Advertisement
১৮ মে ২০২৪

মারধরে দুই সিপিএম কর্মীকে গ্রেফতার, তৃণমূল কর্মীকে ছাড়

এক যাত্রায় পৃথক ফল! দুই তৃণমূল কর্মীকে মারধরের অভিযোগে রবিবার রাতে আরামবাগের দুই সিপিএম কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। অথচ, ওই দুই তৃণমূল কর্মীর মধ্যে এক জন লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের দিনে আরামবাগ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সিপিএম কর্মীদের মারধরে অভিযুক্ত হলেও তাঁকে গ্রেফতার করা হল না। তিনি পুলিশের খাতায় এখনও ‘পলাতক’।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৪ ০১:২৬
Share: Save:

এক যাত্রায় পৃথক ফল!

দুই তৃণমূল কর্মীকে মারধরের অভিযোগে রবিবার রাতে আরামবাগের দুই সিপিএম কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। অথচ, ওই দুই তৃণমূল কর্মীর মধ্যে এক জন লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের দিনে আরামবাগ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সিপিএম কর্মীদের মারধরে অভিযুক্ত হলেও তাঁকে গ্রেফতার করা হল না। তিনি পুলিশের খাতায় এখনও ‘পলাতক’। ওই তৃণমূল কর্মী যে দুষ্কর্ম করে বেড়াচ্ছেন, তা মানছেন দলেরই একাংশ।

সিপিএমের আরামবাগ জোনাল কমিটির নেতা মোজাম্মেল হোসেনের অভিযোগ, পুলিশ পক্ষপাতিত্ব করেছে। শাসক দলের কর্মী অভিযুক্ত হলেও তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে বা তাঁর বিরুদ্ধে লঘু মামলা দায়ের করা হচ্ছে। অন্য দিকে, মিথ্যা মামলায় সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের ফাঁসানো হচ্ছে। তৃণমূল সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ মানতে চায়নি।

ধৃত নেপাল মালিক এবং লালুপ্রসাদ ধারা ঘিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তাঁদের বিরুদ্ধে যে দুই তৃণমূল কর্মীকে মারধরের অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তাঁরা হলেন কৃষ্ণেন্দু সাহা এবং রবীন মোদক। রবিবার তাঁদের আরামবাগ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

সিপিএমের অভিযোগ, কৃষ্ণেন্দুর বিরুদ্ধে নির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন আরামবাগ বাসস্ট্যান্ড চত্বরে হোটেল এবং লটারি কেন্দ্রে ভাঙচুর-লুটপাট এবং সিপিএম কর্মীদের মারধরের অভিযোগ দায়ের হয়েছিল থানায়। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। ভোটে বুথ এজেন্ট হওয়ার ‘অপরাধে’ রবিবার ঘিয়া গ্রামের সিপিএম কর্মী রঞ্জন মালিকের বাড়িত চড়াও হয়ে তাঁকে গুলি করে খুনের চেষ্টা করেন কৃষ্ণেন্দু এবং রবীন। গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। সেই সময়ে পড়শিরা ছুটে এলে কৃষ্ণেন্দু এবং রবীন পালায়। তাঁদের আদৌ মারধর করা হয়নি বলে দাবি করেছেন সিপিএম নেতারা। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়।

ওই রাতেই থানায় গিয়ে নেপাল মালিক এবং লালুপ্রসাদ ধারার বিরুদ্ধে মারধরের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রবীন। সঙ্গে ছিলেন কৃষ্ণেন্দু। কিন্তু মারধরের অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধেও থাকলেও কেন কৃষ্ণেন্দুকে গ্রেফতার করা হল না? পুলিশের দাবি, পুরনো মামলার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী অফিসারই সিদ্ধান্ত নেবেন।

সিপিএমের আরামবাগ জোনাল কমিটির নেতা মোজাম্মেল হোসেন বলেন, “কৃষ্ণেন্দু তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী। সে রবিবার আমাদের কর্মীকে খুন করতে গিয়েছিল। অথচ, পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিল না।”

স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ কৃষ্ণেন্দুর পাশে দাঁড়ালেও, অন্য অংশ তাঁর পক্ষ নেননি। আরামবাগের দলীয় বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা বলেন, “আমাদের দুই কর্মী রাতে বাড়ি ফেরার পথে সিপিএমের লোকরা তাদের বাঁশ দিয়ে মারধর করেছে।” পক্ষান্তরে, সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দা তথা দলের যুবনেতা শেখ সেলিম বলেন, “কৃষ্ণেন্দুর মতো সিপিএম থেকে আসা দুষ্কৃতীদের জন্যই দলের ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে। সে ক্রমাগত অশান্তি করে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা সত্ত্বেও রাতে বন্দুক নিয়ে কৃষ্ণেন্দু বারবার হামলা করছে। দলের একাংশ তাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। তাকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছি জেলা নেতৃত্বের কাছে।” তৃণমূলের হুগলি জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত এ নিয়ে বলেন, “পুলিশকে বলেছি ঘটনার সত্য উদ্ঘাটন করে দোষীকে ধরতে। দলীয় ভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোথাও কোনএ অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

arambag arrest cpm candidates tmc-cpm clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE