বাড়ির সামনে জাতীয় পতাকা লাগাতে ব্যস্ত খুদে। বৃহস্পতিবার মশাল়ডাঙা ছিটমহলে সন্দীপ পালের তোলা ছবি।
গত পাঁচ বছর ধরে ভারতের স্বাধীনতা দিবসে বিধি ভেঙে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে তেরঙ্গা পতাকা উড়িয়েছেন ওঁরা। গলা মিলিয়েছেন ভারতের জাতীয় সঙ্গীতে। এবার দেশের স্বাধীনতা দিবসের আগেই স্বাধীনতা উদযাপনের জোরদার প্রস্তুতি সারা। মশালডাঙা ছিটমহলে স্বাধীনতা প্রাপ্তির কেন্দ্রীয় উৎসবে সামিল হতে রীতিমতো সাজ সাজ রব এলাকায়। ছিটমহাল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সহকারী সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “২০০৯ সাল থেকে স্রেফ ভালবাসার টানে স্বাধীনতা দিবসে ভারতের পতাকা তোলা হত। এবার সরকারীভাবে শিলমোহর পড়েছে। স্বাধীনতা দিবসের আগে তাই বাড়তি উচ্ছ্বাস।”
দিনহাটা-শালমারা রাস্তা লাগোয়া মশালডাঙা ছিটমহলে প্রবেশ পথেই তৈরি হয়েছে বিশাল তোরণ। লাগোয়া চত্বরে তৈরি হয়েছে বিশাল মঞ্চ। মশালডাঙা থেকে পোয়াতেরকুঠি, বাত্রিগছ থেকে করলা প্রতিটি ছিটমহলের ঘরে ঘরে ওই রাতে জ্বালানো হবে ৬৮টি করে মোমবাতি। ইদ কিংবা দুর্গাপুজোর মতই নতুন জামাকাপড় কিনেছেন অনেকেই। হাতে মেহেন্দি পরেছেন মেয়েরা।
৩১ জুলাই মধ্যরাত থেকে বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল ভারত ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাবে। অন্যদিকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হবে ভারতের ১১১টি ছিটমহল। বাংলাদেশের ওই সবকটি ছিটমহলে ১ অগস্ট সকালে সরকারিভাবে ভারতের জাতীয় পতাকা তোলা হবে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক চলায় জাতীয় পতাকা অবশ্য অর্ধনমিত করে রাখা হবে। আধিকারিকেরা কে কোন ছিটমহলে থাকবেন সে ব্যাপারে তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
উৎসবের প্রস্তুতি। মশালডাঙা ছিটমহলে মেহেন্দির সাজ। —নিজস্ব চিত্র।
যদিও ৩১ জুলাই চ্যাংরাবান্ধায় প্রস্তাবিত দুই দেশের আধিকারিক পর্যায়ের বৈঠক নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনও পুরোপুরি কাটেনি। সরকারি সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে দুই দেশের প্রশাসনের কর্তারা ছিটমহলের জমি সংক্রান্ত নথি আদানপ্রদান করবেন বলে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ডাকা একটি বৈঠকের জেরে সেখানকার জেলা প্রশাসনের কর্তাদের অনেকেই সেদিন চ্যাংরাবান্ধা আসতে পারছেননা। ইতিমধ্যে পুরো বিষয়টি জানিয়ে কোচবিহারের জেলাশাসককে বাংলাদেশ প্রশাসনের তরফে চিঠিও পাঠানো হয়েছে।
জেলাশাসক পি উল্গানাথন ওই প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার সকালে বলেন, “বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।” কয়েকজন আধিকারিক জানান, তাতে অবশ্য কোন সমস্যা হবেনা। আগের সিদ্ধান্ত মেনেই ৩১ জুলাই রাত ১২টা থেকে ছিটমহলের জমি হস্তান্তর প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হবে। নথি বিনিময় পরে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy