Advertisement
১৯ মে ২০২৪

দুষ্কৃতী ধরতে অভিযান, রণক্ষেত্র চুঁচুড়া

চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ন কবীর বলেন, ‘‘তল্লাশি চালিয়ে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। একটি ল্যাপটপ, নগদ টাকা-সহ বেশ কিছু জিনিস টোটোনের বাড়িতে মিলেছে। দুই দুষ্কৃতীর খোঁজ চলছে।’’

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ। রবীন্দ্রনগরে। ছবি: তাপস ঘোষ

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ। রবীন্দ্রনগরে। ছবি: তাপস ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৯ ০৬:২৪
Share: Save:

দুই দুষ্কৃতীকে ধরতে অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। দু’পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময় হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। তাতে কেউ হতাহত না-হলেও এই ঘটনাকে ঘিরে শুক্রবার গভীর রাত থেকে তেতে উঠল হুগলির জেলাসদর চুঁচুড়া। পুলিশের ‘গুলি চালনা’র প্রতিবাদে শনিবার সকালে অবরোধ হয়। তার সঙ্গেই আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দুষ্কৃতীদের দাপাদাপি, ট্রেনযাত্রীদের ভয় দেখানো, পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ— কিছুই বাদ গেল না। অবরোধকারীদের ছোড়া ইটে মাথা ফাটে এক পুলিশকর্মীর। শেষে দুপুরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে অবরোধকারীদের হটিয়ে দেয়। তবে যে দুই দুষ্কৃতীকে ধরতে পুলিশের ওই অভিযান, সেই টোটন বিশ্বাস এবং তার শাগরেদ নেপার নাগাল মেলেনি।

অভিযানে গিয়ে গুলি চালানোর কথা পুলিশ মানেনি। পুলিশের দাবি, দুষ্কৃতীরাই গুলি চালিয়েছিল। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ন কবীর বলেন, ‘‘তল্লাশি চালিয়ে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। একটি ল্যাপটপ, নগদ টাকা-সহ বেশ কিছু জিনিস টোটোনের বাড়িতে মিলেছে। দুই দুষ্কৃতীর খোঁজ চলছে।’’

লোকসভা ভোটের পর থেকে চুঁচুড়া শহরে ফের দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্য নিয়ে আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। শহরের রবীন্দ্রনগরে দীর্ঘদিন ধরেই নিজের ‘সাম্রাজ্য’ চালাচ্ছে টোটন। তার বিরুদ্ধে তোলাবাজি, খুন, বেআইনি জমি কারবার-সহ নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। বেশ কিছু দিন হাজতবাসের পরে সে সম্প্রতি জামিন পেয়ে ফের স্বমূর্তি ধারণ করে বলে অভিযোগ। সে জন্যই পুলিশ টোটনকে খুঁজছিল।

পুলিশ সূত্রের খবর, শুক্রবার নেপার জন্মদিন ছিল। রাতে টোটনের সুপুরি কারখানায় খাওয়া-দাওয়া এবং নাচগানের আয়োজন হয়েছিল। সেখানে দুই দুষ্কৃতী থাকবে খবর পেয়েই পুলিশ যায়। তার পরেই গোলমাল। পুলিশ তখনকার মতো চলে এলেও শনিবার ভোরে ফের তল্লাশিতে রবীন্দ্রনগরে যায়। তখনই কয়েকশো মানুষ প্রতিবাদে নামেন। জিটি রোড, হুগলি স্টেশন রোড, চুঁচুড়ার স্টেশন রোড-সহ শহরের বিস্তীর্ণ এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে শুরু হয় অবরোধ। পুলিশের একাংশের দাবি, অবরোধকারীদের একাংশ টোটনেরই দলবল। এর পিছনে কাদের মদত রয়েছে তা দেখা হচ্ছে।

অবরোধের জেরে সকাল থেকে রাস্তায় অটো-টোটো নামেনি। গোলমালের আশঙ্কায় দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। অভিযোগ, টোটোনের দলবল চুঁচুড়া ও হুগলি স্টেশনে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে মানুষকে ট্রেনের টিকিট কাটতে নিষেধ করে। স্টেশনে মাছের আড়তে আসা ব্যবসায়ীদেরও তারা ফিরে যেতে বাধ্য করে। শহরের একাংশ বন‌্ধের চেহারা নেয়।

বেলা বাড়তে চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার এবং চুঁচুড়া থানার আইসি অরিজিৎ দাশগুপ্ত বাহিনী নিয়ে রাস্তায় নামেন। অবরোধ হটাতে গেলে পুলিশকে লক্ষ করে ইট ছুড়তে থাকে অবরোধকারীরা। পুলিশ লাঠি চালায় এবং কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chinsurah Clash Criminal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE