গোয়েন্দাদের নজরে পল্টু ওরফে অমল গুপ্ত।
নিজের ভাল নামটা একরকম ভুলেই গিয়েছেন তিনি।
অমল গুপ্ত, ওরফে পল্টু, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে চিকিৎসক থেকে, রিকশা চালক— তাঁকে ওই পল্টুদা নামেই চেনেন।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরের দেওয়াল ঘেঁষা এক কামরার পাকাপোক্ত ঘর, এলাকার তামাম মানুষজন যাকে চেনেন— পল্টুদার ঘর।
রবিবার, সাত সকালেই সিআইডি-র কর্তারা হানা দিয়েছিলেন ‘পল্টুদার’ সেই ঘরে। সেখানে না পেয়ে গোরাবাজারে তাঁর বাড়িতেই পৌঁছে গিয়েছিলেন সিআইডি কর্তারা। তার পর শুরু হয় জেরা।
কেন? প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলছেন, ‘‘এ তো খুব সহজ, মুখ্যমন্ত্রী প্রথম থেকেই একটা ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব খাড়া করার চেষ্টা করছেন। আর তাতে পল্টুর মতো এক জন রোগী-সেবায় প্রাণপাত করা কংগ্রেস কর্মীকে জড়িয়ে দিয়ে গ্রেফতার করতে পারলেই কাজ তাদের অনেকটা সহজ হয়ে যাবে!’’
দীর্ঘ দিন ধরেই অধীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পল্টুর পরিচয়। পেশায় বহরমপুর পুরসভার কর্মী পল্টু যে ‘দিন-রাত’ এক করে হাসপাতালেই পড়ে থাকেন অধীরও তা কবুল করেছেন।
তবে তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের অভিযোগ, ‘পল্টুদার’ ওই ঘর আদতে ‘ঘুঘুর বাসা’।
প্রায় আড়াই দশক ধরেই কংগ্রেসের রোগী পরিষেবা কেন্দ্রের ওই অফিস ঘরের দায়িত্বে রয়েছেন পল্টু। কংগ্রেসের দাবি, আমজনতার জন্য হাসপাতালে থেকে সাহায্য করাই পল্টুর ‘নেশা’।
তবে দীর্ঘ দিন ধরে হাসপাতালের সঙ্গে জড়িয়ে থাকার ফলে সেখানকার নানান খোঁজ-খবরও যে তাঁর নখদর্পনে তা কবুল করেছেন কংগ্রেসের অনেকেই। হাসপাতালের ঝাড়ুদার থেকে আয়া-নার্স এমনকী চিকিৎসকেরাও যে তাঁকে ‘সমঝে’ চলেন, তা-ও মেনে নিয়েছেন দলের অনেকেই।
তবে, পুলিশ জানাচ্ছে, ২০০৪ সালে বহরমপুরে জোড়া খুনের ঘটনায় তিনি অভিযুক্ত।
শনিবার অগ্নিকাণ্ডের পরে পল্টু জানিয়েছিলেন, ‘‘দুপুর পৌনে ১২টা নাগাদ এক রোগীর সঙ্গে হাসপাতালের দোতলায় গিয়েছি। এমন সময় ‘আগুন! আগুন! চিৎকার শুনে মুখ ফেরাতেই দেখি তালাবন্ধ ওই ভিআইপি কেবিন থেকে গলগল করে ধোঁয়া বের হচ্ছে।’’
তা হলে তাঁকে এমন ম্যারাথন জেরা কেন? সিআইডি-র কর্তারা বলছেন, ‘‘সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওঁর সঙ্গে কার কি যোগাযোগ ছিল তা খতিয়ে দেখতে হবে না!’’
যা শুনে অধীর বলছেন, ‘‘দিদি নিজের অপশাসন ধামাচাপা দিতে পার্কস্ট্রিট কাণ্ড থেকে সব কিছুর মধ্যেই ষড়যন্ত্র দেখছেন। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাতেও ওঁর (পল্টু) মতো এক জন কংগ্রেস কর্মীকে জড়িয়ে দিতে পারলে তো ষোলো কলা পূর্ণ!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy