Advertisement
২১ মে ২০২৪

নির্মীয়মাণ শিল্পতালুকের জন্য রাস্তা তৈরি করে দিচ্ছে প্রশাসন

রাজ্যের মনোভাব যে শিল্পমুখী, তা বোঝাতে হাওড়ার জগৎবল্লভপুরে একটি নির্মীয়মাণ শিল্পতালুকে রাস্তা তৈরিতে হাত দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়া থেকেই সেই কাজ শুরু হয়েছে। এর জন্য পর্যায়ক্রমে প্রায় ২০ কোটি টাকা খরচ হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।

নুরুল আবসার
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৪ ০০:৫৬
Share: Save:

রাজ্যের মনোভাব যে শিল্পমুখী, তা বোঝাতে হাওড়ার জগৎবল্লভপুরে একটি নির্মীয়মাণ শিল্পতালুকে রাস্তা তৈরিতে হাত দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ফেব্রুয়ারি মাসের গোড়া থেকেই সেই কাজ শুরু হয়েছে। এর জন্য পর্যায়ক্রমে প্রায় ২০ কোটি টাকা খরচ হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।

জগৎবল্লভপুরের গুমাডাঙিতে প্রায় ১ হাজার একর জমিতে শিল্পতালুকটি গড়ার পরিকল্পনা করেছে হাওড়া চেম্বার অফ কমার্স। হাওড়া শহর থেকে ঢালাই কারখানা, ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানা-সহ বিভিন্ন কারখানাকে এখানে সরিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু শিল্পতালুকের ভিতরে রাস্তার অভাব আছে। প্রায় ৪ কোটি টাকা খরচ করে কিছু রাস্তা ওই বণিকসভা নিজেদের উদ্যোগে তৈরি করলেও বেশিরভাগ অংশই রাস্তার অভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। নিরুপায় হয়ে বণিকসভার কর্তারা সহায়তা চেয়ে রাজ্য সরকারের শরণাপন্ন হন। এখানে শিল্পের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখে সরকার রাস্তা তৈরিতে উদ্যোগী হতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়।

জেলাশাসক শুভাঞ্জন দাস বলেন, “চেম্বারকে জানিয়েছিলাম আমরা মাটি ফেলে রাস্তা তৈরি করে দিতে পারি। কারণ, একশো দিনের প্রকল্পে এই ভাবে কাজ করার সুবিধা আমাদের আছে। চেম্বার রাজি হয়।” চেম্বারের সভাপতি শঙ্কর সান্যাল বলেন, “মাটি ফেলে রাস্তা তৈরি করে দেওয়া হলে তার উপরে পিচ বা কংক্রিট দেওয়ার জন্য আমরা কেন্দ্র সরকারের কাছে আবেদন করব। কেন্দ্র থেকে সহায়তা না-পাওয়া গেলে আমরা নিজেদের খরচেই রাস্তা পিচের করে নেব।”

জেলায় ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পটি চলছে ২০০৬ সাল থেকে। কিন্তু কোনও একটি ব্লকে এক লপ্তে এত টাকার কাজ এই প্রথম। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, বর্তমান সরকার শিল্পমুখী। হাওড়া চেম্বার অব কমার্স-এর সঙ্গে এখানে পিপিপি মডেলে একটি আইটিআই-ও করা হচ্ছে। জমি দিয়েছে চেম্বার। ভবন তৈরি করে দেবে জেলা প্রশাসন।

২০০৮ সালের গোড়া থেকে শিল্পতালুকের জন্য গুমাডাঙিতে জমি সংগ্রহ শুরু করে ওই বণিকসভা। ইতিমধ্যে প্রায় সাতশো একর জমি সংগ্রহ হয়েছে। কারখানাগুলি করার কথা ক্লাস্টারের ভিত্তিতে। অর্থাৎ যে এলাকায় ঢালাই কারখানা হবে সেখানে অন্য কারখানা থাকবে না। আবার যে অঞ্চলে ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানাগুলি থাকবে সেখানে অন্য কারখানা থাকবে না। ক্লাস্টার গড়তে কেন্দ্র ও রাজ্যের কাছ থেকে আর্থিক ও অন্যান্য প্রযুক্তিগত সহায়তাও পাওয়া যায়। ইতিমধ্যেই একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানার ক্লাস্টার গড়ার প্রক্রিয়া এখানে চালু হয়ে গিয়েছে।

প্রশাসন জানায়, শিল্পতালুকে রাস্তা তৈরির কাজটি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতিকে। প্রথম পর্যায়ে চার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। কিছু কাজ শুরুও হয়েছে। আরও তিনটি পর্যায়ের জন্য ১২ কোটি টাকার প্রকল্প জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠিয়েছে সমিতি। জেলাশাসক বলেন, “নির্বাচনের দিন ঘোষণার আগেই পঞ্চায়েত সমিতিকে বলি ১২ কোটি টাকার প্রকল্প পাঠাতে। তারা তা করেছে।” সাধারণত ১০০ দিনের প্রকল্প রূপায়ণ করে গ্রাম পঞ্চায়েত। তা হলে কেন এই দায়িত্ব পঞ্চায়েত সমিতিকে দেওয়া হয়েছে? জেলাশাসক বলেন, “প্রকল্পটির পরিধির কথা ভেবে এর রূপায়ণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েত সমিতিকে। তবে এই প্রকল্পে একাধিক পঞ্চায়েতকে সঙ্গে নেওয়া হবে। এই এলাকায় যাঁদের জবকার্ড আছে, তাঁদের কাজ দিতে হবে।” পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মহম্মদ ইব্রাহিম (গোরা) জানান, অন্তত তিনটি পঞ্চায়েত এলাকার জবকার্ডধারীরা এই প্রকল্পে কাজ পাবেন। প্রথম পর্যায়ে যে চার কোটি টাকার কাজ শুরু হয়েছে তাতেও একাধিক পঞ্চায়েত থেকে জবকার্ডধারীদের সামিল করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

nurul absar industrial hub jagatballavpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE