটি বুথ। ভাঙচুর করে আগুন লাগানো হয় পুলিশের গাড়িতে। পুলিশ অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি চালায়।
মোর্চার বিরুদ্ধে মোট চারটি মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সিআইডি-কে। বাকি দু’টি ঘটনা পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর। সিআইডি আধিকারিকেরা জানান, ওই দু’টি তদন্তও প্রায় শেষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy