Advertisement
০৩ মে ২০২৪
State news

কলকাতা থেকে দার্জিলিং, স্কুল পড়ুয়াদের হাতেও পৌঁছে যাচ্ছে এলএসডি

হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে ওই পড়ুয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত সে।

ধৃত মুব্বাসির আন্নান।গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

ধৃত মুব্বাসির আন্নান।গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৮ ১২:১০
Share: Save:

মাদকচক্রে এ বার নাম জড়াল শহরের ইংলিশ-মিডিয়াম স্কুল পড়ুয়াদেরও!

শুক্রবার এক মাদক কারবারিকে তার ভবানীপুরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের নাম মুব্বাসির আন্নান। তাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, মূলত শহরের বেশ কিছু নাম করা ইংলিশ মিডিয়ামের পড়ুয়ারাই তার গ্রাহক। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে ওই পড়ুয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত সে।

ভবানীপুরের বাসিন্দা মুব্বাসির বহুতলে জানলা-দরজার কাচ লাগানোর কাজ করে। সে নিজেও শহরের একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র। আর এই সূত্রটাকেই রাজে লাগিয়েছিল সে। একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করে বিভিন্ন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ করা শুরু করে। গ্রাহকও জুটে যায়। সেই সংখ্যাটাও দিনে দিনে বাড়তে থাকে।

আরও পড়ুন: ডার্ক ওয়েবে মাদক কারবার, নামী কলেজের ৩ ছাত্র গ্রেফতার

তাকে জেরা করে পুলিশ জানতে আরও পেরেছে, শুধু কলকাতাই নয়, দার্জিলিঙেও মাদক কারবারের জাল বিস্তার করেছিল মুব্বাসির। সেখানেও বেশ কয়েকটি নামী ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের পড়ুয়াদের মাদক সরবরাহ করত সে। তবে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল পড়ুয়ারা শুধুই কি তার গ্রাহক, নাকি তারাও মাদকের কারবারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

মুব্বাসিরের বাড়ি থেকে বাজেয়াপ্ত মাদকদ্রব্য

কী ভাবে চলত এই চক্র?

পুলিশ জানিয়েছে, মুব্বাসিরের এক স্কুলের বন্ধুও এই চক্রে জড়িত। ওই বন্ধু বর্তমানে বেঙ্গালুরুতে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়াশোনা করছে। ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে এলএসডি, বিভিন্ন মাদক ট্যাবলেট এবং কেমিক্যাল ড্রাগ কেনে ওই পড়ুয়া।মুব্বাসির মাঝে মধ্যে বেঙ্গালুরু যেত। তার কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা দিয়ে মাদক কিনে ফের কলকাতায় ফিরে আসত। তার পর মোটা টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের পড়ুয়াদের সরবরাহ করত ওই মাদকদ্রব্য।

আরও পড়ুন: ভারতীকে ফেরার দেখিয়ে সিআইডির চার্জশিট, নাম দেহরক্ষী সুজিতেরও

শুক্রবার মুব্বাসিরের বাড়ি থেকে প্রচুর পরিমাণে এলএসডি ব্লট পেপার এবং ৭ গ্রাম এমডিএমএ উদ্ধার হয়েছে। মুব্বাসিরের বেঙ্গালুরুর ওই বন্ধুর খোঁজও চালাচ্ছে পুলিশ।

কয়েক মাস আগেই নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো অফিসাররা অভিযান চালিয়ে বিধাননগর এবং কলকাতার স্কুল-কলেজের বেশ কয়েক জন পড়ুয়াকে গ্রেফতার করেন। তখনই সামনে আসে পড়ুয়াদের মধ্যে অবাধে চলছে মাদকের লেনদেন। প্রধাণত ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যানেজমেন্ট কলেজগুলোতেই এই ধরনের অবৈধ কারবার জাঁকিয়ে বসেছে।ইন্টারনেটে ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে মাদকের কারবার চালাচ্ছিল ওই সমস্ত কলেজ পড়ুয়ারাও। চক্রের সঙ্গে যুক্ত একাধিক কলেজ পড়ুয়াকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। এ বার এই চক্রে স্কুল পড়ুয়াদের জড়িয়ে যাওয়ার ঘটনা সামনে আসায় বিষয়টি আরও উদ্বেগজনক বলে মনে করছে পুলিশ।

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE