Advertisement
২০ মে ২০২৪

নেতা কমুক, কর্মী চাই, নকশা তৈরি প্লেনামের

সংগঠনকে চাঙ্গা করতে কিছু দাওয়াইয়ের কথা বলা হয়েছিল গত বছরের শেষে কলকাতা প্লেনামে। কিন্তু বিধানসভা ভোটের দৌলতে তার কোনও কিছুই এ রাজ্যে বাস্তবের মুখ দেখেনি। ভোটে ফের পরাজয়ের ধাক্কার পরে এ বার রাজ্য প্লেনামকে সামনে রেখে সংগঠনে রদবদল সারতে চাইছে আলিমুদ্দিন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৩৪
Share: Save:

সংগঠনকে চাঙ্গা করতে কিছু দাওয়াইয়ের কথা বলা হয়েছিল গত বছরের শেষে কলকাতা প্লেনামে। কিন্তু বিধানসভা ভোটের দৌলতে তার কোনও কিছুই এ রাজ্যে বাস্তবের মুখ দেখেনি। ভোটে ফের পরাজয়ের ধাক্কার পরে এ বার রাজ্য প্লেনামকে সামনে রেখে সংগঠনে রদবদল সারতে চাইছে আলিমুদ্দিন।

প্রতিটি কমিটিরই গড়ে এক-তৃতীয়াংশ করে সদস্যকে প্রতি বার সম্মেলনের সময়ে অব্যাহতি দেওয়া হবে বলে নীতিগতভাবে পরিকল্পনা হয়েছিল সিপিএমে। রাজ্যে ক্ষমতা হারানোর পরে দু’টি রাজ্য সম্মেলনে এই নীতি কার্যকর হতেও শুরু করেছিল। বাকি কাজএ বার আসন্ন প্লেনাম থেকে পূর্ণ উদ্যমে শুরু করতে চাইছেন সূর্যকান্ত মিশ্র, বিমান বসুরা। সেই সঙ্গেই তাঁদের লক্ষ্য, সংগঠনে নেতা-নির্ভরতা কমানো। কঠিন পরিস্থিতিতে মাটি কামড়ে লড়াইয়ের জন্যএখন নিবেদিতপ্রাণ কর্মীই বেশি দরকার সিপিএমের। এই প্রেক্ষাপট মাথায় রেখেই তাই পরিকল্পনা হচ্ছে সংগঠনে কমিটির সংখ্যা কমিয়ে আনার। যত কমিটি, তত নেতা— এই ছাঁচ থেকে তা হলে কিছুটা হলেও বেরোনো যাবে মনে করছেন রাজ্য সিপিএম নেতৃত্ব।

প্রতিটা জেলায় সিপিএমের সংগঠন এখন ত্রিস্তরীয়। সব চেয়ে নীচে লোকাল কমিটি, তার উপরে জোনাল এবং শীর্ষে জেলা কমিটি। পাড়ায় পাড়ায় লোকাল কমিটির সঙ্গে জেলা স্তরের সমন্বয় তৈরি করাই ছিল জোনাল কমিটির কাজ। জোনাল কমিটির সম্পাদকেরা পদাধিকার বলে জেলা কমিটির সদস্য হতেন। কিন্তু দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় সূর্যবাবুরা দেখেছেন, জোনাল কমিটি রেখে কাজের কাজ বিশেষ হচ্ছে না। এখন তাঁরা চাইছেন জোনাল কমিটির ধারণাটাই তুলে দিতে। কয়েক বছর আগে মালদা ও হাওড়া জেলায় জোনাল কমিটি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল পরীক্ষামূলক ভাবে। সেটাই এ বার রাজ্য স্তরে চালু করার লক্ষ্যে আলোচনা হয়েছে দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে। দলীয় সূত্রের ব্যাখ্যা, ক্ষমতায় আসার আগে এ রাজ্যে লোকাল ও জেলা কমিটির মাঝে কোনও স্তর ছিল না। ক্ষমতায় থাকতে থাকতে লোকাল কমিটির সংখ্যা যত বেড়েছে, তাদের সামাল দেওয়ার কাজও তত কঠিন হয়েছে জেলা কমিটির পক্ষে। তাই জোনাল কমিটি করা হয়েছিল। এখন কঠিন সময়ে সিপিএম আবার ফিরে যেতে চাইছে পুরনো পথেই।

কেরল বা ত্রিপুরার মতো রাজ্যে, যেখানে সিপিএমের শক্তি ও সংগঠন ভাল, সেখানে ত্রিস্তরীয় কমিটিই আছে। কিন্তু অন্য বহু রাজ্যেই জেলা ও এলাকাভিত্তিক কমিটির বাইরে আর কিছু নেই। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এ রাজ্যে এখন লোকাল কমিটিগুলির কাজের এলাকা বাড়িয়ে দিয়ে কমিটির সংখ্যা কমিয়ে দেওয়ার ভাবনাও রয়েছে। তৃণমূলের জমানায় বহু লোকাল কমিটির কার্যালয়ই হয় দখল হয়ে গিয়েছে, নয়তো তালাবন্ধ। কমিটির সংখ্যা তাই কমিয়ে দিয়ে সংগঠনে গতি আনার পরিকল্পনা নিচ্ছে আলিমুদ্দিন। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘প্লেনাম থেকেই সঙ্গে সঙ্গে হয়তো সব সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়ে যাবে না। কিন্তু সামনে বড় নির্বাচন নেই। সংগঠন সংস্কার করার জন্য নীতি ঠিক করার এটাই উপযুক্ত সময়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

plenum CPM resuffel
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE