Advertisement
১৭ মে ২০২৪
Bratya Basu

নাটক-প্রতিবাদ কংগ্রেসের, প্রশ্ন তুলছেন ব্রাত্যও

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ব্রাত্য বসুর নাটকে উঠে আসা এমন ইঙ্গিতকে নস্যাৎ করে সম্পূর্ণ ভিন্ন মত পেশ করছে কংগ্রেস।

Bratya Basu.

ব্রাত্য বসু। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:১০
Share: Save:

বেঁচে থাকলে সঞ্জয় গান্ধী সঙ্ঘ পরিবার তথা বিজেপির হিন্দুত্বের তত্ত্ব ছিনতাই করে কংগ্রেসকে সেই রাস্তায় নিয়ে যেতে চাইতেন কি না, সেই প্রশ্নে বিতর্ক অব্যাহত। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ব্রাত্য বসুর নাটকে উঠে আসা এমন ইঙ্গিতকে নস্যাৎ করে সম্পূর্ণ ভিন্ন মত পেশ করছে কংগ্রেস। নাট্যকার ব্রাত্যও পাল্টা প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন। সব মিলিয়ে ইতিহাসের এক বিগত অধ্যায় নতুন করে খোলা হয়েছে এই পুজোর মরসুমে!

এ বার একটি পুজোসংখ্যায় ‘এই রাত তোমার আমার’ নাটকে ব্রাত্য তুলে এনেছেন প্রিয়দর্শিনী গিলানি ও তাঁর ছোট ছেলে পরঞ্জয় গিলানির কথোপকথন। যে সব অনুষঙ্গের ব্যবহার সেখানে আছে, তা থেকে ধরা যায়, প্রিয়দর্শিনী ও পরঞ্জয়ের চরিত্র আসলে ইন্দিরা ও সঞ্জয় গান্ধীকে কেন্দ্র করেই নির্মিত। নাটকে সেই কথোপকথনেরই এক জায়গায় পরঞ্জয় তাঁর মাকে বলছেন, ‘সেকুলারিজমের টুপি’ মানুষ আর খাবে না! ‘গর্ব সে কহো, হাম হিন্দু হ্যায়’— এটাই হতে চলেছে আগামী দিনের ‘অ্যাজেন্ডা’। জনসঙ্ঘ ভেঙে তখন বেরিয়ে আসা বিজেপির নড়বড়ে থাকার সুযোগ নিয়ে হিন্দুত্বের ওই তত্ত্ব ও স্লোগান ‘হাইজ্যাক’ করার প্রস্তাবও মাকে দিচ্ছেন পরঞ্জয়। নাটকেই মা অবশ্য এমন প্রস্তাবের ঘোর বিরোধী ছিলেন। আর বাস্তবে কংগ্রেস বিরোধিতা করছে সঞ্জয়কে ‘হিন্দুত্ববাদী’ হিসেবে দেখানোর।

বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার মুখ খুলেছেন নাট্যকার ব্রাত্যও। তিনি অবশ্য বলেন, ‘‘আমার কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। নাটকে যা আছে, সকলেই পড়ে নিতে পারেন। নাটকে তো চরিত্রদের কথা আছে, কোনও রাজনীতিবিদের নাম নেই।’’ সেই সঙ্গেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘তবে যাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, তাঁদের উদ্দেশে একটা প্রশ্ন তোলা যেতে পারে। মানেকা গান্ধী (সঞ্জয়ের স্ত্রী) সপা, বসপা বা উত্তরপ্রদেশে অন্য কোনও দল না করে বিজেপিকে বেছে নিয়েছিলেন কেন? সেই প্রশ্নটার কি উত্তর খোঁজার চেষ্টা হবে?’’ প্রসঙ্গত, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের ছায়ায় তৈরি চরিত্রদের কথোপকথন নিয়ে ব্রাত্য এর আগেও নাটক করেছেন। প্রয়াত স্ত্রীর কবরে শ্রদ্ধা জানাতে আসা মহম্মদ আলি জিন্নার সঙ্গে ১৯৪৭ সালের অগস্টে তাঁর মেয়ের কথোপকথন ঘিরে এর আগে বেরিয়েছিল তাঁর ‘অন্তিম রাত’। তবে ‘এই রাত তোমার আমার’ কবে মঞ্চস্থ হবে, তার এখনও ঠিক নেই বলেই সূত্রের খবর।

নাট্যকারের প্রশ্নের প্রেক্ষিতে কংগ্রেসের প্রাক্তন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘সঞ্জয়ের মৃত্যুর পরে পারিবারিক বিরোধের কারণে তাঁর স্ত্রী কংগ্রেস করেননি। সঞ্জয়ের মৃত্যুর পরে তাঁর স্ত্রী কোন দল করেছেন বা কোন দল করেননি, তা দিয়ে জীবদ্দশায় সঞ্জয়ের ভাবনাকে ধরতে যাওয়া অর্থহীন। তবে নাট্যকার তাঁর মতো করে যা মনে করেছেন, ভেবেছেন।’’ প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র অশোক ভট্টাচার্য সমাজমাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, ‘সঞ্জয় গান্ধীর বিরুদ্ধে তাঁর চরম বিরোধীও বলতে পারবেন না যে, সঞ্জয় হিন্দুত্ববাদী ছিলেন। বরং, সত্যিটা এটাই যে, সঞ্জয় ছিলেন জনসঙ্ঘ, আরএসএস এবং তাদের মদতে পুষ্ট ‘সিন্ডিকেট কংগ্রেস’-এর কাছে প্রতীকী ‘যম’ স্বরূপ’! নাট্যকার তাঁর মনের মাধুরী ও রাজনৈতিক ‘অ্যাজেন্ডা’ মোতাবেক কিছু লিখলেই ইতিহাস বদলে যায় না বলে কংগ্রেস নেতাদের মত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bratya Basu Sanjay Gandhi Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE