নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের নিয়ে চিন্তা বেশি। কারণ, তাঁদের টিকাকরণ হয়নি। ফাইল চিত্র।
প্রায় দু’বছর পরে স্কুল (নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি), কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে পারবেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, অতিমারির প্রকোপ যখন বাড়ছে, অনেকেই উপসর্গহীন কিংবা মৃদু উপসর্গে আক্রান্ত, সেখানে স্কুল বা কলেজে যাওয়া কতটা নিরাপদ? আবার কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের টিকা নেওয়া থাকলেও, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের এখনও তা হয়নি। চিকিৎসক ও সংক্রামক বিশেষজ্ঞদের একাংশের কথায়, দীর্ঘ দিন স্কুল বা কলেজ না যাওয়ার কুফল রয়েছে। যদিও সংক্রমণের বিষয়টি ভাবা প্রয়োজন। এর জন্যই বারবার পুজোর সময়ে রাস্তায় নামতে বারণ করা হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশ সে কথা শোনেননি। তাই এখন এমন সংশয় বা আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে।
সোমবার স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮০৫ জন। চিকিৎসকেরা স্পষ্ট জানাচ্ছেন, এই সংখ্যা দেখে উৎসাহিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ, রবিবার করোনা পরীক্ষা বেশ কম হয়েছে। আগামী দিনে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা কোন দিকে যাচ্ছে, তা দেখেই পরিস্থিতি বলা সম্ভব।
এ দিকে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত ঘোষণা হওয়ার পরেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি সাফসুতরো করা শুরু হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, শুধু এক দিন সেটি করলেই চলবে না। প্রতিনিয়ত স্কুল, কলেজে জীবাণুনাশক ছড়াতে হবে। শল্য চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকারের কথায়, “পড়ুয়ারা বহু দিন স্কুল, কলেজের মুখ দেখেননি। এটা তাঁদের পড়াশোনা ও মনের উপরে প্রভাব ফেলছিল। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হচ্ছে ঠিক আছে, কিন্তু সেখানে কড়া ভাবে বিধি মেনে চলতেই হবে।” তিনি জানাচ্ছেন, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের নিয়ে চিন্তা বেশি। কারণ, তাঁদের টিকাকরণ হয়নি। তাই ওই সমস্ত শ্রেণির প্রতিটি পড়ুয়ার বাবা-মায়ের টিকার দু’টি ডোজ় হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত করতে হবে। স্কুল বাস, পুলকারের চালক, থেকে শুরু করে স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী, সাধারণ কর্মী এবং শিক্ষিক-শিক্ষিকাদের টিকার দু’টি ডোজ় থাকতে হবে। প্রতি দিন স্কুলে ঢোকার সময় পড়ুয়ার শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে হবে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই জানান, স্কুল, কলেজে সকলকেই সব সময় মাস্ক পরতে হবে। তিনি বলেন, “প্রতি দিন কোভিড সচেতনতা নিয়ে ক্লাস রাখতে হবে।” অন্য সংক্রমণ বিশেষজ্ঞরাও জানান, ক্লাসে দূরত্ব-বিধি মানতে হবে। সেজন্য পড়ুয়া সংখ্যা অনুযায়ী বিকল্প দিন ভাগ করে রুটিন দিতে হবে। আবার টিফিন বা খেলার পিরিয়ড রাখা চলবে না। চিকিৎসকদের কথায়, “ওই সময়ে মেলামেশার সম্ভাবনা বেশি। তাতে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা কয়েক গুণ বাড়বে।” চিকিৎসকেরা জানান, অভিভাবকদেরও সতর্ক থাকতে হবে। কোনও পড়ুয়ার ন্যূনতম উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষা করাতে হবে। কোভিড পজ়িটিভ হলে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। সে ক্ষেত্রে সেই পড়ুয়ার সংস্পর্শে কারা এসেছিলেন, তা চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy