Advertisement
১৯ মে ২০২৪

টাকা বিলোনোর কথা তুলে হেনস্থা চন্দনকে

নিজস্ব সংবাদদাতাদিনদুপুরে স্টেশন চত্বরে টাকা বিলোনোর অভিযোগ তুলে চুঁচুড়ার বিজেপি প্রার্থী চন্দন মিত্রের উপরে চড়াও হল তৃণমূল। বেগতিক বুঝে চন্দনবাবু গাড়িতে উঠে পড়লে সেটি ঘেরাও করা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। মঙ্গলবার, হুগলিতে ভোটের ঠিক আগের দিন চুঁচুড়া স্টেশন চত্বরে এই ঘটনায় বিজেপি প্রত্যাশিত ভাবেই ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে।

চুঁচুড়া স্টেশন চত্বরে বিজেপি প্রার্থী চন্দন মিত্র। ছবি: তাপস ঘোষ।

চুঁচুড়া স্টেশন চত্বরে বিজেপি প্রার্থী চন্দন মিত্র। ছবি: তাপস ঘোষ।

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৪ ০২:০৬
Share: Save:

দিনদুপুরে স্টেশন চত্বরে টাকা বিলোনোর অভিযোগ তুলে চুঁচুড়ার বিজেপি প্রার্থী চন্দন মিত্রের উপরে চড়াও হল তৃণমূল। বেগতিক বুঝে চন্দনবাবু গাড়িতে উঠে পড়লে সেটি ঘেরাও করা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে।

মঙ্গলবার, হুগলিতে ভোটের ঠিক আগের দিন চুঁচুড়া স্টেশন চত্বরে এই ঘটনায় বিজেপি প্রত্যাশিত ভাবেই ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে। দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “একের পর এক ভিত্তিহীন অভিযোগে আমাদের কর্মীদের হেনস্থা তো করা হচ্ছেই, এমনকী প্রার্থীরাও ছাড় পাচ্ছেন না। আমরা নির্বাচন কমিশনকে সব জানাচ্ছি।” চন্দনবাবুর প্রতিক্রিয়া, “আমি কি পাগল যে ওই জায়গায় দাঁড়িয়ে সকলের চোখের সামনে টাকা বিলোব? ভয় পাচ্ছে বলেই ওরা এই সব ষড়যন্ত্র করছে। আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হচ্ছে।”

ঘটনার সূত্রপাত সকাল ৯টা নাগাদ। বিজেপি-র সাংবাদিক প্রার্থী চন্দন মিত্র কলকাতা যাবেন বলে চুঁচুড়া স্টেশনে ট্রেন ধরতে গিয়েছিলেন। তাঁর কথায়, “স্টেশনে কিছু সমর্থকের সঙ্গে দেখা হওয়ায় দাঁড়িয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলছিলাম। কোনও প্রচার করিনি। হঠাৎই তৃণমূলের কিছু সমর্থক এসে আমাকে ঘিরে ধরে চিৎকার-চেঁচামেচি করতে থাকে। তাদের অভিযোগ, আমি নাকি অন্যায় ভাবে প্রচার করছি। পরে বলা হয়, টাকা আর হ্যান্ডবিল ছড়াচ্ছি।” রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, হুগলি জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে।

কিছু ক্ষণের মধ্যে দলে-দলে তৃণমূূল কর্মী-সমর্থক এসে বিজেপি প্রার্থীকে ঘিরে ফেলেন। তাঁদের অভিযোগ, লিফলেটের মধ্যে ৫০০ টাকার নোট গুঁজে চন্দনবাবু প্রচার চালাচ্ছেন। বিজেপি কর্মীরা সংখ্যায় বেশি ছিলেন না। কয়েকশো তৃণমূল সমর্থককে জড়ো হয়ে যেতে দেখে তাঁরা চন্দনবাবুকে তাঁর গাড়িতে তুলে দেন। কিন্তু তিনি যাতে এলাকা ছেড়ে যেতে না পারেন, তার জন্য বিক্ষোভকারীরা গাড়ি ঘেরাও করেন। খবর পেয়ে নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিরা এসে পৌঁছন। ঘটনা ক্যামেরাবন্দিও করেন।

খানিক পরে চুঁচুড়া থানা থেকে বিরাট পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছয়। সঙ্গে আধা সেনা। বিক্ষোভকারীরা দাবি করতে থাকেন, চন্দনবাবুকে গ্রেফতার না করা পর্যন্ত ঘেরাও তোলা হবে না। নির্বাচন কমিশনের এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সুন্দর আলি শেখ এসে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্যে প্রার্থীকে উদ্ধার করে জেলাশাসকের দফতরে নিয়ে যান। ইতিমধ্যে তৃণমূূলের তরফে চুঁচুড়া থানায় নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ করা হয়।

চুঁচুড়া স্টেশন চত্বরের একটি চায়ের দোকানের কর্মী প্রেম রাজবংশীর দাবি, “দোকানের সামনে চন্দনবাবু এসেছিলেন। কিছু সমর্থকও আসেন। এক জন হ্যান্ডবিল দেন। বিলের ভাঁজে ৫০০ টাকার নোট ছিল। আমাকে বলা হয় হাতখরচার জন্য দেওয়া হয়েছে। কাল যেন বাড়ির সকলকে নিয়ে বিজেপিকে ভোট দিই।” পরে তৃণমূলের লোকজন তাঁকে থানায় নিয়ে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করান। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্তের দাবি, “বিধি লঙ্ঘন করে প্রচার চালানোয় চন্দনবাবুর বিরুদ্ধে আমরা থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।”

মহকুমাশাসক (সদর) সুদীপ সরকার বলেন, “প্রচারের সময় শেষ হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও বিধি লঙ্ঘন করে হ্যান্ডবিল ছড়ানোর অভিযোগ এসেছে বিজেপি সমর্থকদের বিরুদ্ধে। কমিশন যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে।” পরে জেলাশাসকের অফিস থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্যে চন্দনবাবুকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE