আবছায়া: কুয়াশায় মোড়া হাওড়ার লঞ্চঘাট। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।
মরসুমের গোড়া থেকেই শীতের পথে কাঁটা ছড়িয়েছিল নিম্নচাপ-ঘূর্ণাবর্ত। পৌষ সংক্রান্তিতেও শীতকে দুর্বল করছে সেই ঘূর্ণাবর্তই! আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, বাংলাদেশের উপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। তার ফলে জোলো হাওয়া ঢুকে গাঙ্গেয় বঙ্গে উত্তুরে হাওয়াকে রুখে দিচ্ছে। এর ফলেই গত ক’দিন ধরে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে শীতের যে দাপাদাপি চলছিল, তাতেও কমবেশি লাগাম পড়েছে।
শনিবার কলকাতার সর্বনিম্ন আবহাওয়া ছিল ১১.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি কম। দমদমে আরও কিছুটা কম ১০.৮ ডিগ্রি। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, গাঙ্গেয় বঙ্গের জেলাগুলিতে অবশ্য এখনও জাঁকিয়ে ঠান্ডা রয়েছে। বীরভূমের শ্রীনিকেতনে এ দিনও শৈত্যপ্রবাহ বয়েছে। সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ৫ ডিগ্রি কম।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের এক কর্তা জানান, একে তো উত্তুরে হাওয়ার জোর আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে। তার উপরে ঘূর্ণাবর্তের প্রভাব। দু’য়ে মিলে পৌষ সংক্রান্তিতে শীতের দাপট কিছুটা কমতে পারে। কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২-১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকবে। জেলাগুলিতে তাপমাত্রা কলকাতার তুলনায় কিছুটা কম থাকতে পারে। ‘‘সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে নীচে থাকলেও সেই শীতের কাম়়ড় থাকবে না,’’ বলছেন ওই আবহবিজ্ঞানী।
আরও পড়ুন: মা-ছেলেকে মিলিয়ে দিল শীতের জামা
আবহবিদদের একাংশ অবশ্য বলছেন, ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে দিনের বেলা অবশ্য শীত-শীত ভাব মিলবে। শনিবারই যেমন চড়া রোদ মেলেনি, আকাশ মেঘলা থাকায় শীত-শীত ভাব ভালই মালুম হয়েছে। সাধারণত, শীতকালে দিনের বেলা চড়া রোদ, ঝলমলে আকাশ এবং রাতে কনকনে ঠান্ডা মেলাই স্বাভাবিক চরিত্র বলে জানান বিজ্ঞানীরা। সেখানে এমন মেঘলা আকাশ হলে দিনের বেলা চড়া রোদ যেমন ওঠে না, তেমনই রাতে মাটির গরম আকাশে ফিরে যেতে পারে না। তাই রাতের তাপমাত্রাও খুব একটা নামতে পারে না। এমন পরিস্থিতি শীতকে দুর্বল করে বলেই আবহবিদেরা জানান।
মৌসম ভবনের একটি সূত্র বলছে, কাশ্মীরে একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা (ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে বয়ে আসা ঠান্ডা ভারী হাওয়া) হাজির হয়েছে। তার জেরে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ওই উপত্যকায় মাঝারি বৃষ্টি বা তুষারপাত হতে পারে। কিন্তু আপাতত উত্তর-পশ্চিম ভারতেও রাতের তাপমাত্রা উপরের দিকে রয়েছে। কিন্তু সংক্রান্তি কেটে গেলেই সেখানে রাতের তাপমাত্রা সামান্য নামতে পারে।
কিন্তু বাংলায় কি এ বার শীতের পাততাড়ি গোটানোর পালা? আবহবিজ্ঞানীরা জানান, শীত যে এখনই বিদায় নিচ্ছে তা বলা যাবে না। দিন কয়েক পরেই উত্তর-ভারতে তাপমাত্রা নামতে পারে। ঘূর্ণাবর্তের বাধা কেটে গেলে সেখান থেকে কনকনে ঠান্ডা হাওয়া বয়ে আসতে পারে বাংলার দিকে। সেই হাওয়ার দাপটে কাঁপুনি ধরতে পারে বাঙালির শরীরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy