আর ক’দিন পরেই ভোট। অথচ, এখনও ভোটার-তালিকাই হাতে পাননি ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্র থেকে দাঁড়ানো ছোট দলগুলির প্রার্থীরা। নির্বাচন কমিশনের কড়া নিয়মের ফাঁসেই তাঁরা ভোটার-তালিকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন।
ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে মোট ভোটার প্রায় সাড়ে ১৫ লক্ষ। প্রার্থী হয়েছেন মোট ১৬ জন। তাঁদের মধ্যে নির্দল রয়েছেন ছ’জন। নির্বাচন কমিশনে নথিভুক্ত কিন্তু অস্বীকৃত প্রার্থী রয়েছেন পাঁচ জন। বাকিরা স্বীকৃত দলের। বড় রাজনৈতিক দলগুলি জানিয়েছে, ভোটার-তালিকা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ভোটের দিন ওই তালিকা দলের বুথের এজেন্টদের দেওয়া হয়। এজেন্টরা বুথে বসে সেই তালিকা অনুযায়ী কারা ভোট দিতে আসছেন, সেটা মিলিয়ে দেখেন। ভুয়ো ভোটারদেরও সহজে চিহ্নিত করা যায়।
অথচ, ওই গুরুত্বপূর্ণ তালিকা ছোট দলের এবং নির্দল প্রার্থীরাই এখনও হাতে পাননি। তাঁদের বক্তব্য, সব দলের প্রার্থীদেরই ২৫ হাজার টাকা করে কমিশনে জমানত দিয়ে ভোটে লড়তে হয়। সেই নিয়ম মেনে তাঁরা ভোটে লড়ছেন। কিন্তু বড় দলের প্রার্থীরা যেখানে কমিশন থেকে নিখরচায় ভোটার-তালিকা এবং তার সিডি পান, সেখানে তাঁরা পাননি।
এ ব্যাপারে রাজ্যের যুগ্ম নির্বাচনী অফিসার শৈবাল বর্মন জানিয়েছেন, স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলিকে একটি করে ভোটার-তালিকার কপি নিখরচায় দেওয়া হয়। তা ছাড়া, ছোট-বড় সব দলের প্রার্থীদেরও তা দেওয়া হয়। ডায়মন্ড হারবারের রিটার্নিং অফিসার সোমনাথ দে অবশ্য বলেন, “কমিশন যে রকম নির্দেশ দেবে, আমরা তাই মেনে চলব। অস্বীকৃত দলগুলির প্রার্থীদের নিখরচায় ওই তালিকা দেওয়ার নিয়ম নেই। তবে তালিকার সিডি চাইলে ছোট দলগুলি ১০০ টাকা দিয়ে কিনতে পারেন।”
কমিশনের এই নিয়মে হতাশ ডায়মন্ড হারবারের ছোট দলগুলির প্রার্থীরা। যেমন, এই কেন্দ্রের পিডিএস প্রার্থী সমীর পুততুণ্ড বলেন, “আমাদের দলের তরফে কিছু দিন আগেই রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে একটি বৈঠকে বিষয়টি তোলা হয়েছিল। আমরা ভোটার-তালিকার প্রিন্ট-আউট নিখরচায় দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু তা দেওয়া হয়নি।” রাষ্ট্রীয় জনসচেতন পার্টির প্রার্থী হাবিবুর রহমান মোল্লা বলেন, “কমিশনের অফিসারদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, ওই তালিকার প্রিন্ট আউট আমরা কেন নিখরচায় পাব না? ওই প্রিন্ট-আউট কমিশন থেকে কেনা ব্যয়বহুল। কমিশনের কর্তারা কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি।” নির্দল প্রার্থী শৈলেন সাধুখাঁ জানান, তাঁদের অর্থবল তেমন নেই। সব বুথে এজেন্টও দিতে পারবেন না। তাই তিনি প্রিন্ট-আউট পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছেন।
ভোটার-তালিকার জন্য খরচ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে কয়েকটি ছোট দল। তাদের বক্তব্য, একেই নির্বাচনে খরচ সংক্রান্ত বিষয়ে কড়া নজরদারি রয়েছে। প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্র ধরে ভোটার-তালিকার ফোটোকপি করাতে বা প্রিন্ট-আউট নিতে কম করে পাঁচ-সাত হাজার টাকা খরচ। ছবি-সহ তালিকার পুরোটা হাতে পেতে গেলে ৪০-৫০ হাজার টাকা খরচ হবে। তাই সেই চেষ্টা ছেড়ে কয়েকটি ছোট দল ঠিক করেছে, যে সব বুথে তারা এজেন্ট দিতে পারবে, সেই সব বুথের ভোটারদের তালিকাই কমিশনের থেকে কেনা সিডি থেকে বের করে পরিস্থিতি সামাল দেবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy