Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

গুন্ডামি রুখুন কড়া হাতে, মমতার বার্তা প্রশাসনকে

রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নবান্নে দ্বিতীয় বার ফেরার পর থেকেই কড়া বার্তা দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন জেলায় তা সত্ত্বেও বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ঘটছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৮
Share: Save:

রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নবান্নে দ্বিতীয় বার ফেরার পর থেকেই কড়া বার্তা দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন জেলায় তা সত্ত্বেও বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ঘটছে। তার প্রেক্ষিতেই এ বার প্রশাসনকে কড়া হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজনীতির রং না দেখে পুলিশ-প্রশাসনকে গোটা বিষয়টিকে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হিসাবেই সামলাতে বলা হয়েছে।

বাঁকুড়ার ফুলকুসমায় সোমবার প্রশাসনিক জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী সাফ বলেছেন, ‘‘আমি প্রশাসনকে বলব, শক্ত হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সে যে-ই হোক, কোনও গুন্ডামি, বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না!’’ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, কোথাও হয়তো একটা দুর্ঘটনা ঘটছে। তাতেও সাম্প্রদায়িক রং লাগানোর চেষ্টা হচ্ছে। একটা জেলায় হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, শিখ সব সম্প্রদায়ের মানুষই থাকবেন। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান হবে। বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা হলে প্রশাসন কড়া হাতে তার মোকাবিলা করবে।

মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেছেন, ‘‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতেই হবে। যখনই মানুষকে খেতে দিতে পারছে না দিল্লি, তখনই কাজ হচ্ছে মানুষে মানুষে লাগিয়ে দাও!’’ মমতার অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে রাজ্যে অশান্তি বাধানোর চক্রান্ত হচ্ছে। তাঁর যুক্তি, পশ্চিমবঙ্গ চিরকালই সম্প্রীতি ও শান্তির পরম্পরা মেনে চলা রাজ্য। কিন্তু কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে যে কোনও ঘটনায় সাম্প্রদায়িক প্রশ্ন জু়ড়ে দিয়ে উত্তেজনা তৈরি করা হচ্ছে। তৃণমূল নেত্রী হিসাবে তিনি ইতিমধ্যেই তাঁর দলকে এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রচারের নির্দেশ দিয়েছেন। এ বার প্রশাসনকেও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের বাইরে খোলা হাতে অশান্তি রুখতে বার্তা দিলেন। যে হেতু মমতার এ দিনের কর্মসূচি ছিল জঙ্গলমহলের অন্তর্গত জেলায়, তাই তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘জঙ্গলমহলকে নতুন করে তৈরি করছি আমরা। এই জঙ্গলমহলে আর যেন রক্ত না ঝরে। আর যেন কোনও অশান্তি না হয়।’’ প্রশাসনিক মোকাবিলার পাশাপাশি স্থানীয় নির্বাচিত সংস্থাগুলিকেও সতর্ক ও সক্রিয় থাকতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘পঞ্চায়েত ও পুরসভায় যাঁরা আছেন, ভাল করে কাজ করুন। মানুষ থাকলে রাজনৈতিক দল থাকবে। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চলাই আমার জীবনের লক্ষ্য।’’

বিরোধী কংগ্রেস ও বাম নেতারা অবশ্য বলছেন, প্রশাসনিক স্তরে কড়া হওয়ার ভাব দেখালেও আসল গলদ থেকে যাচ্ছে তৃণমূলের রাজনৈতিক কৌশলেই! তিন তালাক-সহ নানা প্রশ্নেই রাজ্যের শাসক দলের অবস্থান বুঝিয়ে দিচ্ছে, বিজেপি-র সঙ্গে তারা মেরুকরণের রাজনীতিতেই সুর মেলাচ্ছে। তাই বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ঘটেই চলেছে। এক কংগ্রেস নেতার কটাক্ষ, ‘‘উনি গেরস্থকে বলছেন সজাগ থাকো আর চোরকে বলছেন চুরি করো!’’

অন্য বিষয়গুলি:

mamata banerjee Hooliganism
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE