সে-দিন: সময়টা ২০১২। দার্জিলিঙে গুরমিত রাম রহিম সিংহ। —ফাইল চিত্র।
ইন্টারনেট সংযোগ নেই। খবর ছড়াল মুখে মুখেই। কেউ ফোনে, কেউ বা এসএমএসে জানতে পারলেন, গুরমিত রামরহিম সিংহকে আদালত কুড়ি বছর কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে। এক সময়ে পাহাড়ে ‘ডেরা’ বসাতে উদ্যোগী হওয়া রামরহিমের সাজার খবরে খুশি দার্জিলিং। শুক্রবার সিবিআই আদালত রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করার পরেই চর্চা শুরু হয় দার্জিলিঙে। কয়েক বছর আগে পাহাড়ের বাসিন্দাদের প্রতিরোধের জেরেই দার্জিলিং ছাড়তে হয়েছিল এই স্বঘোষিত গুরুকে।
আরও পড়ুন: তালাক থাক, পাল্টা নারীকণ্ঠ জমিয়তের
দুপুর দু’টোয় কার্শিয়াঙের জিরো পয়েন্টে গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন কয়েকজন বাসিন্দা। সেখানেই মোতায়েন ছিল পুলিশ এবং আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ানরা। এক যুবক সরাসরি পুলিশকর্মীকেই প্রশ্ন করলেন, ‘‘স্যার রাম রহিমের কী হল, কিছু জানেন কি?’’ ওই পুলিশকর্মীও দার্জিলিঙের বাসিন্দা। তিনি যুবককে জানালেন, দুপুর আড়াইটের সময় রায় হবে। কথায় বোঝা গেল, তাঁরও উৎসাহ কম নয়। জিজ্ঞাসা করতে জানা গেল, ২০১২-তে ওই পুলিশকর্মীই দার্জিলিং সদর থানায় ছিলেন। রাম রহিমকে কাছে থেকে দেখেছেন তিনি। বলেন, ‘‘রাম রহিমের ভক্তি জলসার সময় নিরাপত্তার ডিউটিও করেছি। দু’হাতে টাকা ছড়াতে দেখেছি। দার্জিলিঙে যে তিনি বেশি দিন থাকতে পারেননি সেটাই ভাগ্যের।’’
বন্ধে সুনসান চৌরাস্তায় ব্যবসায়ীরা আড্ডা জমান। এ দিন তাঁদেরই এক জন শিলিগুড়ির বাসিন্দা এক পরিচিতকে অনুরোধ করছিলেন, কী রায় হল তা ইন্টারনেটে দেখে দিতে। ‘বাবা’-র কারাবাসের খবর শুনে ওই ব্যবসায়ীর দাবি, ‘‘একটা কথা কিন্তু মানতে হবে, যে দার্জিলিং-ই ভণ্ড বাবাকে প্রথম শিক্ষা দিয়েছিল।’’
দার্জিলিঙের নারী মোর্চার নেত্রীদের কয়েকজন এ দিন বিজয় মিছিলও করতে চেয়েছিলেন। তবে পাহাড়ের বর্তমান পরিস্থিতিতে সে ‘ঝুঁকি’ নিতে চাননি নেতারা। ২০০৭ সাল থেকে কয়েকবার দার্জিলিঙে যান ওই স্বঘোষিত ধর্মগুরু। ২০১২ সালে তিনি এসে পাহাড়ে সপার্ষদ ঘাঁটি তৈরি করার চেষ্টা করেছিলেন। স্বষোষিত ‘বাবা’র আচার আচরণে ক্ষুব্ধ বিরক্ত হয়ে নারী মোর্চা প্রশাসনকে স্মারকলিপি দেয় তখন। প্রশাসন দ্রুত রাম রহিমকে দার্জিলিং ছাড়তে বাধ্য করুক দাবি করে টানা আন্দোলন করেছিল নারী মোর্চা। তাঁদের এক জনের এ দিন বক্তব্য, ‘‘আমরাই লোকটাকে ঠিক চিনেছিলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy