নবান্ন। —ফাইল চিত্র।
দীর্ঘ প্রায় ছ’মাস পরে লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালুর বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে রাজ্য। নবান্নের নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, লোকাল ট্রেন চালানো যাবে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে। কিন্তু পুজোর পরে কোভিড সংক্রমণ যখন ঊর্ধ্বমুখী, তখন লোকাল ট্রেন চালানোর এই সিদ্ধান্ত বাড়তি বিপদ ডেকে আনবে কি না কিংবা কী করে সেখানে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করে ৫০ শতাংশ যাত্রীর বিধি মানা হবে, সেই প্রশ্ন উঠছেই। সাধারণ যাত্রী থেকে রেল কর্তৃপক্ষ— প্রায় সকলেই এই দুই বিষয়ে ধন্দে ও সন্দিহান।
রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, ভিড় এড়াতে প্রাক করোনা পরিস্থিতির সূচি মেনে ট্রেন চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ২০২০ সালের মার্চে দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণার আগে যে সংখ্যায় লোকাল ট্রেন চলত, সেই সংখ্যাতেই ট্রেন চালানোর চেষ্টা হচ্ছে। তবে, রাত ১১টা থেকে ভোর ৫টার মধ্যে রাস্তায় বেরনোর ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ থাকায় ওই সময়ে ট্রেন কমতে পারে।
প্রাক করোনা-কালে পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনে ৪৮৮টি, শিয়ালদহে ৯১৩টি এবং দক্ষিণ পূর্ব রেলে ১৯১টি শহরতলির লোকাল ট্রেন চলত। রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া যাতে কেউ লোকাল ট্রেনে যাতায়াত না করেন, যাত্রীদের সচেতন করতে সেই আবেদন জানানো হবে।
গত কয়েক মাস ধরে লোকাল ট্রেন বিশেষ পরিষেবা হিসেবে চালু থাকলেও, ব্যস্ত সময়ে কামরায় ঠাসাঠাসি ভিড় দেখা গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যাত্রীদের কাছে আবেদন করব বাধ্য না হলে ট্রেনে সফর না করতে।’’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলেন, ‘‘যে ভাবে বাকি গণপরিবহণ চালু শুরু হয়েছে, সেখানে যে ভাবে মানুষজন যাতায়াত করছেন, তাতে আলাদা করে লোকাল ট্রেন না চালানোর যুক্তি নেই। তবে এখন কোভিড বিধি মেনে সকলকে নিউ নর্মালে চলতে হবে। ৫০ শতাংশ যাত্রী ওঠার বিষয়টি চ্যালেঞ্জের। তাই দায়িত্ব সরকার, রেল ও সাধারণ মানুষ—তিন পক্ষেরই।’’
সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ যোগীরাজ রায়ের কথায়, ‘‘সংক্রমণ বাড়বে, সেটা ঠিক। কিন্তু তেমনই কত দিন সব কিছু বন্ধ রাখা সম্ভব? পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য টিকাকরণের গতি বাড়ছে। চিকিৎসা পরিকাঠামোও তৈরি রাখা রয়েছে।’’
রেলের দাবি, স্টেশন চত্বরে এবং ট্রেনে যাওয়ার সময়ে মাস্ক না পরার ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। টিকিট কাউন্টারে ভিড় এড়াতে নিজস্ব অ্যাপে টিকিট কাটার পরামর্শ দেওয়া হবে।
বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অবশ্য বলেন, “লোকাল ট্রেন চালুর বিষয়ে রাজ্য সরকারের আগেই ভাবা উচিত ছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বাধা দিয়ে এসেছেন। এখন সব কিছু খোলার কথা বলছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy