মঞ্জুলা চেল্লুর
বিরোধীরা রাজ্যে শিল্পের পরিবেশ, পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছে আগেই। ভিন্ রাজ্য বা এ রাজ্যের শিল্পপতিরাও এখানকার শিল্পের পরিবেশ নিয়ে এখনও পর্যন্ত আশার কোনও আলো দেখতে পাননি বলে ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন। এ বার এ বিষয়েই সমালোচনায় মুখর হলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর। মঙ্গলবার একটি মামলার শুনানি শেষে এজলাসে বসেই সেই সমালোচনা করেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি এ দিন মন্তব্য করেন, ‘‘তেলেঙ্গানায় কেউ বিনিয়োগ করতে গেলে, মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিমানবন্দরে পৌঁছে বিনিয়োগকারীকে রীতিমতো এসকর্ট করে নিয়ে যাওয়া হয়। একটি মাত্র দরখাস্ত করতে হয় বিনিয়োগকারীকে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সবটা দেখেন। ২১ দিনের মধ্যে কাজ হয়ে যায়। কারও কাজ আগে, কারও কাজ পরে এমন হয় না।’’
বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থা এমপিএস-এর আমানতকারীদের টাকা ফেরত সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলার শুনানি ছিল এ দিন। ওই সংস্থার সব আমানতকারী যাতে দ্রুত টাকা ফেরত পান, প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সেই ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে।
এ দিন এমপিএসের আইনজীবী কিশোর দত্ত মামলার শুনানিতে ডিভিশন বেঞ্চের কাছে জানান, তাঁর মক্কেল ছ’দফায় দু’বছরের মধ্যে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে চান। তাঁদের সম্পত্তির মূল্য ২ হাজার ৯০০ কোটি টাকার বেশি। বাজারে দেনার পরিমাণ ১ হাজার ৫২০ কোটি টাকা। ক’দফায়, কী ভাবে টাকা ফেরত দিতে চায় ওই সংস্থা তা প্রস্তাব আকারে আদালতে পেশ করে কিশোরবাবু আদালতে অনুরোধ করেন, বিদেশি লগ্নিকারীরা ওই সংস্থায় বিনিয়োগ করতে পারবে, এমন নির্দেশ আদালত দিলে আমানতকারীদের দ্রুত টাকা ফেরত দিতে আরও সুবিধা হবে। তাঁর মক্কেলের সংস্থার অনেক জমি রয়েছে। কোনও লগ্নিকারী সেই জমি কিনতে পারে। জমি বিক্রি করেও আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া যায়। আদালত তার ব্যবস্থা করে দিক।
এমপিএসের-ই অন্য একটি সংস্থার আইনজীবী জয়দীপ কর আদালতে জানান, আমানতকারীদের টাকা ফেরতের ব্যাপারে সেবি (সিকিওরিটি এক্সচে়ঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া) সম্পত্তির মূল্য নির্ধারক কোনও সংস্থাকে দিয়ে এমপিএসের সম্পত্তি যাচাই করুক।
সেবি-র আইনজীবী আদালতে জানান, অন্য একটি অর্থ লগ্নি সংস্থার আমানতকারীদের টাকা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি নাদিরা পাথেরিয়া। কিন্তু আদালতের নির্দেশে সেই অর্থ লগ্নি সংস্থার জমিজায়গা বিক্রি করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, কেউ সেই জমি কিনতে এগিয়ে আসছেন না। প্রায় সব জমি আইনি জটিলতায় বাঁধা।
আইনজীবী কিশোরবাবুর অনুরোধ মানেননি প্রধান বিচারপতি ম়ঞ্জুলা চেল্লুর এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘এই পরিবেশে এখানে কোটি কোটি টাকা কে বিনিযোগ করবে। কেরল, কর্নাটক থেকেও কেউ আসবে না। কারণ, আমি জানি। মানসিকতা...।’’ পরে প্রধান বিচারপতি জানান, আমানতকারীদের টাকা দু’বছরের মধ্য নয়, যত শীঘ্র সম্ভব ফেরত দিতে হবে। কারও মেয়ের বিয়ে রয়েছে। কারও চিকিৎসার প্রয়োজন। টাকা দ্রুত ফেরতের ব্যবস্থা করাই আদালতের কাজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy