প্রতীকী ছবি।
রোগ নির্ণয় হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ট্রেনের দেরির অসুখ নিরাময়ের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এই মরসুমে মূলত ‘ফগ’ ও ‘ব্লক’-এর সাঁড়াশি আক্রমণে নিত্যদিন দীর্ঘ সময় ট্রেন থমকে থাকছে মাঝরাস্তায়। ভুগছেন যাত্রীরা।
রাজধানী, দুরন্ত এক্সপ্রেস-সহ অধিকাংশ ট্রেন দিল্লি থেকেই ছাড়ছে ৬-৭ ঘণ্টা দেরিতে। রবিবার রাত ১০টা ১০ মিনিটে রাজধানী এক্সপ্রেসের শিয়ালদহে পৌঁছনোর কথা ছিল। রাত ১০টা ১০ মিনিটেও সেটি পৌঁছয়নি। রেল জানায়, ১৪ ঘণ্টা দেরিতে চলছে ট্রেনটি। রাত ১০টা ৮ মিনিটে সে ছিল কুলটিতে।
ট্রেন চলাচল খাবি খাচ্ছে মূলত কুয়াশা আর ‘ব্লকিং’ (রেলের কাজের জন্য সাময়িক ভাবে ট্রেন চলাচল নিয়ন্ত্রণ)-এর জন্য। যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছচ্ছেন ১২-১৪ ঘণ্টা পরে। বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। অথচ ট্রেন দেরি করায় দুপুরে খাওয়ানো হচ্ছে খিচুড়ি। শৌচাগারে জল থাকছে না। পানীয় জলেরও সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
যাত্রীরা বলছেন, রেল মন্ত্রক এত দিন যে-সব আধুনিক প্রযুক্তির কথা শুনিয়েছিল, সেগুলো কাগজে-কলমেই থেকে গিয়েছে। কিন্তু এই নিয়ে আদৌ মাথাব্যথা নেই রেল বোর্ডের কর্তাদের। প্রতি বছর কুয়াশায় ট্রেন-বিভ্রাট এড়ানোর জন্য এই সময়ে বহু ট্রেন বাতিল করে দেওয়া হয়। এ বার এখনও তা করা হয়নি। রেলকর্তাদের একাংশ বলছেন, কাজের জন্য যেখানে এমনিতেই বহু ট্রেনের দেরি হচ্ছে, তখন কুয়াশার মরসুম শুরু হওয়ার আগেই অন্তত কিছু ট্রেন বাতিল করে দেওয়া উচিত ছিল। ট্রেনগুলি প্রায় ১২ ঘণ্টা করে দেরি চলা সত্ত্বেও ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’ বন্ধ করা হচ্ছে না। বাড়তি ভাড়া এবং দেরি, সাঁড়াশি চাপে যাত্রীরা।
রেলের খবর, পূর্ব-মধ্য ও উত্তর রেলে লাইন মেরামতি চলছে। তাই ট্রেন চলছে থেমে থেমে। কোথাও একটু বেশি সময় ট্রেন থমকে থাকলে পিছনে পিছনে অনেক ট্রেন আটকে পড়ছে। ফলে তৈরি হচ্ছে ট্রেন-জট। ঘণ্টার ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকছে ট্রেন।
তার উপরে উত্তর ভারত জুড়ে ঘন কুয়াশায় দৃশ্যমান্যতা এত নেমে যাচ্ছে যে, চালকেরা দেখতে না-পাওয়ায় ট্রেন থামিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। ফলে ব্লকে আটকে থাকার পরে ছাড়া পেয়েও ট্রেন আর এগোতে পারছে না। বছর কুড়ি আগে থেকে রেল ‘অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস’ বা দুর্ঘটনা প্রতিরোধ প্রযুক্তি বসানোর পরিকল্পনা করেছিল। সেই যন্ত্র থাকলে কুয়াশায় ট্রেন চালাতে কিছুটা সুবিধা হতো। কোথায় গেল সেই যন্ত্র? জবাব নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy