একশো শতাংশ প্রতিবন্ধী গোপাল ভৌমিকের আশা, জীবনের সমস্ত পরীক্ষায় অনায়াসে উতরে যাবেন তিনি। —নিজস্ব চিত্র।
জন্ম থেকেই হাত-পা নেই। তবে রয়েছে পড়াশোনা করার অদম্য জেদ। এবং অবশ্যই মনের জোর। তাতে ভর করেই উচ্চ মাধ্যমিকের বেড়া টপকাতে চান। চলতি বছর উচ্চ মাধ্যমিকের পাশাপাশি যেন নিজেকে ছাপিয়ে যাওয়ার পরীক্ষাও দিচ্ছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের পরীক্ষার্থী গোপাল ভৌমিক। একশো শতাংশ প্রতিবন্ধী গোপালের আশা, দুই ‘পরীক্ষা’তেই অনায়াসে উতরে যাবেন।
দাসপুরের গোমকপোতা গুণধর বিদ্যালয়ের ছাত্র গোপালের কোমর থেকে দু’টি ছোট আঙুল সদৃশ্য দু’টি অঙ্গ রয়েছে। তার সাহায্যেই বইপত্রের পাতা ওল্টান তিনি। পরীক্ষার প্রস্তুতিতে কঠোর পরিশ্রমও করেছেন। জানিয়েছেন, প্রথম দিনের পরীক্ষা ভালই হয়েছে। গৌড়া সোনামুই কেবিএ উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষাকেন্দ্র তাঁর।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অবশ্য রাইটারের সাহায্য নিয়েছেন গোপাল। গোপালের বাবা সদানন্দ ভৌমিক এলাকায় একটি দোকান রয়েছে। সদানন্দের আয়েই চলে সংসার। মা গীতাদেবী সংসার সামলান। ছেলেকে নিয়ে মা-বাবা এবং তাঁর রিম্পা ভৌমিকের স্বপ্ন কম নয়। রিম্পা বলেন, ‘‘ভাই পড়াশোনায় খুব ভাল। স্কুলের শিক্ষকেরাও ওকে ভাল ভাবে প্রতিটি বিষয় বুঝিয়ে দেন। ভবিষ্যতেও ওর পড়াশোনা চালিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।’’
গোপালকে আশায় রয়েছেন তাঁর শিক্ষকেরাও। তাঁর স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুব্রত বুড়াই বলেন, ‘‘গোপাল আমার খুবই প্রিয় ছাত্র। একশো শতাংশ প্রতিবন্ধকতাকে সত্ত্বেও মনের জোরে সমস্ত বাধা পার করেছে সে। সকলেই চান, গোপালের স্বপ্নপূরণ হোক। এই মনের জোরেই উচ্চ মাধ্যমিকে খুব ভাল রেজাল্ট করবে সে। সমস্ত প্রতিবন্ধকতাকে হার মানাবে তার একাগ্রতা।’’
পরিবার এবং শিক্ষকদের স্বপ্নপূরণে চেষ্টার কসুর করছে না গোপাল নিজেও। সে বলে, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিকে লেখক নিয়ে অতিরিক্ত সময়ে পরীক্ষা দিয়েছি। ভবিষ্যতে আমি অধ্যাপক হতে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy