সিইএসসি অফিসের সামনে বিক্ষোভ ‘অ্যাবেকা’-র। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বুধবার ৩৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
বিদ্যুতের মাসুল বৃদ্ধির প্রতিবাদে সাম্প্রতিক কালে আন্দোলন হয়েছে রাজপথে। কলকাতার রাজপথেই অনশন হয়েছে বর্ধিত মাসুল প্রত্যাহারের দাবিতে। এ বার সেই প্রশ্নেই শোরগোল বাধল বিধানসভায়। তবে বিরোধীদের অভিযোগ নস্যাৎ করে বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত দাবি করলেন, তৃণমূল সরকারের জমানায় রাজ্যে বিদ্যুতের গড় মাসুল তেমন কিছু বাড়েইনি! তাই এই নিয়ে অযথা হইচই করা হচ্ছে!
বিধানসভায় বুধবার বিদ্যুতের বাড়তি দাম নিয়ে আলোচনা চেয়ে মুলতবি প্রস্তাব এনেছিল কংগ্রেস। বিধায়ক সাবিনা ইয়াসমিনকে প্রস্তাবটি পাঠ করতে দিলেও আলোচনার অনুমতি দেননি স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বিদ্যুৎমন্ত্রীকে এই নিয়ে বিবৃতি দিতে বলা হয়। তিনি জানান, ২০১১ সালের আগের চার বছরে বাম জমানায় বিদ্যুতের গড় মাসুল বৃদ্ধি হয়েছিল দু’টাকা ৭০ পয়সা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আসার পরে গ়ড় মাসুল বেড়েছে প্রায় ৫০.৩৬ পয়সা। শিল্পক্ষেত্র, স্কুল-সহ আলাদা আলাদা শ্রেণিতেও বিদ্যুতের মাসুল বাড়েনি।
মন্ত্রীর এমন ব্যাখ্যায় স্বভাবতই সন্তুষ্ট হননি বিরোধীরা। বাম ও কংগ্রেস বিধায়কেরা এই নিয়ে হইচই জুড়ে দেন। সিপিএমের বিধায়ক শাজাহান চৌধুরী পাল্টা তথ্য দেন, রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি এলাকায় বিদ্যুতের ইউনিট প্রতি গড় মাসুল ২০১০-১১ সালে যেখানে ছিল ৪ টাকা ৭১ পয়সা, সেখানে ২০১৫ সালে ইউনিট প্রতি তা দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ৫৬ পয়সা। সিইএসসি এলাকায় ২০১০-১১ সালে এক ইউনিট বিদ্যুতের দাম ছিল ৪ টাকা ৭৩ পয়সা। ২০১৫ সালে সেটা হয়ে দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা ৯৭ পয়সা। শাজাহান বলেন, ‘‘গৃহস্থ গ্রাহক ১০০ ইউনিট বিদ্যুৎ খরচ করার জন্য যেখানে ৪২০ টাকার বিল দিতেন, সেখানে এখন বিল আসছে ৬৭৫ টাকা ৬৫ পয়সা! এক ধাক্কায় ৬১% বৃদ্ধি! তার পরেও মন্ত্রী কী করে বলছেন, দাম বাড়েনি!’’
বিরোধীদের হইচইয়ের মুখে মণীশবাবু আবার বলেন, বিদ্যুতের মাসুল রাজ্য ঠিক করে না। বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন গণশুনানির পরে মাসুল ধার্য করে। তাঁর ব্যাখ্যা, দিল্লি বা মুম্বইয়ের চেয়ে কলকাতায় বিদ্যুতের গড় মাসুল কম। তবে অন্য কিছু রাজ্যের চেয়ে মাসুল বেশি হতে পারে। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘অন্যান্য অনেক রাজ্য বিদ্যুতে অনেক ভর্তুকি দেয়। এখানে কিন্তু সংস্থাগুলি লাভ করে। আর শুধু বিদ্যুৎ দেওয়াই নয়, পরিষেবার মানেও নজর রাখি।’’
বিদ্যুৎমন্ত্রীর এ দিনের বিবৃতির প্রেক্ষিতে সরাসরি তাঁর ইস্তফা দাবি করেছেন বিদ্যুৎ নিয়ে আন্দোলনকারীদের তরফে প্রসেনজিৎ বসু। তাঁর যুক্তি, ‘‘বিভিন্ন ধরনের গ্রাহকদের জন্য নির্ধারিত মাসুলের ভিত্তিতে গড় বিদ্যুৎ মাসুল হিসাব করা হয়। সেটা দেখিয়েই বিদ্যুৎমন্ত্রী প্রতারণা করে চলেছেন! আসল কথা হল গৃহস্থ গ্রাহক কত টাকায় বিদ্যুৎ কিনছেন। তাঁদের বিদ্যুতের বিল দেখলেই সত্য প্রকট হয়ে যাবে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy