এ ভাবেই রোজ অন্য গ্রামে জল আনতে যান ডোমকলের বাসিন্দারা।—নিজস্ব চিত্র।
গ্রামের একমাত্র পানীয় জলের নতলকুপ খারাপ হয়ে যাওয়ায় গরমের শুরুতেই পানীয় জল সঙ্কটের মুখে গ্রামবাসীরা। বাধ্য হয়ে কয়েক কিলোমিটার হেঁটে অন্য গ্রাম থেকে পানীয় জল সংগ্রহ করে আনতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। শুধু গ্রামেই নয়, এলাকার বেশ কিছু স্কুলেও কয়েক মাস ধরে নলকূপ অকেজো হয়ে পড়ায় সমস্যায় পড়েছে ওই সব স্কুল কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর-২ ব্লকের বিভিন্ন পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের অভিযোগ, পানীয় জল সঙ্কটের বিষয়ে প্রশাসনকে জানালেও এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অথচ এক মাসের মধ্যেই গরম আরও বাড়বে।
মথুরাপুর-২ ব্লকে ১১টি পঞ্চায়েত রয়েছে। সেগুলি হল কাশীনগর, খাড়ি, গিলারছাট, কৌতলা, রাধাকান্তপুর, কুমড়োপাড়া, রায়দিঘি, কনকনদিঘি, দক্ষিণ বকুলতলা, নগেন্দ্রপুর ও নন্দকুমারপুর। প্রাথমিক, শিশুশিক্ষাকেন্দ্র ও হাইস্কুল মিলিয়ে স্কুলের সংখ্যা ২৩১টি। স্কুলগুলিতে প্রয়োজনের তুলনায় নলকূপের সংখ্যা যেমন কম, তেমনই তার বেশিরভাগই অকেজো হয়ে গিয়েছে। ফলে স্কুলে মিড ডে মিলের জল আনতে হচ্ছে অন্য জায়গা থেকে।
এক দিকে জলস্তর নেমে গিয়ে নলকূপ অকেজো হওয়ায় পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে, নগেন্দ্রপুর পঞ্চায়েতে সখেরবাজার থেকে দমকল ফেরি ঘাট পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার রাস্তা প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় পিচের করার জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর পানীয় জলের পাইপলাইন তুলে ফেলেছিল। সেই কারণেও পানীয় জল নিয়ে ভোগান্তি বেড়েছে। কারণ ওই পঞ্চায়েতে পানীয় জল সরবরাহের জন্য ২০০২ সালে নগেন্দ্রপুর অক্ষয়বাজারে জেনারেটারের সাহায্যে দু’টি পাম্প চালিয়ে ওই জল পাইপলাইনের মাধ্যমে ৬৭টি ট্যাপের সরবরাহ করা হত। কিন্তু রাস্তা তৈরি করতে গিয়ে এখন মাত্র ২৫টি ট্যাপ চালু রয়েছে। এই অবস্থায় এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।
এলাকায় গিয়ে দেখা গেল প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে দমকল পুলিশ ক্যাম্পের কাছে মহিলারা জল সংগ্রহ করে আনছেন।তাঁদের দাবি, নির্বাচনের সময় সব দলের নেতারা এখানে এসে গভীর নলকুপ বসিয়ে পানীয় জলের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু ভোটের পর কারও দেখা মেলেনি। মেটেনি জলসমস্যাও। খাবার জলটুকু ছাড়া সব কাজই পুকুরের জলে করতে হয়। গরমের আগে থেরেই নলকূপ অকেজো। এখন গরম পড়লে পুকুর শুকিয়ে গেলে তখন কোথায় জল পাওয়া যাবে?
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এগারোটি পঞ্চায়েত এলাকায় ইতিমধ্যে প্রায় চারশোটি নলকূপ সারানো বা নতুন করে বসানোর আবেদন এসেছে। যার মধ্যে অনেক স্কুলের নলকূপও রয়েছে। মথুরাপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের পীযূষ বৈরাগী বলেন, “গরম এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট নিয়ে বহুবার প্রশাসনকে জানিয়েছি।” বিডিও মোনালিসা তিরকে বলেন, “নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর এখন তো আর নলকূপ বসানো যাবে না। তবে সে সব বুথে ভোট হবে সেখানকার নলকূপগুলির অবস্থা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy