জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।
বুনো হাতির জন্য খাদ্য ভান্ডার তৈরি শুরু হচ্ছিল উত্তরবঙ্গে। মহানন্দা-গরুমারার মতো জঙ্গলের ধার ঘেঁষে ঘাস জমিতে ফলের গাছ, বড় পাতার গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করেছিল বন দফতর। বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে ইডি গ্রেফতার করায়, সে পরিকল্পনার ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে দফতরের অন্দরে। কয়েকশো কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল পরিকল্পনায়। কিছু টাকা খরচও হয়েছে। বন দফতরের আধিকারিকদের একাংশের আশঙ্কা, সেই খরচেও ‘ভূত’ লুকিয়ে নেই তো! ইডি-র টানাটানি হবে না তো বন দফতরের প্রকল্প নিয়ে!
বন আধিকারিকদের কেউ কেউ দাবি করেছেন, হাতি এবং অন্য বুনো জন্তুর খাদ্য ভান্ডার গড়ে তুলতে মাস ছয়েক ধরে ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়েছিল। দক্ষিণবঙ্গে সে কাজও শুরু হয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার পথে জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় মহারাজঘাটের বাসিন্দা বিষ্ণু দাসের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছেলে অর্জুনকে পিষে মারে বুনো হাতি। তার পরেই বন্য জন্তুদের লোকালয়ে বেরিয়ে আসা নিয়ন্ত্রণ করতে নতুন করে তোড়জোড় শুরু হয় দফতরে। মানুষ-বন্যদের সংঘাত এড়াতে জঙ্গলে খাদ্য ভান্ডার তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। উত্তরবঙ্গের জন্য পৃথক একটি ‘মাস্টার প্ল্যান’ তৈরির কাজ শুরু হয়। কখনও জলপাইগুড়িতে, কখনও আলিপুরদুয়ারে এসে এ নিয়ে বৈঠকও করেছেন বন-কর্তারা। বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও ছিলেন সে সব বৈঠকে। বৈকুণ্ঠপুর-সহ কিছু এলাকায় কাজ শুরুর নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল।
রাজ্যের এক বনকর্তা বলেন, ‘‘মন্ত্রী নিজে কোনও ফাইলে সই করেন না, তবে তিনি ফাইলে নোট দেন। নীতিগত সিদ্ধান্ত নেন। এক জন মন্ত্রী চলে গিয়ে নতুন কেউ এলে, তিনি সব কিছু বুঝে নিয়ে পুরনো নীতিগত সিদ্ধান্তে সহমত হতেও পারেন, আবার না-ও পারেন। তার অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র ভিন্ন হতে পারে। সব মিলিয়ে হাতিদের খাদ্য ভান্ডার তৈরির কাজ অন্তত উত্তরবঙ্গে কিছুটা শ্লথ হয়ে গেল, সেটা এখন মনে হচ্ছে।’’
প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছিল, হাতি করিডর সম্প্রসারণ বা খাদ্য ভান্ডার তৈরিতে অন্তত ১,৭০০ কোটি টাকা খরচ হতে পারে। কেন্দ্র থেকে বরাদ্দ মিলবে, ধরে নিয়েই এই হিসাব হয়। কাজও শুরু হয়। উত্তরবঙ্গের বহু জঙ্গলে গাছ লাগানো শুরু হয়। সে কাজ কি চলবে, না কি সেখানেও তদন্তকারী সংস্থা হাত দেবে তা নিয়েও চিন্তা রয়েছে আধিকারিকদের একাংশের মধ্যে। উত্তরবঙ্গের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘মন্ত্রী গ্রেফতার হলে, দফতরে অভিঘাত
আসতেই পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy